অধরাই থেকে গেল ইংল্যান্ডের স্বপ্ন, টাইব্রেকারে জিতে ইউরো ২০২০ চ্যাম্পিয়ন ইতালি
একদিকে ৫৫ বছর পরও কোনও মেজর টুর্নামোন্টের ফাইনালে উঠেও স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। অপরদিকে ৫৩ বছর পর দ্বিতীয়বার ইউরোপ সেরা হওয়ার আনন্দ। আর ফুটবল বিশ্ব দেখল ইউরো ২০২০ রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল। যেখানে ইংল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারাল ইতালি। নির্ধারিত সময়ে খেলার ফল ছিল ১-১। ফলে ঘরের মাঠে ফাইনালের আগে ব্রিটিশরা যতই বলুক না কেন ‘ইটস কামিং হোম’। কিন্তু 'হোমে' নয়, ইউরোর সেরার ট্রফি গেল রোমে।
ওয়েম্বলিতে ফাইনালে ম্যাচ শুরু ২ মিনিটের মধ্যেই গোল পেয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের মাথায় ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন লিউক শ'। ইংল্যান্ডের তো বটেই, ইউরোর ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোল এটি।
এরপর আক্রমণের মাত্রা বাড়ায় ইতালি। একের পর এক আক্রমণে ইংল্যান্ডের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন ইমোবাইল ইনসিগনে, বারেব্বা, ভেরাত্তিরা। কিন্তু ম্যাচর প্রথমার্ধে গোল আসেনি ।
দ্বিতীয়ার্ধেও সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইতালি। ইংল্যান্ড রক্ষণকে নড়বড়েও দেখাচ্ছিল। পিকফোর্ড বেশ কিছু সেভ করলেও ৬৭ মিনিটে হল না রক্ষা। বুনোচ্চির গোলে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে ফাইনাল জমিয়ে দেয় ইতালি।
এরপর দুই দলই বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করলেও গোল আসেনি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ গোলে শেষ হয় খেলা। এরপর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে নির্ধারিণ করায় যায়নি ইউরো ফাইনালের ভাগ্য় শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ।
পেনাল্টিতে ইংল্যান্ডের হ্যারিকেন সহ দুটি গোল করলেও, মার্কাস র্যাশফোর্ড, জ্যাডন স্যাঞ্চো এবং বুকায়ো সাকা পেনাল্টি মিস করেন।
টাই ব্রেকারে তিন গোল করতে সক্ষম হয় ইতালি। কিন্তু আন্দ্রেয়া বেলোত্তি এবং জর্জিনহোর শট আটকে দেয় পিকফোর্ড।
ইতালির গোলরক্ষক সাকার শট বাঁচাতেই শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের স্বপ্ন।বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠেন ইতালির প্লেয়াররা।
তীরে এসে তরী ডোবায় হতাশ হয়ে পড়ে ইংল্যান্ড দল। ১৯৯৬ সালে ইউরোতে এই টাই ব্রেকার মিস করেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ইংল্যান্ড কোচ সাউথগেটের। সেই বেদনা কাটিয়ে উঠতে পারলেন না ২০২১-এর টাইব্রেকারেও।
ফাইনালের হার মেনে নিতে পারছেন না অধিনায়ক হ্যারি কেন। এই যন্ত্রণা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক।
এক দিকে যখন হতাশা অপরদিকে তখন বিজয় উল্লাস। ৫৩ বছর পর ইউরো সেরা হয়ে নতুন ইতিহাস লিখল নব প্রজন্মের ইতালি। যার কারিগির ইতালি কোচ রবের্তো মানচিনি।
২০১৮ বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে না পেরে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ইতালিকে। তারপরই দায়িত্ব নেন মানচিনি। আর ২০২১-এ ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্ব ফুটবলে আরও একবার নিজেদের ডঙ্কা বাজাল ইতালি।
ট্রফি পাওয়ার পর ইতালির প্লেয়ারদের উচ্ছাস ছিল বাঁধ ভাঙা। চলে ফটো সেশনও। এই ইতালি যে সম্পূর্ণ নতুন ইতালি তা প্রমাণ করে দিলেন মানচিনি থেকে চিয়েলিনি, বুনোচ্চি, ইমোবাইল, ইনসিগনেরা।