কুম্ভ মেলার শাহী স্নান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসনে। গত পাঁচ দিনে শুধু কুম্ভ মেলা চত্বরেই ১ হাজার ৭০০ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। আরটিপিসিআর টেস্টের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। যা থেকে অনুমান করা হচ্ছে এই এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।
হরিদ্বারের চিফ মেডিক্যাল অফিসার শম্ভু কুমার ঝা জানিয়েছেন, হরিদ্বার থেকে দেব প্রয়াগ পর্যন্ত পুরো কুম্ভ মেলায় পাঁচ দিনের ধরে প্রায় ১৩ টি আখড়ার সন্নাসীরা সাহী স্নান করছেন। জড়ো হয়েছেন প্রচুর সাধারণ মানুষও। হৃষিকেষ, তেরহী, দেরাদুন পর্যন্ত ৬০ হেক্টর এলাকা জুড়ে মেলা বিস্তৃত। শাহী স্নানের সম ১২ এপ্রিল। কিন্তু ১৪ এপ্রিল সংক্রান্তি থাকায় অনেকেই স্নান করেন।
নিয়ম অনুযায়ী ১৩ আখড়ার সদস্যরা সূর্যাস্তের পূর্ণ স্নান করেন। তাই সেই সময় ভিড়ের কারণে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে। পুলিশ সেই সময় নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব পালন করে বাধ্য করাতে পারেনি।
আগামী দিনে কুম্ভ মেলা এলায় টেস্টে ও করোনাভাইরাসের টিকার মজুত বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে বলেও জানিয়েছেন চিফ মেডিক্যাল অফিসার।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় সংক্রমণ চলাকালীন কুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। মহামির সময় মেলার আয়োজন করা যায় না বলেও দাবি করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সব বিতর্ক এড়িয়ে গিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিল মেলার আয়োজন করা হবে করোনাভাইরাসের নিয়ম বিধি মেনেই। কিন্তু মেলা প্রঙ্গনে অধিকাংশ দর্শনার্থীকেই মাস্ক বিহীন অবস্থায় দেখা গিয়েছিল। মানা হয়নি নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব। আর সেই কারণে সংক্রমণ দ্রুততার সঙ্গে ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কুম্ভ মেলার আয়োজন কমিটির সদস্য সিদ্ধার্থ চক্রপাণি বলেছেন মা গঙ্গার ওপর বিশ্বাস রয়েছে বলেই শাহী স্নানে এসেছেন বহু মানুষ। তাঁরা বিশ্বাস করেন গঙ্গাই অতিমারির হাত থেকে রক্ষা করবেন। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীর্থ সিং রাওয়াত বলেছেন মানুষের স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও ধর্মকে অবহেলা করা যায় না।
গোটা দেশেই আছড়ে পড়েছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গ। পাল্লা দিয়ে উত্তরাখণ্ডেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১হাজার ৯৫৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের।