বডি পেতে স্ত্রীকে ৬ লক্ষ ডলারের হুমকি ফোন, কবর খুড়ে তোলা হয়েছিল 'চার্লি'র দেহ
বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ চলচ্চিত্র অভিনেতা চার্লি চ্যাপিলন যিনি নিজের অভিনয়ের জন্য আজও ইতিহাসের পাতায় জীবন্ত হয়ে রয়েছে। আজ তার ১৩১ তম জন্মদিন। চলচ্চিত্র ইতিহাসের সর্বকালের সমাদৃত নামগুলোর মধ্যে একজন হলেন স্যার চার্লস স্পেন্সার 'চার্লি চ্যাপলিন'। চলচ্চিত্র জগতের শ্রেষ্ঠ কৌতুকাভিনেতা ও মূকাভিনেতা হিসেবে তিনি আজীবন সকলের হৃদয়ে নিজের জায়গা করে রেখেছেন। চলচ্চিত্র জগতে তার অবদানও অনস্বীকার্য। ট্র্যাজেডি ও কমেডিতে ভরা হাস্যরসেপূর্ণ এহেন কৌতুক অভিনেতার মৃত্যুটাও যেন একটা ইতিহাস। জেনে নিন সেই কাহিনি।
সালটা ১৯৭৭। ৮৮ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছিলেন চার্লি চ্যাপলিন । সুইজারল্যান্জে লেক জেনিভার কাছে কর্সিয়র সার ভেভেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল।
মৃত্যুর ঠিক দুই মাস পর অর্থাৎ ১৯৭৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে চার্লির স্ত্রী কাছে একটি ফোন আসে। যেখানে এক ভাঙা ব্যক্তির গলা বলতে শোনা যায়, চার্লির মৃতদেহ কবর খুড়ে বের করে নেওয়া হয়েছে।
ফোন পেয়ে চার্লির স্ত্রী প্রথমে মজা মনে হলেও খানিক পরে বিষয়টি নিয়ে খটকা হতেই পুলিশে খবর দেন।
মৃতদেহটি পেতে হলে ৬ লক্ষ ডলারের বিনিময়ে সেটি ফেরত পাওয়া যাবে। যদিও মৃতদের চুরির ঘটনা নতুন নয়, দেশে -বিদেশে হামেশাই এইরকম ঘটেই থাকে। তবে শবদেহ চুরির যত ঘটনা ঘটেছে তার মধ্য হয়তো সবথেকে বিখ্যাত চার্লির এই ঘটনা।
চার্লির স্ত্রীকে নিয়ে পুলিশ বাহিনী সমাধিক্ষেত্রে ছুটে যায়। এবং সেখানে গিয়ে পুলিশের চোখ যেন চড়কগাছ। কবর থেকে উধাও হাসির রাজা।
সেই মুহূর্তে মিডিয়া থেকে শুরু করে সকলের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হতে খুব বেশি সময় নেয়নি। রেডিওর মাধ্যমে খবরটি সুইজারল্যান্ড থেকে সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল।
অনেকেরই মনে হয়েছিল পুরো ঘটনাটি আমেরিকার হাতে রয়েছে। কারণ আজীবন মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার এটাই ফলাফল চ্যাপলিনের।
এরপরই শুরু হয় পুলিশের কাজ। নজরদারি চালানো থেকে কল রেকর্ডিং সবেতেই আড়ি পাতে পুলিশ। একদিন গভীর রাতে চার্লির স্ত্রী ফোনে সেই হুমকি টাকা না দিলে ছোট দুই সন্তানকে মেরে ফেলা হবে।
পাঁচ সপ্তাহের তদন্তের পর চার্লির পারিবারিক বাড়ি কর্সিয়র থেকে কেয়ক কিলোমিটার দূরে থাকা এক গাড়ি সারাইয়ের কারখানা থেকে উদ্ধার হয় দুই ব্যক্তি। পোল্যান্ডের রোমান ওয়ার্ডাস এবং বুলগেরিয়ার গানস্ক গানেভ নামে দুই রিফিউকউজিকে গ্রেপ্তার করে। তারা জেরায় স্বীকার করে যে চার্লির কফিনটি পাশের ভুট্টাখেতে তারাই পুঁতে রেখেছিল।
আর্থিক সমস্যার জন্য তারা এই কাজ করেছিল যা আদালতে স্বীকার করে। বিচার চলাকালীনই পুলিশি সহায়তায় চার্লিনের দেহ ফের কংক্রিট ঢালাই করে সমাধিস্থ করা হয়েছিল।