মার্কোস বা মেরিন কমান্ডোস
ভারতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, সবচেয়ে বিপজ্জনক বিশেষ বাহিনী হল মার্কোস বা মেরিন কমান্ডোস। পাহাড়-মরুভূমি-জঙ্গলের মতো স্থলভাগের যে কোন জায়গায় যুদ্ধের জন্য এই বাহিনী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সামুদ্রিক যুদ্ধের ক্ষেত্রে তো তাদের বলা হয় সুপার এক্সপার্ট। কঠিনতম শারীরিক পরীক্ষা দিয়ে তবেই এই বাহিনীর অংশ হওয়া যায়। প্রতিবছর ৮০ শতাংশের বেশি আবেদনকারী প্রথম তিন দিনের দীর্ঘ শারীরিক সুস্থতা পরীক্ষা এবং প্রবণতা পরীক্ষাতেই বাদ পড়েন। ওই তিনটে দিন পার করতে পারেন যাঁরা, তাঁদের এরপরে পাঁচ সপ্তাহের একটা লম্বা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যা পরিচিত 'নরকের সপ্তাহ' বলে। এই সময়ে তাঁদের দীর্ঘ কয়েকদিন না ঘুমিয়ে কর্তব্য পালনের অনুশীলন করানো হয়। কমান্ডোদের শুয়ে শুয়ে, দাঁড়িয়ে, দৌড়তে দৌড়তে, পিছন ফিরে এবং আয়নায় দেখেও সঠিক নিশানায় গুলি ছুঁড়তে সক্ষম করে তোলা হয়। নিশানা চোখে পড়ার পর গুলি ছুঁড়তে সময় লাগে মাত্র ০.২৭ সেকেন্ড! প্রশিক্ষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে উরু কাদামাটির উঁচু ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে, গুঁড়ি মেরে যেতে হয় কমান্ডোদের। এই প্রশিক্ষণটি পরিচিত 'ডেথ ক্রল' নামে। শরীরে বাঁধা থাকে ২৫ কেজি ওজনের বন্দুক ও অন্যান্য সামরিক সাজ সরঞ্জাম। ওই অবস্থায় ৮০০ মিটার গিয়ে ২৫ মিটার দূরের এক লক্ষ্যবস্তুতে গুলি করতে হয়। আর সেই লক্ষ্যের ছিক পাশেই দাঁড়িয়ে থাকেন একজন মানুষ। এই বাহিনীর পোশাকও তৈরি হয় বিশেষভাবে। মাথায় থাকে বুলেটপ্রুফ হেলমেট, গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। ইউনিফর্মটি জলে ভেজে না, আগুনে পোড়ে না। প্রত্যেক কমান্ডোর সঙ্গে থাকে উচ্চপ্রযুক্তির বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থা। শর্টরেঞ্জ সংঘর্ষের জন্য ৯ মিমি সেমি অটোমেটিক পিস্তল এবং এবং লংরেঞ্জের জন্য ইজরাইলে তৈরি টেভর-২১ অ্যাসল্ট রাইফেল থাকে। পায়ের জুতোজোড়াও বিশেষভাবে তৈরি। হালকা এই জুতো যে কোনও তলকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে থাকে।