বার্ষিক বাজেটের ১.৫ শতাংশ খরচা ট্রাম্প বরণে, কীভাবে সেজে উঠছে আহমেদাবাদ, দেখুন ছবিতে ছবিতে
ভারতে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফরের প্রথমেই ট্রাম্প যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে। বিষয়টা সেই রাজ্যের কাছে প্রায় ভারতে বড়লাট আসার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাকুল্যে থাকবেন ৩ ঘন্টা। আর তার জন্যই গুজরাত সরকার প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ কোটি টাকা ব্যয় করছে। যা গুজরাতের বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১.৫ শতাংশ।
গুজরাতে ট্রাম্প ২৪ ফেব্রুয়ারি আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদী ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে পৌঁছবেন সবরমতি আশ্রমে। সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতা যাবেন বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম মোতেরা স্টেডিয়াম উদ্বোধন করতে। সেখানে গত সেপ্টেম্বরে হিউস্টনে 'হাউডি মোদি' অনুষ্ঠানের আদলে আহমেদাবাদের 'নমস্তে ট্রাম্প' অনুষ্ঠানে এক লক্ষেরও বেশি মানুষের সামনে তাঁরা দুজনেই বক্তৃতা দেবেন। তারপর ফিরবেন দিল্লি-তে।
ট্রাম্পের জন্য দেওয়াল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়াল প্রীতির কথা গোটা বিশ্ব জানে। তার আগমনে গুজরাত প্রশাসন-ও দ্রুত আহমাদবাদে বিমানবন্দর থেকে ইন্দিরা ব্রিজের রাস্তায় দেড় কিলোমিটার লম্বা দেওয়াল নির্মাণ করেছে। এই অঞ্চলে প্রায় ২ হাজারেরও বেশি লোকের বস্তি রয়েছে। বিরোধীদের দাবি সরকার ট্রাম্পের দৃষ্টি থেকে বস্তিবাসীদের দূরে রাখতেই এই দেওয়াল তুলছে। অন্যদিকে আহমেদাবাদ পুর কর্পোরেশনের দাবি, এই বস্তি এলাকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রাকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করে চলেছে।
বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ নোটিশ শুধু দেওয়ালে রক্ষা নেই, নবনির্মিত মোতেরা স্টেডিয়ামের কাছের কমপক্ষে ৪৫টি বস্তিবাসী পরিবার-কে মার্কিন রাষ্ট্রপতির সফরের আগে পুর কর্পোরেশন উচ্ছেদের নোটিশ ধরিয়ে দিয়েছে। পুর কর্তারা যথারীতি ট্রাম্পের আসার সঙ্গে নোটিশ সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন। কিন্তু, বস্তির বাসিন্দারা এই পদক্ষেপের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
স্বচ্ছতা অভিযান ট্রাম্পের আগমনের আগে ত্বরান্বিত হয়েছে গুজরাত সরকারের স্বচ্ছতা অভিযান কর্মসূচি। বিমানবন্দর থেকে মোতেরা স্টেডিয়াম পর্যন্ত রাস্তার দুধারের দেয়ালগুলি ইন্দো-মার্কিন সৌভাতৃত্বের স্লোগান এবং বার্তা দিয়ে চিত্রিত করা হয়েছে। শিল্পকর্মের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি স্থানীয় এনজিও-কে। তারা পরিবেশ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতনতা ছড়ানোর কাজ করে থাকে। এই স্বচ্ছতা অভিযানের পাশাপাশি বিমানবন্দর চত্ত্বরের পান-বিড়ি বা অন্যান্য ছোট দোকান-ও আপাতত তালাবন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। বিমানবন্দরের আশেপাশের অঞ্চলটি পরিষ্কার রাখতেই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে।
মোদী-ট্রাম্পের হোর্ডিং বিমানবন্দর থেকে মোতেরা স্টেডিয়াম পর্যন্ত রাস্তায় স্বচ্ছতা অভিযান চালানোর পাশাপাশি ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ রোডশো-এর পুরো রাস্তাটিতে দুইপাশেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে স্বাগত জানিয়ে বড় বড় হোর্ডিং লাগানো হয়েছে।
সবরমতি আশ্রমের প্রস্তুতি সবরমতি আশ্রমও ট্রাম্পের আসার আগে নতুন করে সেজে উঠছে। এখানকার হৃদয়কুঞ্জে বের করা হচ্ছে পুরনো বড় চরকাটি। গান্ধীর ধ্যানমূর্তি, হৃদয়কুঞ্জ - সবেরই সংস্কার করা হচ্ছে। আশ্রমের গাছের গোড়াগুলি রঙ দিয়ে রাঙানো হচ্ছে।
আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট আসার অনেক আগে থেকেই আহমেদাবাদে এসে গিয়েছেন মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা। ট্রাম্পের যে যে জায়গায় যাওয়ার কথা, সমস্ত এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাঁরা খতিয়ে দেখছে। তাদের সহায়তা করছে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষীবাহিনী বা এনএসজি-র কমান্ডোরা এবং এলিট ফোর্স 'চেতক'-এর কমান্ডোরা।
যমুনার দুর্গন্ধ হ্রাস এটি গুজরাতের নয়, উত্তরপ্রদেশ সরকারের পদক্ষেপ। ভারত সফরে ট্রাম্পের শুধুমাত্র আহমেদাবাদ ও দিল্লির পাশাপাশি আগ্রাতেও সংক্ষিপ্ত সফরে যাবেন। তার আগে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সেচ বিভাগ বুলন্দশহরের গঙ্গানাহার থেকে যমুনা নদীতে ৫০০ কিউসেক জল ছেড়েছে। এতেো করে যমুনার পচা জলের 'দুর্গন্ধ' কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।