ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে হিটলারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নেতাজিকে নিয়ে সেরা ২০ ছবির অ্যালবাম
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু শুধু একটা নাম নন, তিনি আজও ভারতের মানুষের অন্তরাত্মা। তাঁর দর্শন, স্বাধীন ভারতকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর করে যাওয়া পরিকল্পনা সকলকে পথ দেখিয়েছে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ভারতের বুকে জন্ম নিয়েছেন একের পর এক বীর ব্যক্তি। এঁদের সকলেরই সম্মিলিত মিশ্রণ যেন ছিলেন নেতাজি। এঁদের সকলের ভাবনা, পরিকল্পনা, স্বাধীন ভারতের উন্নয়ন- সমস্তকিছুকে নিজের দর্শনের মধ্যে মিশিয়ে দিয়েছিলেন। তাই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সশস্ত্র বিপ্লবের বারুদেও আগুন লাগিয়েছিলেন তিনি। কারণ, তিনি বুঝে গিয়েছিলেন ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে হবে। নচেৎ শান্তিপ্রিয় ভারতবাসীকে কোনওভাবেই স্বাধীন হতে দেবে না ব্রিটিশরা। কিন্তু স্বাধীনতা আনলেই তো হবে না, দেশে ও দশের উন্নয়ন, স্বাধীন ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়ভার কীভাবে কার্যকর হবে? সে পরিকল্পনাও করে ফেলেছিলেন। যা স্বাধীনতার পরবর্তীভারতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নামে পরিচিত ছিল। নেতাজি ফিরে আসেননি, কিন্তু তাঁর তৈরি করে যাওয়া উন্নয়নের দর্শনকেই গ্রহণ করেছিল জওহরলাল নেহরু-র সরকার।
Asianet News Bangla | Published : Jan 23, 2020 5:12 AM IST / Updated: Jan 23 2020, 11:13 AM IST
হরিপুরায় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনের সময় এই ছবিটি তোলা হয়েছিল। সালটা ছিল ১৯৩৮। এই অধিবেশনেই কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন নেতাজি।
শান্ত-স্নিগ্ধ এক চেহারায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এক ব্যক্তি। যার ক্ষমতা ও জেদ সম্পর্কে ব্রিটিশরাও অবগত ছিল না। ফলে ব্রিটিশ রাজের তৈরি করা সমস্ত শৃঙ্খলকে ভেদ করে তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন হিটলার ও তোজোর কাছে।
জার্মানিতে হিটলারের অতিথি হয়েছিলেন নেতাজি। সে সময় তাঁর সম্মানে একটি নৈশভোজ রেখেছিলেন হিটলার। সেই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছেন নেতাজি।
৭ এপ্রিল, ১৩৮, কলকাতায় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে আসেন জওহরলাল নেহরু। সেই বৈঠকেই নেহরুর পাশে নেতাজি।
ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও ব্রিটেনের একটা প্রোথিতযশা ব্যক্তিদের সঙ্ঘের কাছে নেতাজি যথেষ্টই জনপ্রিয় ছিলেন। এমনই একজন মানুষ ছিলেন লেবার পলিটিশিয়ান এবং ডেইলি হেরাল্ডের এডিটর জর্জ ল্যান্সবারি। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৩৮ সালে নেতাজির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল ল্যান্সবারির। সেই ছবি।
১৯৩৯-এ লন্ডনে এমন দৃশ্য প্রতিভাত হয়েছিল। নেতাজি-কে ঘিরে সেদিন প্রবাসী ভারতীয়রা যে উন্মাদনা দেখিয়েছিল তাতে ব্রিটিশ রাজের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল। কারণ তাদের মনে হয়েছিল দেশনায়ক হিসাবে এবং ব্রিটিশ বিরোধিতায় সেই মুহূর্তে নেতাজি পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে জওহরলাল নেহরু মহম্মদ আলি জিন্নাদের।
১ মার্চ, ১৯৩৮-এ হরিপুরায় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে এই ছবিটি তোলা হয়েছিল। নেতাজির বাঁ-পাশে রয়েছেন মহাত্মা গান্ধী। তাঁর পাশে দরবার গোপালদাস দেশাই এবং তাঁর পাশে রয়েছেন শেঠ যমুনালাল বাজাজ।
১৯৪২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জার্মানির হামবার্গ শহরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন নেতাজি।
মহাত্মা গান্ধীর খুবই স্নেহধন্য ছিলেন সুভাষ। কিন্তু সুভাষের দর্শন এবং চিন্তার সঙ্গে গান্ধী যেমন পুরো সহমত ছিলেন না, তেমনি সুভাষও শুধুমাত্র গান্ধীর অহিংস মন্ত্রে স্বাধীনতা পাওয়ার স্বপ্নেও বিশ্বাস করতেন না। গান্ধী মনে করতেন সুভাষকে পুরোপুরি সমর্থন করা মানে অহিংস আন্দোলন হয়তো ধামাচাপা পড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্বে যে অবাঙালি নেতারা রয়েছেন তাঁদের অস্তিত্বও বিপন্ন হতে পারে। কিন্তু হরিপুরা কংগ্রেসে তোলা এই ছবি দেখে কে বুঝবে গান্ধী ও সুভাষের জীবন দর্শনে ফারাকটা ছিল বিশাল।
সালটা ১৯৩০। একজন প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার মতো সমস্ত গুণ নিয়ে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছেন সুভাষ। যুব কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি তখন ভারতের যুব সমাজের প্রতিনিধি। যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই তাঁকে ছেঁকে ধরছে যুবাদের দল। সুভাষের কথা শোনার জন্য এগিয়ে আসছেন একের পর বড় ব্যবসায়ী থেকে উঠতি শিল্পপতিরা। দেশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের উন্নয়নের রূপরেখা নিয়ে সুভাষের ভাবনাটা কী তা জানতে চান এঁরা। তেমনি এক অনুষ্ঠানের এই ছবি।
জার্মানি-র হামবার্গ এয়ারপোর্টে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। সঙ্গে আজাদ হিন্দ ফৌজের বিশ্বস্ত কিছু অনুচর।
দীর্ঘ পরিশ্রম এবং অনশন আন্দোলনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সুভাষ। এরই মধ্যে বসে কংগ্রেসের অধিবেশন। অশক্ত, অসুস্থ সুভাষ-কে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ।
১৯৪২-এ জার্মানিতে অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
১৯৪৩-এর ৫ থেকে ছয় নভেম্বর টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল গ্রেটার ইস্ট এশিয়া কনফারেন্স। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন স্বাধীন ভারতের দেশনায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। তিনি ছাড়াও ছিলেন জাপানের একনায়ক শাসক জেনারেল তোজো এবং ইস্ট এশিয়ার বিশিষ্ট দেশের বিশিষ্ট দেশনেতারা।
১৯৩০ সালে তৎকালীন বম্বে, আধুনা মুম্বই-এ রাস্তার ধারে বাঁশের এমনই মিনার বানানো হয়েছিল। যার উপরে চেপে সেদিন বক্তব্য রেখেছিলেন নেতাজি।
জেরুজালেমের ইসলাম নেতা হজ মহম্মদ আমিন আল হুসেইনি-র সঙ্গে নেতাজি। ১৯৪৩ সালে এই ছবিটি জার্মানিতে তোলা হয়।
১৯৪৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, টোকিও-তে গ্র্যান্ড আর্মি গঠনের অনুষ্ঠান। সেখানে সেনাদের উদ্দেশে অভিভাবদন নেতাজি এবং জেনারেল তোজোর।
ব্রিটিশের চোখে ধূলো দিয়ে দেশছাড়ার আগে অসমের বরদৌলি-তে গিয়েছিলেন সুভাষ। সেখানে কংগ্রেসের কিছু বিশষ্ট নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে নৈশভোজ সারছেন তিনি।
আন্দামানে ব্রিটিশ-দের তৈরি কাল-কুঠরি সেলুলার জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন সুভাষ। সেখানে তাঁর উপরে হওয়া অত্যাচারের চিহ্ন সারা শরীরে। কিন্তু তবু সুভাষের অনড় মানসিকতাকে ভেঙে ফেলতে পারেনি ব্রিটিশরা। কলকাতায় সুভাষের সঙ্গে দেখা করতে আসেন জওহরলাল। তাঁরই সঙ্গে আসেন জওহরলাল-এর বোন এবং তৎকালীন আরএক কংগ্রেসনেত্রী বিজয়ালক্ষ্মী পণ্ডিত। নেতাজির সঙ্গে জওহরলাল ও বিজয়ালক্ষ্মী-র সেই ছবি।
১৯৪১ সালের শুরুতে কলকাতায় এই ছবিটি তোলা হয়। এক কংগ্রেস কর্মীর সঙ্গে কথা বলছেন সুভাষ।