পরবর্তী অতিমারির জন্য প্রস্তুত হোক বিশ্ব, করোনার সেকেন্ড ওয়েভের মাঝেই নতুন হুঁশিয়ারি 'হু'-র
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কতদিনে পিছু ছাড়বে, তার ঠিক নেই। এর মধ্যে পরের অতিমারীর জন্য গোটা বিশ্বকে তৈরি হতে বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসুস। পরের অতিমারীর জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
Asianet News Bangla | Published : Sep 8, 2020 11:10 AM IST / Updated: Sep 08 2020, 07:40 PM IST
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কার্যত ছিন্নভিন্ন গোটা বিশ্ব। এখনও মৃত্যুমিছিল গুনছে বহু দেশ। কোমর ভেঙে গেছে অর্থনীতির। কত দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কত দিনে ঘুরে দাঁড়াবে বিশ্ব, সে উত্তর অজানা। কিন্তু তারই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রেসিয়াস ঘোষণা করলেন, এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে পরবর্তী মহামারির জন্য। করোনাই শেষ নয়।
করোনা ভাইরাসের দাপট প্রথম দেখা যায় চিনে। কিন্তু সেখান থেকে যে এভাবে বিশ্ব জুড়ে মহামারির আকার নেবে সেই ভাইরাস, সেটা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি কেউ। করোনা কার্যত বদলে দিয়েছে দুনিয়ার জীবনযাত্রা। কোনও প্রস্তুতি ছাড়া রাতারাতি বদলে গিয়েছে জীবন। অতিমারী, লকডাউনের মত শব্দগুলোর সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করেন সবাই।
তবে এই অতিমারী বড়সড় শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে বিশ্ববাসীকে। তাই পরবর্তী অতিমারীর জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেসিয়াস। একইসঙ্গে যে কোনও দেশের সরকারকে জনস্বাস্থ্য খাতে খরচ বাড়ানোর কথাও বলেন তিনি।
করোনাভাইরাসে এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৭৩ লক্ষের বেশি মানুষ। করোনায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ লক্ষ ৯২ হাজারের উপরে । এর মধ্যে দ্বিতীয় অতিমারীর জন্য প্রস্তুত হতে বলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেসিয়াস বলেন, করোনাই শেষ নয়। পরবর্তী মহামারির জন্য বিশ্বকে পুরোপুরি তৈরি থাকতে হবে। এবং একারণেই দেশগুলিকে তিনি জনস্বাস্থ্য খাতে লগ্নি বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার জেনিভায় একটি সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, “ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, মহামারি বা অতিমহামারী পৃথিবীর নানা দেশেরই অঙ্গ। ফলে একথা নিশ্চিত করে বলা যায়, এটাই শেষ অতিমারী নয়। তবে পরবর্তী অতিমারী যখন আসবে, তখন আজকের থেকে অনেক বেশি প্রস্তুত থাকবে গোটা বিশ্ব। কারণ এই অতিমারী বড়সড় শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে বিশ্ববাসীকে।”
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কার্যত ছিন্নভিন্ন গোটা বিশ্ব। এখনও মৃত্যুমিছিল গুনছে বহু দেশ। কোমর ভেঙে গেছে অর্থনীতির। কত দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কত দিনে ঘুরে দাঁড়াবে বিশ্ব, সে উত্তর অজানা। এর মধ্যেই বিশ্বের নানা প্রান্তে আসতে শুরু করেছে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ।
গত বছর ডিসেম্বরে চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। কিন্তু সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করার পরে গোটা বিশ্বকে তছনছ করে ফেলেছে এই সংক্রমণ। চিন সংক্রমণ মুক্ত হয়ে গেলেও একের পর এক দেশ কঠিন থেকে কঠিনতম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে থাকে। সংক্রমণের দাপট রুখতে লকডাউন জারি করতে হয়, স্তব্ধ হয়ে পড়ে জীবন।
আপাতত সকলেরই পাখির চোখ, করোনার ভ্যাকসিন কবে প্রস্তুত হবে সেই দিকে। এখনও এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও আশার আলো দেখা না গেলেও, দিন-রাত এক করে কয়েকশো দেশে চলছে গবেষণা। সুখবর আসতে পারে যে কোনও মুহূর্তে। তার পরে একটা বড় চ্যালেঞ্জের কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে হু, ভ্যাকসিনের সমবণ্টন নিশ্চিত করা।
তবে 'হু' স্বীকৃতি না দিলেও ইতিমধ্যে রাশিয়া বাজারে নিয়ে এসেছে তাদের কোরনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক-ভি কে।
এদিকে বিশ্বের সব দেশ যাতে সমানভাবে ভ্যাকসিন পায়, তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর তাতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে ভারতকে।