করোনা-কেই সবচেয়ে মারাত্মক মহামারি রোগ মনে হওয়াটাই বর্তমান বিশ্বে স্বাভাবিক
কিন্তু, তার থেকেও মারাত্মক রোগ 'ডিসিজ এক্স' ওঁত পেতে আছে
সতর্ক করলেন ইবোলা ভাইরাস আবিষ্কার করা বিজ্ঞানী
কঙ্গোর এক মহিলার অজানা জ্বর ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ
amartya lahiri | Published : Jan 4, 2021 10:30 AM IST / Updated: Jan 19 2021, 02:10 PM IST
এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ৮ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন কোভিড-১৯'এ, আর মৃত্যু হয়েছে ১,৮৪৩,১৪৩ জনের। কিন্তু, করোনা-কে যদি সবচেয়ে মারাত্মক মহামারি রোগ বলে ধরা হয়, তাহলে ভুল হবে। কারণ ওঁত পেতে আছে 'ডিসিজ এক্স'। যা করোনার মতো সংক্রামক এবং ইবোলার মতো প্রাণঘাতি। মানব সভ্যতাকে সতর্ক করলেন অধ্যাপক জাঁ-জ্যাক মুয়েম্বি তামফুম। কে এই অধ্যাপক তামফুম? আজ তেকে চার দশক আগে তিনিই আবিষ্কার করেছিলেন ইবোলা ভাইরাস।
উদ্বেগ বাড়িয়েছে গণপ্রজাতান্ত্রিক কঙ্গোর প্রত্যন্ত শহর ইনগেন্ড-এ এক মহিলার জ্বর। সম্প্রতি, ওই মহিলার দেহে হেমরহেজিক ফিভার বা রক্তক্ষরণজনিত জ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়। ইবোলা-সহ বেশ কয়েকটি রোগের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও তাঁর ওই অসুস্থতার কারণ ধরা পড়েনি। বর্তমানে ওই মহিলা সুস্থ হয়ে উঠলেও, উদ্বেগ দূর হয়নি। কারণ তাঁর অসুস্থতার কোনও যুক্তসঙ্গত কারণ পাওয়া যায়নি। আর তাই বিজ্ঞানীদের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তাঁর অসুস্থতা 'ডিজিজ এক্স' নয়তো?
কী এই 'ডিজিজ এক্স'? বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি বস্তুত আপাত কাল্পনিক একটি ভয়ঙ্কর ব্যধী। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, নতুন কোনও সম্পূর্ণ অজানা 'অপ্রত্যাশিত' প্যাথোজেন, যা কোভিড -১৯'এর মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, আর ইবোলার মতো এই রোগে মৃত্যুর হার ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। আর এই প্যাথোজেন আফ্রিকার গ্রীষ্মমন্ডলীয় রেইন ফরেস্ট থেকে উদ্ভূত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ও বলেছে, 'ডিজিজ এক্স' বিশ্বব্যাপী মারাত্মক মহামারির সৃষ্টি করতে পারে।
এই অবস্থায়, ১৯৭৬ সালে ইবোলা ভাইরাস আবিষ্কার করা বিজ্ঞানী জাঁ-জ্যাক মুয়েম্বি তামফুম বলেছেন, বর্তমান পৃথিবীতে একের পর এক নতুন রোগজীবাণু হানা দেবে। এটাই মানবসভ্যতা ধ্বংসের জন্য প্রধান হুমকি। তাঁর মতে কোভিড -১৯ সেই অর্থে চলচ্চিত্রের ট্রেলার-এর মতো। এর চেয়ে আরও মারাত্মক কোনও নতুন রোগ শীঘ্রই বিশ্বে হানা দিতে পারে বলে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ মন্তব্য করেছেন তিনি।
সিএনএন-কে মুয়েম্বে জানিয়েছেন, আরও অনেক জুনোটিক রোগ, অর্থাৎ যেগুলি কোনও প্রাণীর দেহ থেকে মানুষে সংক্রামিত হয়, সেই ধরণের রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে। কোভিড -১৯ ছাড়াও পিতজ্বর, জলাতঙ্কের মতো রোগ এইভাবে প্রাণীর দেহ থেকে মানুষে সংক্রামিত হয়েছিল।
কীভাবে রোখা যাবে সেই মহামারি? মুয়েম্ব বলেছেন, যদি কোনও রোগজীবাণু আফ্রিকা থেকে উদ্ভূত হয় তবে তা পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগবে। তাই ভাইরাসটিকে প্রাথমিক পর্যায়েই সনাক্ত করতে পারলে, মহামারির বিস্তার সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ইউরোপ এবং বাকি বিশ্বের দেশগুলি এই নতুন রোগজীবাণুগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, কৌশল তৈরির সুযোগ পাবে। তাই এর জন্য এখন থেকেই সম্ভাব্য ভাইরাসগুলি সন্ধান চালাতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।