করোনা সংক্রমণের মোকাবিলা করতে ২১ দিনের লকডাউন চলছে ভারতে। এই অবস্থায় প্রত্যেকেরই সরকারে নির্দেশিকা মেনে সামাজিত দূরত্ব বজায় রেখে চলা উচিত। তাহলেই দেশ দ্রুত করোনা যুদ্ধ জয়ের পথে এগিয়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন নারায়ণা হেলথের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান তথা দেশের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি। লকডাউন দেশে মৃত্যুহারকে ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনবে বলেও আশাবাদী তিনি। বিশ্বজুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করা মারণ করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় দেশবাসীকে বেশকিছু টিপস দিয়েছেন এই বিখ্যাত চিকিৎসক। একজনকে দেখে নেওয়া যাক তাঁর পরামর্শগুলি।
এদেশে এখনও তেমন ভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়ায়নি। এপ্রিলের শেষে অথবা মে মাসের শুরুতে করোনা সংকট ভয়াবহ রূপ নেবে বলে আশঙ্কা করছেন বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি।
বর্তমানে বিশ্বে করোনা সংক্রমণে সবচেয়ে এগিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আক্রান্তের সংখ্যা দেশটিতে ৩ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে পরিসংখ্যান তুলে দেবী শেঠি দেখিয়ে দেন আমেরিকার থেকে প্রায় একমাস পিছিয়ে আছে আমাদের দেশ।
দেশে ২১ দিনের লকডাউন চলছে। সরকারের নেওয়া এই লকডাউন দেশে মৃত্যু হারকে ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারবে বলে আশাবাদী মণিপাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।
তবে কেবল সরকার নয় এক্ষেত্রে মানুষের সহযোগিতাও প্রয়োজন বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন বিখ্যাত হার্ট সার্জেন। এক্ষেত্রে যাবতীয় পরীক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ-সুবিধাগুলি থাকার পাশাপাশি জনগনকে স্থানীয় লকডাউন মানা ও সামাজিক দূরত্বের ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গুলি গ্রহণ করে চলতে হবে।
এদেশে করোনা পরীক্ষার অপ্রতুলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। এই বিষয়ে দেবী শেঠি মনে করিয়ে দেন, করোনা যুদ্ধ জিততে সবার আগে প্রয়োজন সামাজিত দূরত্ব বজায় রাখা। দেশে ধীরে ধীরে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ান হচ্ছে।
করোনা যুদ্ধে এবার বল আর সরকার নয়, জনগণের কোর্টে রয়েছে, সাফ বলছেন দেবী শেঠি।
ভারতীয়দের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি বলে অনেক জায়গা থেকে দাবি করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে দেবি শেঠি বলেন, ভাইরাসটি চিন, আমেরিকা, ইতালি এবং ইউরোপে কেমন আচরণ করেছিল সেটি আগে দেখতে হবে। যদি ভারতীয়দের প্রতিরোধ ক্ষমতার কাছে ভাইরাসটি হেরে যায় তাহলে সত্যিই সেটা দারুণ ব্যাপার হবে। তবে আমাদের সবকিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, এবং সাবধানতা মেনে চলতে হবে।
ভিটামিন সি করোনা প্রতিরোধ করতে পারে বলে দাবি করছেন কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। এই প্রসঙ্গে দেবি শেঠি বলেন, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি, আদা সহ যা খুশি খেতে পারেন ভারতীয়রা। তবে এর এখনও কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কারণ কোভিড ১৯ রোগটি পৃথিবীতে একেবারেই নতুন। এই বিষয়ে আরও গবেষণা দরকার। তবে নিজেকে সুস্থ রাখতে সঠিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই খেতে হবে।
করোনাভাইরাসের প্রভাব দেশের অর্থনীতির উপরও পড়ছে। এই নিয়ে দেবী শেঠির সাফ কথা, দেশের মানুষ বেঁচে থাকলে অর্থনীতি আবার সমৃদ্ধ হবে। কিন্তু সবার আগে দরকার নিজেদের নিরাপদ রাখা।
লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতি যাতে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব না ফেলে তার জন্য সকলকে প্রাণায়মেরও পরামর্শ দিয়েছেন এই বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।