ভারতীয় ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী সৌরভ, দাদাগিরির প্রতিটি মুহূর্তের অ্যালবাম
ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মানেই দাদাগিরি। সে ব্যাট হাতে বাইশ গজে হোক বা মাঠের বাইরে প্রসাশক হিসাবে। মহারাজের দাপট ক্রিকেট মাঠে সর্বত্র। ক্রিকেটার হিসাবে প্রচুর স্ট্রাগেলের মধ্যে দিয়েই ওঠে এসেছেন অধিনায়ক সৌরভ। এবার অধিনায়ক থেকে প্রত্যাবর্তন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নায়ক। বঙ্গ সন্তানের গর্বে বাঙালি আবেগ এখনও তুঙ্গে। খেলোয়াড় জীবনে বেশ কিছু রাজনীতির শিকার হয়েছেন সৌরভ। এমনকি মহারাজের অধিনায়কত্বে খেলা ধোনিও এই থ্রিল থেকে বাদ দেননি সৌরভকে। পাশাপাশি রবি শাস্ত্রী, গ্রেগ চ্যাপেলরা তো আছেনই। এবার সেই দাবার বোর্ডের একটা চালে ঘুড়ে গেল সব মোড়। এক চালে এবার সৌরভের তলায় চলে এলেন ধোনি, কোহলি ও শাস্ত্রীরা। ভারতীয় ক্রিকেটের কনিষ্ঠতম বিসিসিআই সভাপতির যাত্রার কিছু টুকরো স্মৃতি আজও টাটকা। রইল সেই অ্যালবম।
Asianet News Bangla | Published : Oct 14, 2019 8:56 AM IST / Updated: Oct 14 2019, 03:46 PM IST
১৯৯২ সালে দলে সুযোগ পেয়েও বাদ পরার পর ৪ বছর পর দলে ফেরা। সালটা ১৯৯৬ লর্ডসে নভজোৎ সিং সিধুর জায়গায় দলে এলেন সৌরভ। ভারত বনাম ইংল্যান্ডে টেস্টের অভিষেকেই নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন বঙ্গ সন্তানরাও পারেন। নিজের প্রথম টেস্টেই শতরানের সঙ্গে ১৩১ রানের ইনিংস খেললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
১৯৯৭ টরোন্টো ফ্রেন্ডশিপ কাপে ৬ ম্যাচের সিরিজে ব্যাট হাতে দাপুটে বাঙালি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সৌরভের দুরন্ত ব্যাটিং। সিরিজের সেরা ক্রিকেটার। ব্যাট ও বল হাতে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন সৌরভের। ভারতীয় দলে স্থায়ি সদস্য হিসাবে নিজেকে প্রমান করলেন মহারাজ। তারপর একের পর এক দুরন্ত ইনিংস। ১৯৯৯ টনটনে দ্রাবিড়ের সঙ্গে জুটি বেধেঁ ৩১৮ রান।
২০০০ সালে শচীন তেন্ডুলকরের হাত থেকে অধিনায়কত্ব নেওয়ার পর ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রত্যাবর্তন। ক্রিকেটের মাঠে ও বাইরে ভারতীয় দলকে নিয়ে শুরু হল নানা জল্পনা। বেটিং থেকে শুরু করে বেশ কিছুর কবলে তখন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। সেই সময় দরকার ভারতের দরকার ছিল একজন কঠোর অধিনায়কের। আর তারপরই অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব পেলেন সৌরভ। বদলে দিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের পরিকাঠামো। সেই লড়াইটাও ছিল সৌরভের কেরিয়ারের সফলতম একটা দিক। তারপর দলের একের পর এক সাফল্য।
২০০২ সালে ক্রিকেটের জন্মভিটে লর্ডসের মাটিতে সৌরভের দাদাগিরি। ২০০২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফিতে জয় পেয়ে ইংল্যান্ডের ঘরের মাঠে চোখে আঙুল দিয়ে ও লর্ডসের গ্যালারিতে জামা ঘুরিয়ে সৌরভ প্রমান করে দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট ও বিশ্ব ক্রিকেটে দাদাগিরিতে শুধু তাঁকেই মানায়।
২০০৩ কেনিয়ার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১১১ রানে ইনিংস খেলে ভারতকে তুললেন বিশ্বকাপ ফাইনালে। সেই ম্যাচে অধিনায়ক হিসাবে নিজের স্বপ্নের ইনিংস খেলতে দেখা গিয়েছিল সৌরভকে। তবে বিশ্বকাপ অধরা থাকলেও তারপরও একের পর এক সাফল্য পেয়েছে ভারতীয় দল। ২০০৪ পাকিস্তানের মাটিতে পাক দলকে হারিয়ে ভারতবাসির মন জয় করেছিলেন অধিনায়ক সৌরভ।
২০০৫-২০০৬ সালের মধ্যে ভারতীয় কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের সঙ্গে বিতর্কের পর ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব চলে যায় সৌরভের। একই সঙ্গে দল থেকেও বাদ পরেন মহারাজ। যখন গোটা বিশ্ব বিশ্বের সামনে পিছিয়ে পরেছিলেন সেই সময় ফের স্লগ ওভারে ব্যাট হাতে দুরন্ত কামব্যাক করলেন প্রিন্স অব কলকাতা। ২০০৬ সাল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দুরন্ত কামব্যাক দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে টেস্টে কামব্যাক করে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন সৌরভ। তারপর স্বসম্মানে নিজের দুরন্ত পারফরম্যান্সের মধ্যে দিয়েই ২০০৮ সালে শেষ হল মহারাজের ২২ গজের কেরিয়ার।
২০১৫ সালে জগমোহন ডালমিয়ার প্রয়াণের পর বাংলা ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন সৌরভ। বঙ্গ ক্রিকেটে দক্ষ প্রশাসক বলতে সেই সময় ডালমিয়ার পর তেমন কাউকে দেখা যায়নি। তবে সেই সংকটের সময় সৌরভের হাতেই তুলে দেওয়া হয় বঙ্গ ক্রিকেটের ভার। আর সেই জায়গাটাও সফল ভাবে পালন করেন গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৯ এবার সব কিছুকে উপেক্ষা করে স্লগ ওভারে ফের রুদ্ধশ্বাস ভাবে ম্যাচ জিতে নিলেন প্রিন্স অব কলকাতা। দীর্ঘ নাটকের পর বিসিসিআই প্রসিডেন্ট হিসাবে এবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব নিতে চলেছেন সৌরভ। বেশ কিছু বাধা বিপত্তি কাটিয়ে এবার ভারতীয় ক্রিকেট মহারাজের হাতে।