এবার মুঘল সাম্রাজ্যের দখল নিলেন শিবাজি মহারাজ, ফের নামবদলের খেলায় মাতলেন যোগী আদিত্যনাথ
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই উত্তরপ্রদেশের একাধিক স্থানের নাম বদলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিবাদও হয়েছে। তবে বদলালনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এবার ফের একবার তিনি নাম বদলের খেলায় মাতলেন।
গত তিন বছর ধরে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। এই সময়ের মধ্যে রাজ্যের বেশ কিছু স্থান ও স্থাপনার নাম বদল করেছেন তিনি। ঐতিহাসিক শহর এলাহাবাদের নাম বদল করে প্রয়াগরাজ করেছেন। বদলেছেন ঐতিহাসিক মোগলসরাইয়ের নামও। স্টেশনের নতুন নাম হয়েছে দীন দয়াল উপাধ্যায় জংশন।
এবার আগ্রায় নির্মীয়মান মুঘল মিউজিয়াম মারাঠা বীর ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের নামে নামাঙ্কিত করার সিদ্ধান্ত নিল উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। সোমবার রাতে সরকারি বিবৃতিতে এই ঘোষণা করা হয়েছে।
এক ট্যুইট বার্তায় যোগী আদিত্যনাথ লিখেছেন, ‘আগ্রায় নির্মীয়মান জাদুঘরটি পরিচিত হবে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের নামে। নতুন উত্তরপ্রদেশে দাসত্বের মানসিকতার কোনও প্রতীকের স্থান হবে না। শিবাজি মহারাজ আমাদের নায়ক। জয় হিন্দ, জয় ভারত।’
আগ্রা ডিভিশনের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক করছিলেন যোগী আদিত্যনাথ৷ বৈঠকেই তিনি নির্দেশ দেন, মুঘল মিউজিয়ামের নাম বদলে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের নামে করতে হবে৷
আদিত্যনাথের কথায়, 'দেশের গর্ব জড়িয়ে, এমন বিষয়কেই প্রচার করা দরকার৷ ক্রীতদাস পরিস্থিতির ইতিহাসকে নয়৷ মুঘলরা আমাদের রোল মডেল হতে পারে না৷ জাতীয়তাবাদী ভাবাদর্শকে উত্সাহিত করতে হবে৷ শিবাজি মহারাজ আমাদের হিরো৷'
২০১৫ সালে আগ্রায় তাজমহলের কাছেই ওই মিউজিয়ামটি তৈরির পরিকল্পনা করে অখিলেশ যাদব সরকার। নির্মাণ শুরু হয় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও চলছে।
তাজমহলের পূর্ব গেটে নির্মীয়মান মিউজিয়ামটিতে মুঘল সংস্কৃতি, মুঘল আমলের জিনিসপত্র, ছবি, খাবার, রীতিনীতি, অস্ত্র ও অন্যান্য বিষয়ে প্রদর্শন করা হবে।
যোগী আদিত্যনাথ নির্দেশ দিয়েছেন, ওই মিউজিয়ামে শিবাজির সম্মানে একটি গ্যালারিও তৈরি করতে হবে৷ সেই গ্যালারিতে আগ্রার সঙ্গে শিবাজির সম্পর্ক, তাঁর পালিয়ে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য থাকবে৷ গোটা মিউজিয়ামটি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ১৪০ কোটি টাকা৷
প্রায় তিন শতাব্দী ধরে ভারত শাসন করেছে মুঘল সাম্রাজ্য। ১৫২৬ থেকে ১৫৪০ সালের পর আবার ১৫৫৫ সাল থেকে শুরু করে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ভারতের বেশিরভাগ এলাকার শাসন ক্ষমতা ছিলো মুঘল শাসকদের হাতে। তাজ মহল, লাল কেল্লাসহ আগ্রা ও দিল্লির বেশ কিছু স্মারক স্থাপনা নির্মাণের কৃতিত্ব মুঘল শাসকদের। তিন শতাব্দীর শাসনকালে মুঘলেরা ভারতের হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন চালিয়েছিল কিনা তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।
অন্যদিকে, মারাঠা রাজা ছত্রপতি শিবাজী ষোড়শ শতাব্দীর প্রখ্যাত যোদ্ধা। জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। সামরিক কুশলতা দিয়ে বিভিন্ন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য সুপরিচিত তিনি।