প্রয়াত হলেন ইতালীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি জিনা লোলোব্রিগিদা। কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকের ছায়া পড়েছে চলচ্চিত্র জগতে। মৃত্যুকালে অভিনেত্রীর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
একের পর এক মৃত্যুসংবাদ। সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না। প্রয়াত হলেন ইতালীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি জিনা লোলোব্রিগিদা। কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকের ছায়া পড়েছে চলচ্চিত্র জগতে। মৃত্যুকালে অভিনেত্রীর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। চলচ্চিত্র কিংবদন্তি জিনা লোলোব্রিগিদা ১৯৫০ সালে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ১৯৫০ এর দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালির পুনর্জন্মের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছিলেন ।
চলচ্চিত্র কিংবদন্তি জিনা লোলোব্রিগিদা এজেন্ট পাওলা কমিন তার সম্পর্কে কোনও বিস্তারিত তথ্য দেননি। তবে সূত্র থেকে জানা গেছে গত সেপ্টেম্বর মাসে ভেঙে যাওয়া উরুর হাড়ের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন জিনা লোলোব্রিগিদা । অপারেশনের পর বাড়ি ফিরে তিনি এও জানিয়েছিলেন যে তিনি দ্রুত হাঁটতে পারছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের ঠিক পরেই ইতালিতে সিনেমা তৈরি করা শুরু করেছিলেন কারণ দেশটি বড়পর্দায় ভূমধ্যসাগরীয় নারী সৌন্দর্যের একটি স্টিরিওটাইপিক্যাল ধ্যান ধারণাকে প্রচার করতে শুরু করেছিলেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা থেকেই ইতালীয়রা তাকে ভালবেসে লোলো বলেই ডাকত।
১৯৫৫ সালে দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট বিউটিফুল ওমেন ছাড়াও আরও একাধিক ছবিতে নিজের ছাপ রেখেছিলেন। যেমন তার মধ্যে রয়েছে রক হাডসনের সঙ্গে গোল্ডেন গ্লোব বিজয়ী কাম সেপ্টেম্বর, ট্র্যাপিজ, হামফ্রে বোগার্ট এবং ১৯৫৩ সালে জেনিফার জোন্স অভিনীত জন হুস্টনের চলচ্চিত্র বিট দ্য ডেভিল। এছাড়াও রয়েছে বুওনা সেরা মিসেস ক্যাম্পবেল-যেটির জন্য জিনা লোলোব্রিগিদা শীর্ষ চলচ্চিত্র পুরস্কারও জিতেছে। এখানেই শেষ নয়, লোলোব্রিগিদা মারিও মনিসেলি, লুইগি কমেনসিনি, পিয়েত্রো জার্মি এবং ভিত্তোরিও ডি সিকা সহ যুদ্ধের পর দেশের শীর্ষস্থানীয় কিছু পরিচালকের সঙ্গেও কাজ করেছিলেন। তার আরও দুটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের মধ্যে ছিল ১৯৫৩ সালে কোমেনসিনির প্যান আমোর ই ফ্যান্টাসিয়া (ব্রেড, লাভ অ্যান্ড ড্রিমস), এবং এক বছর পরে এর সিক্যুয়েল, প্যান আমোর ই গেলোসিয়া (রুটি, প্রেম এবং ঈর্ষা)। উল্লেখ্য, রোমের একটি দরিদ্র পাহাড়ি এলাকায় একটি শ্রমজীবী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জিনা লোলোব্রিগিদা। অভিনেত্রী হওয়ার আগে ভাস্কর্য নিয়ে পড়াশোনা করতেন । ১৯৪৭ সালে মিস ইতালীয় সুন্দরী প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অর্জন করার পর চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। চলচ্চিত্র নির্মাণ বন্ধ করে দেওয়ার পর লোলোব্রিগিদা একজন ফটোগ্রাফার এবং ভাস্কর্য নিয়ে নিজের নতুন কেরিয়ার গড়ে তোলেন এবং জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) এবং এর খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর শুভেচ্ছা দূতও ছিলেন তিনি। ১৯৭২-১৯৯৪ সালের মধ্যে তিনি ইতালিয়া মিয়া (মাই ইতালি),দ্য ফিলিপাইনস এবং দ্য ওয়ান্ডার অফ ইনোসেন্স, শিশুদের এবং শিশুদের জন্য ছবি সহ তার ছবির ছয়টি বই প্রকাশ করেছিলেন।