রঙের উৎসব হোলি পালিত হচ্ছে দেশ জুড়েই। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মথুরা, বৃন্দাবনে হোলির আমেজটাই আলাদা। এখানে হোলি শুরু হয়ে যায় অনেক আগে থেকেই। ব্রজভূমি মথুরা, নন্দগাঁও, বৃন্দাবন ও বারসানায় ৪০ দিন ধরে হোলি উৎযাপন করা হয়। ব্রজধামে প্রতিটি স্থানে হোলি খেলার স্বাদই আলাদা। লাড্ডু হোলি দিয়ে এবার শুরু হয়েছে উত্তরভারতে রঙ্গোৎসব। যার সূচনা করেছিলেন স্বয়ং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
Asianet News Bangla | Published : Mar 10, 2020 6:07 AM IST / Updated: Mar 10 2020, 11:38 AM IST
মথুরা, নন্দগাঁও, বৃন্দাবন ও বারসানাকে বলে ব্রজভূমি। এখানেই শ্রীরাধিকার সঙ্গে রঙ্গোৎসবে মাততেন শ্রীকৃষ্ণ।
ব্রজভূমি মথুরা, নন্দগাঁও, বৃন্দাবন ও বারসানায় ৪০ দিন ধরে চলে দোল উৎসব পালন। যা দেখার টানে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে আসেন।
ব্রজধামের প্রত্যেকটি স্থানে দোল খেলার স্বাদ ভিন্ন, তবে বারসানার হোলি একেবারেই আলাদা যাকে বলা হয় লাথ মার হোলি।
লথ মার হোলি বা দোলের পিছনে কারণ বিশেষ আকর্ষণীয়।এখানকার লোকজনদের বিশ্বাস কৃষ্ণ নন্দগাঁও থেকে বারসানা পর্যন্ত দোল খেলতে আসেন। তিনি শ্রীরাধিকার সঙ্গে হোলি খেলে তাঁদেরকে জ্বালাতেন। সেকারণে বারসানার নারীরা লাঠি দিয়ে কৃষ্ণ এবং তার বন্ধুদের মজা করে আঘাত করতেন। তাই বারসানার মানুষরাও একই ঐতিহ্য অনুসরণ করে আসছেন।
একইভাবে নন্দগাঁওতে হোলি খেলা হয়, যেখানে বারসানা পুরুষেরা নন্দগাঁওতে আসেন সেখানকার মহিলাদের সঙ্গে হোলি খেলতে।
লাথ মার হোলি শুধুমাত্র নন্দগাঁও এবং বারানাসাতেই উদযাপন করা হয়। লাথ মার হোলিতে বারসানা এবং নন্দগাঁও ছাড়া বাইরের কারও অংশগ্রহণ করার অনুমতি নেই।
লাথ মার হোলি শুধুমাত্র নন্দগাঁও এবং বারানাসাতেই উদযাপন করা হয়। লাথ মার হোলিতে বারসানা এবং নন্দগাঁও ছাড়া বাইরের কারও অংশগ্রহণ করার অনুমতি নেই।
বাঁকে বিহারী মন্দিরের সামনে এখন আবিরে রাঙা রঙিন মানুষের ভিড়। এখানে এমন কেউ নেই যিনি হোলি উৎসব পালন করেন না। সকলেই আবির ভর্তি প্যাকেট হাতে নিয়ে রাঁধে রাঁধে বলে আবির ছড়িয়ে দেন।
মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করার সময় বালতি এবং পিচকারি দিয়ে মানুষের জামা কাপড় রঙিন করা দেওয়া হয় । প্রভু কৃষ্ণের মূর্তিকে ঘিরে খেলা হয় আবির।
শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল মথুরাতে। তাই রাধা-কৃষ্ণের লীলাকে কেন্দ্র করে আজও মথুরাতে হোলি উৎসবে মাতেন সকলে।
এর পিছনেও আছে এক ইতিহাস। রাধার সাথে প্রেম পর্ব চলাকালীন নাকি শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাধিকার গায়ের রঙ দেখে নাকি ঈর্ষা করতেন। প্রায়শই তার মার কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাতেন যে তার এরকম গায়ের রঙ কেন? শুধুমাত্র গায়ের রঙে সমতা আনার জন্যই শ্রীকৃষ্ণ রাধার গায়ে রঙ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। নন্দগাও থেকে কৃষ্ণ এবং তার বন্ধুরা রাধার ও তাঁর সখিদের রঙ ছুঁড়ে দিতেন। সেই থেকে এখনও মথুরাতে একইভাবে হোলি খেলা হয়ে আসছে।
বৃন্দাবনে গোপীনাথ মন্দিরে বিধবা মহিলারাও রঙের খেলায় মাতোয়ারা হন। বৃন্দাবনের সবথেকে পুরোন মন্দির গোপীনাথ মন্দির। এখানে আশ্রিতা সবাই 'গোপী'। আর সহস্র হাজারো গোপীদের নাথ এইজনই, তিনি শ্রীকৃষ্ণ।