ভগবান হনুমানের জন্ম নিয়ে প্রচলিত আছে নানান কাহিনি, হনুমান জয়ন্তীর প্রাক্কালে রইল সেই কাহিনি

চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে জন্ম হয়েছিল ভগবান হনুমানের। দিনটি ছিল মঙ্গলবার। ধর্মানুসারে, পূর্ণিমা তিথিতে জন্ম গ্রহণ করেন ভগবান হনুমান। সে কারণে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় হনুমান জয়ন্তী। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে এবছর ১৬ এপ্রিল শনিবার পালিত হবে হনুমান জয়ন্তী। এমনিতেই ভগবান হনুমানের পুজো হয় মঙ্গল ও শনিবার। এর এবছর শনিবারই পড়েছে হনুমান জয়ন্তী। হনুমান জয়ন্তীর প্রাক্কালে জেনে নিন ভগবান হনুমানের জন্ম নিয়ে এক অজানা কাহিনি। বজরঙ্গবলীর জন্ম নিয়ে রয়েছে একাধিক কাহিনি। রইস সেই সকল কাহিনি।  

Sayanita Chakraborty | Published : Apr 12, 2022 11:16 AM IST

110
ভগবান হনুমানের জন্ম নিয়ে প্রচলিত আছে নানান কাহিনি, হনুমান জয়ন্তীর প্রাক্কালে রইল সেই কাহিনি

ব্রক্ষ্মাণ্ড পুরান অনুসারে কেশরী নামে একজন অসুর ছিলেন। তার কন্যার নাম ছিল অঞ্জনা। সুন্দরী অঞ্জনা বানর রাজাকে বিবাহ করেছিলেন। সেই বানর প্রধানের নামও ছিল কেশরী। কিন্তু, বিবাহে পর নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়। বহুদিন ধরে রাজা কেশরী ও দেবী অঞ্জনার  সন্তান হচ্ছিল না। এই কারণে এরা মনঃকষ্টে ভুগছিলেন তাঁরা দুজন। 

210

তাঁদের কষ্ট দেখে ধর্মরাজের দয়া হল। এমনই একদিন অরণ্যে ভ্রম করছিলেন দেবী কেশরী। তিনি একাই ভ্রমণ করছিলেন সেদিন। তখন ধর্মরাজ এক নারী রূপে এসে অঞ্জনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। কথায় কথায় জানতে চান অঞ্জনার দুঃখের কথা। তারপর তাঁকে সন্তান লাভের পরামর্শ দেন। 

310

ধর্মরাজ এক নারী রূপে এসে অঞ্জনাকে ভালো পরামর্শই দেন। তিনি তাঁকে পবনদেবের আরাধনা করতে বলেন। সেই নারীর কথা শুনে অঞ্জনা আরাধনা শুরু করেন। কথিত আছে, বহু বছছর তপস্যা করে পবনদেবকের কৃপা পান দেবী। পবন দেবের কৃপায় অঞ্জনার গর্ভ জন্ম নিলেন হনুমান। সেই কারণেই ভগবান হনুমান পবন পুত্র নামেও পরিচিত। 

410

ব্রক্ষ্মাণ্ড পুরান এমন কাহিনি বর্ণিত থাকলেও শিবপুরাণের রয়েছে এক অন্য কাহিনি। শিব পুরাণেও ভগবান হনুমানের জন্ম কাহিনি আছে। সেই পুরান অনুসারে, ভগবান হনুমান শিবের অবতার। তিনি দেবী অঞ্জনার গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন। আর সারা জীবন রামের সেবা করার ব্রত রেখেছিলেন। শিব পুরাণ অনুসারে, ভগবান বিষ্ণু জন্ম নিয়েছিল রাম রূপে। 

510

শিবপুরাণের রয়েছে, সমুদ্রমন্থনের পর ভগবান বিষ্ণু নারী রূপ ধারণ করেন। সমুদ্রমন্থনে অমৃত উদঘাটন হয়। সেই অমৃত দেবতা আর অসুরদের মধ্যে অমৃত ভাগ করে দেওয়ার জন্য এক সুন্দরী রমণী হিসেবে আসেন। রমণীর নাম ছিল মোহিনী। এক সময় শিব জানতে পারেন মোহিনী কোনও নারী নন, ভগবান বিষ্ণু সেই নারীর রূপ ধরেছিলেন। 

610

শিবপুরাণ অনুসারে, শিব সেই মোহিনীর রূপ দেখে মুগ্ধ হন। এরপর নাকি ভগবান শিবের রেতঃপাত হয়েছিল। অঞ্জনা যখন পুত্র কামনায় তপস্যা করছিলেন, তখন তাঁর কান দিয়ে প্রবেশ করে সেই রেতঃ। এতেই তিনি গর্ভবতী হন। জন্ম হয় মহাবীর হনুমানের। তাই ভগবান হনুমানকে শিবকে অবতার বলা হয়ে থাকে।   

710

এছাড়াও রয়েছে আরও একটি কাহিনি। কথিত আছে রাজা দশরথ পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করে অগ্নি দেবতার কাছ থেকে পেয়েছিলেন পুত্রদায়ী পায়েস। এই পায়েস রানি কৈকেয়া যখন খেতে যাচ্ছিলেন তখন একটি শকুন এসে পায়েস ছিনিয়ে আকাশে উড়ে গেলেন। অন্যদিকে অজ্ঞনা পুত্র কামনায় শিবের তপস্যা করছিলেন। 

810

দেবী অঞ্জনার তপস্যা ভগবান শিব তুষ্ট হন। তিনি দেবী অঞ্জনাকে দর্শন দিয়ে বলেন, একাদশ রুদ্রের একটি রুদ্র হয়ে জন্ম নেবেন তিনি। এরপর ভগবান শিবকে পুত্র হিসেবে পেতে অঞ্জনা পবন দেবেন তপস্যা করেন। তপস্যায় তুষ্ট হন পবন দেবন। এমন সেই সেই শকুন পায়েস নিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। সেই পায়েসের বাটি ফসকে গিয়ে অঞ্জনার কাছে এসে পৌঁছায়। সেই পায়েস গ্রহণ করেন দেবী অঞ্জনা। তখনই তিনি গর্ভবতী হন। 

910

পুরান অনুসারে, হনুমানের জন্ম হয়েছিল দেবী অঞ্জনার গর্ভে। ভগবান হনুমানের মা দেবী অঞ্জনাছিলেন পুঞ্জিকাস্থল নামে একজন অভিশপ্ত স্বর্গীয় পরী। তিনি নিজের আচরণের জন্য একজন ঋষি দ্বারা অভিশপ্ত হন। সেই ঋষি তাঁকে বানর রাজকুমারী হওয়া অভিশাপ দিয়েছিলেন। অভিশাপ অনুসারে তার জন্ম হয় বানর কুলে। সেখানে তাঁর বিবাহ হয় কেশরী নামে একজন বানর প্রধানের সঙ্গে। অঞ্জনা ও কেশরীর পুত্র হিসেবে জন্ম দেন হনুমানজী।

1010

ভগবান হনুমান হলেন মহাদেবের অংশ। জানা যায়, ভগবান বিষ্ণু রামের অবতারে জন্ম নেবেন বলে স্থির করেন। তখন ভগবান শিব হনুমানজীর রূপে জন্ম নেন। নিজের পুরো যাত্রা ব্যাপি রামের সেবা করে গিয়েছেন হনুমানজী। ভগবান বিষ্ণু এতে অপরের অস্তিত্বকে সম্পূর্ণ করতে একজন রাম ও অন্যজন ভগবান হনুমান রূপে জন্ম নেন।      

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos