দেশে করোনার এপিক সেন্টার কি এটাই, মোট আক্রান্তের ৫০ শতাংশই এই রাজ্যের
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আবারও উদ্বেগেরে কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হতে চলেছে কেরল। দক্ষিণের এই রাজ্যটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। এই অবস্থায় সপ্তাহের শেষ তিন দিন লকডাউনের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩ হাজারেরও বেশি ছিল। কিন্তু মোট আক্রান্তের ৫০ শতাংশই কেরল থেকে। এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজারেও বেশি।
দিন কয়েক ধরেই কেরল আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য নিজে টুইট করে জানিয়েছেন কেরলের সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্রীয় দলও পাঠান হবে। কোভিড সংক্রমণ রুখতে দলটি রাজ্য সরকারকে সাহায্য করবে।
কোভিড সংক্রমণ বাড়ায় কিছুটা হলেও চাপ বাড়ছে রাজ্য সরকারের ওপর। রাজ্য সরকারও ৩১ জুলুআ থেকে পয়লা অগাস্ট কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। তবে বইয়ের দোকান ও জরুরি পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশে গত পয়লা জুলাই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজারের বেশি। কিন্তু এদিন ৪৩ হাজারেরও বেশি আক্রান্তের পরিসংখ্যন। যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। তবে মে আর জুন মাসের মত ভয়াবহ পরিস্থিতি যাতে আর ফিরে না আসে তার দিকেই নজর রাখা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সূত্রে খবর কেরলেন ১২টি জেলা মধ্যে ১১টি জেলায় আক্রান্তের হার ১০ শতাংশ বেশি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব চিঠিও লিখেছে কেরল প্রশাসনকে। বলা হয়েছে অতীতে যে এলাকাগুলিতে সুপার স্প্রেডার ছিল সেই এলাকাগুলিতে নজরদারি চালাতে হবে।
করোনাবিধি মেনে চলা আর ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে। বলা হয়েছে যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেখানে যেন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। অন্যদিকে কেরল প্রশাসনও জানিয়েছে লকডাউনের সময়ই পরীক্ষার্থীদের বিশেষ সহযোগিতা করা হবে।
কেরলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণ বাড়তে বলেও মনে করছেন একদল বিশেষজ্ঞ। কারণ করোনাভাইরাসের এই স্ট্রেইনটি দ্রুত সংক্রমিত করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
আক্রান্তের তালিকায় এখনও পর্যন্ত শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। তবে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছে কেরল। ভারতে আক্রান্ত রাজ্যের ক্রমতালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে কর্নাটক, চতুর্থ স্থানে তামিলনাড়ু।
বিশ্বের করোনার ক্রমতালিকায় এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। প্রথম স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ইংল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে নতুন করে বাড়ছে সংক্রমণ।
তবে সংক্রমণ রুখতে ভারত প্রথম থেকেই টিকাকরণের ওপর জোর দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৪০ কোটিরও বেশি মানুষকে। মন কি বাত অনুষ্ঠানেও টিকা নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।