এক প্রিয়ঙ্কা এখন পারিবারিক ব্যাবসায়, আর এক প্রিয়াঙ্কা শ্রীঘরে, রিজওয়ানুরের মতো হাল হবে না তো জুনিয়ার হত্যার
ভালোবাসার বাহুডোরে বারবার বাঁধা পড়ে পুরুষ-নারী। এই অমোঘ আকর্ষণের টান এতটাই তীব্র হয় যে একেক সময় দুটি প্রাণের সত্ত্বার মিলন ছাড়া অন্যকিছু ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না। কী আশায় বাধি খেলাঘর, বেদনার এই বালুচরে- এককালে এই গানের কলি সমস্ত প্রেমিকদের মুখে মুখে ঘুরেফিরে বেড়াত। আসলে ভালোবাসা হল এমন এক ক্ষমতা যা সমস্ত অসম্ভবকেও সম্ভব করে তুলতে পারে। ভেঙে দিতে পারে সমস্ত বাধার বেড়়াজাল। এই ভালোবাসার বাহুডোরেই নিজেদের এক করেছিলেন রিজওয়ানুর রহমান এবং প্রিয়ঙ্কা টোডি। এই ভালোবাসাতেই একে অপরের ভরসারস্থল হয়ে পড়েছিলেন জুনিয়ার মৃধা ও প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী ওরফে মুনমুন চৌধুরী। রিজওয়ানুর আজ লায়লা-মজনুর প্রেমের মতো এক স্মৃতিকথায় পরিণত হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা এখন হাইপ্রোফাইল সিক্রেট লাইফে-র ঘেরাটোপে। জুনিয়ারের পরিণতিও রিজওয়ানুরের মতো। একটা বুলেট আজ থেকে ১০ বছর আগে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছিল তাঁর ভালোবাসাকে। আর জুনিয়ারের লেডিলাভ প্রিয়াঙ্কা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে এখন কারাবন্দি এক আসামী। কিন্তু, এই প্রিয়াঙ্কার পিছনেও রয়েছে তাঁর সেলিব্রিটি ফুটবলার তথা শিল্পপতি এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব বলরাম চৌধুরী। রিজওয়ানুরের প্রিয়ঙ্কার পিছনে যেমন ছিলেন অশোক টোডি, প্রদীপ টোডিরা। ঠিক তেমনই। বলতে গেলে দুই প্রিয়াঙ্কার কাহিনি-তে এক আশ্চর্য অন্তর্নিহিত সাদৃশ্য সামনে চলে আসে।
Asianet News Bangla | Published : Jan 7, 2021 7:28 AM IST / Updated: Jan 07 2021, 01:42 PM IST
জুনিয়ারের হত্যায় প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর নাম জড়াতেই সামনে এসেছিল অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অর্থ-তে বলশালী, হাইক্লাস সোসাইটি-তে প্রতিনিধিত্ব করা বলরাম চৌধুরীর পুত্রবধূ এমন সম্পর্কে জড়ালেন কী করে? এই প্রশ্নই সামনে আসছিল বারবার। সিআইডি তদন্তে উঠে এসেছিল, অর্থ আর বৈভবের জীবনেও ফাঁক ছিল প্রিয়াঙ্কার। স্বামীর সঙ্গে সুখের ছিল না সম্পর্ক। বিশাল সেলিব্রিটি ফুটবলার বাবা তথা শিল্পপতির ছেলে নাকি কখনও প্রিয়াঙ্কার কাছে আদর্শ স্বামী হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারেননি। উপরন্তু, প্রিয়াঙ্কার স্বাধীন-চিন্তা এবং উচ্চাকাঙ্খায় নাকি বাধা হয়ে উঠেছিল অনেকেই। এমন অভিযোগ, প্রিয়াঙ্কা নিজেই করেছিলেন। সন্দেহ নেই, এক সম্পর্কের ভুল থেকে বের হতে গিয়েই জুনিয়ারের মতো ঝকঝকে হ্যান্ডসাম এবং তরুণ আইটি ইঞ্জিনিয়ারকেই নিজের মনের সঙ্গী বানিয়ে নিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা।
২০১১ সালের ১২ জুলাই রাতে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়েতে খুন হয়েছিলেন বছর ২৪-এর তরুণ জুনিয়ার মৃধা। বেসরকারি সংস্থার কর্মী সমরেশ মৃধার ভারি পছন্দের ছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার জুনিয়ার। তাতেই অনুপ্রাণিত হয়ে ছেলের নাম রেখেছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন সাম্বার তালের ছন্দেই হয়তো জীবনে ডালা মেলবে বেলঘড়িয়ার জুনিয়ার। ডানা মেলেছিল জুনিয়ার। কিন্তু সেটা ছিল মৃত্যুর দেশের উদ্দেশে। মৃত্যুর সময় দুহাতটা মেলা ছিল জুনিয়ারের। যেন সে উড়ে যাচ্ছিল এক অজানার দেশে। ঘাড়ের কাছে ছোট্ট ক্ষতটা যদি নজরে না আসতো তাহলে হয়তো কেউ জানতেও পারত না তরুণ এই আইটি ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু পরোয়াণা লেখা ছিল একটা বুলেটে।
এমসিএ পাশ। সেইসঙ্গে এক আইটি সংস্থার ভালো মাইনের চাকরি। তরুণ জুনিয়ার মনের কোঠায় বেঁধে ফেলেছিল হাজারো স্বপ্ন। যেমন স্বপ্ন সকলেই দেখে থাকে। এক উজ্জ্বল এবং আনন্দের ভবিষ্যত। সুন্দর একটা পরিবার এবং অবশ্যই মনের মতো এক সঙ্গী। হাই-সোসাইটির গ্ল্যামারের বিচ্ছুরণ ছড়ানো প্রিয়াঙ্কা-র আবেদনও স্বাভাবিকভাবে প্রলুব্ধ করেছিল জুনিয়ারকে। তাই বন্ধুত্বের গভীরতায় প্রিয়াঙ্কা-র সঙ্গেই এই উজ্জ্বল স্বপ্নের সওয়ারি হয়েছিলেন জুনিয়ার। তারমধ্যে প্রিয়াঙ্কা তাঁর জীবনের আসল সত্য এবং বিবাহিত হওয়ার খবরটা চেপে যাওয়ায় জুনিয়ার আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন।
খুন হওয়ার রাতে অন্তত ১৪-বার প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কা অর্থাৎ মুনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন জুনিয়ার। অফিস থেকে ফিরেই মা-এর এক গ্লাস সরবরতে চমুক। আর কিছুই নাকি খেতে চাননি জুনিয়ার। মুনের সঙ্গে কথা আছে- মা-কে এই বলেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন বেলঘড়িয়ার দেশপ্রিয় নগরের বাসিন্দা জুনিয়ার। শ্বেতাদেবী জানিয়েছিলেন, জুনিয়ার যেন এক ঘোরের মধ্যে ছিল। আলেয়ারা যেমন করে ডাকে বলে কথিত রয়েছে, ঠিক তেমন কোনও ডাক শুনে যেন ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল জুনিয়ার।
জুনিয়ারের মৃত্যুর সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর নাম জড়াতেই কলকাতার পুলিশ মহল থেকে শুরু করে রাজ্য প্রশাসন সকলেই নড়েচড়ে বসেছিল। কারণ, প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী-তো আর যে সে ব্যক্তি-র পুত্রবধূ নন, তাঁর পিছনে শ্বশুর হিসাবে জ্বলজ্বল করছে বলরাম চৌধুরীর নাম। এককালে ময়দান কাঁপানো ফুটবলার তথা ক্লাব কর্তা এবং শিল্পপতি। প্রিয়াঙ্কার গ্রেফতারির খবর প্রকাশ পেতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন এক বিখ্যাত সাংবাদিক। তিনি তাঁর বিস্তারিত পোস্টে লিখেছেন কীভাবে প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর শ্বশুর তথা প্রাক্তন ফুটবলার এবং শিল্পপতি এক টেলিভিশন চ্যানেলের এডিটর থেকে শুরু করে তাঁকে খবর বন্ধ করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন।
জুনিয়ার-প্রিয়ঙ্কাকাণ্ডে-র কয়েক বছর আগেই ঘটেছিল রিজওয়ানু রহমান ও প্রিয়ঙ্কার টোডির কাহিনি। যেখানে এক উচ্চবর্ণ এবং বিশাল উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ী ঘরের তরুণী প্রিয়ঙ্কা টোডি বিয়ে করেছিলেন তাঁরই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের শিক্ষক তরুণ রিজওয়ানুর রহমান-কে। রিজওয়ানুরের পরিবার এই বিয়ে স্বীকৃতি দিলেও পরিস্কার না বলে দিয়েছিল প্রিয়ঙ্কার পরিবার। ক্ষমতাবলে লালবাজারের একগুচ্ছ পুলিশ অফিসার-কে দিয়ে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল প্রিয়ঙ্কার পরিবার। এমনকী লালবাজারের ডিসি ডিডি-র ঘরে ডেকে মুচলেকায় সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অর্থে বলীয়ানদের নিরন্তর চাপ এবং পুলিশের অমানুষিক চাপে ভেঙে পড়েছিলেন রিজওয়ানুর। শিয়ালদহ মেন শাখায় পাতিপুকুরে রেললাইনে মিলেছিল রিজওয়ানুরের ক্ষতবিক্ষত দেহ।
রিজওয়ানুরকাণ্ড শুধু একটা ঘটনার বা সাধারণ মানুষের আবেগের বিস্ফোরণ ছিল না, বলতে গেলে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের পটপরিবর্তনে একটা অনুঘটকও হয়ে গিয়েছিল। রিজওয়ানুকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক মাইলেজ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছেলে হারানো হাহাকারভরা মা-এর আর্তনাদের পাশে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর তীব্র বিরোধিতায় মুখ পুড়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন বাম সরকারের। খোদ পুলিশমন্ত্রী হিসাবে ভর্ৎসনার শিকার হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। পদ থেকে সরিয়ে দিতে হয়েছিল কলকাতা পুলিশের কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়, এবং দুই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিং ও অজয় কুমার। সাসপেন্ড করতে হয়েছিল ডিসি ডিডি থেকে শুরু করে কড়েয়া থানার কয়েক জন পুলিশ কর্তাকে।
রিজওয়ানুকাণ্ডে কে কোন ফায়দা তুলেছে- সেই কাহিনি আজ ক্লিসে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, যে মানুষটি ছিলেন রিজওয়ানুরের একান্ত সঙ্গী, সেই প্রিয়ঙ্কা টোডি যেন ভ্যানিস হয়ে গিয়েছিলেন সাধারণ জনজীবন থেকে। সিবিআই তাঁদের তদন্তে জানিয়েছিল আত্মহত্যাই করেছিলেন রিজওয়ানুর। তবে, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল সেই তদন্ত রিপোর্টে। এরপরে আর সেভাবে এগোয়নি রিজওয়ানুর মামলা। রিজওয়ানুরের মা একটা সময় আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ছেলের মৃত্যুর বিচারের। রিজওয়ানুরের দাদা রুকবানু হয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। এক কাকার বিরুদ্ধে অর্থ নিয়ে চাপ তৈরির অভিযোগও উঠেছিল। আর প্রিয়ঙ্কা সব ছেড়ে নাকি এখন মন দিয়েছেন পারিবারিক ব্যবসায়। কয়েক বছর আগে একটি টুইটার প্রোফাইলে প্রিয়ঙ্কা টোডির নামে একটি অ্যাকাউন্ট সমক্ষে আসে। তাতে লেখা ছিল লাক্স ইন্ডাস্ট্রির বিজ্ঞাপণ বিভাগের এক কর্ত্রী হিসাবে কাজ করছেন প্রিয়ঙ্কা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আবার অনেকে দাবি করেছিলেন ব্যবসা সামলানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার এখন ঠিকানা মুম্বই এবং লন্ডন। আর রিজওয়ানুর এক পালাবদলের চরিত্র থেকে আবেগের বিস্ফোরণ এবং ট্র্য়াজিক হিরো হয়েই বাঙালির মনে গেঁথে রয়ে গেলেন। মিলল না বিচারের রায়।
জুনিয়ার মৃধার হত্যাকাণ্ডের বিচার রিজওয়ানুরের মতো হবে না তো, এখন এমনই প্রশ্ন মৃধা পরিবারের। প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে তাঁদের যে অপরিসীম হেনস্থার সামনে পড়তে হয়েছিল তা বলতে গিয়ে একটা সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সমরেশ মৃধা। তাঁর হতাশার সেই কাহিনি গত কয়েক বছর ধরে বারবার তুলে ধরেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। সিআইডি অফিসারদের ধমকানি-চমকানি তো ছিল সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের হুমকি- তবু দমে যাননি জুনিয়ার মৃধার পরিবার।
প্রিয়ঙ্কা যে বিবাহিত তা ঘূণাক্ষরেও নাকি প্রকাশ পায়নি। জুনিয়ারের বাড়িতে একাধিকবার যাতায়াত করেছিল প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু, কোনওদিনই সে জানায়নি সে বিবাহিত। এমনকী, জুনিয়ারের সঙ্গে সম্পর্ক পাতানোর সময় নিজেকে উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া বলে দাবি করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। বাচ্চামো মাখানো সরল মুখের প্রিয়ঙ্কাকে দেখে জুনিয়ার ঠাহর করতে পারেননি আসলে তাঁর প্রেমিকা বয়সে শুধু বড়ই না এক প্রভাবশালী উচ্চবৃত্ত ঘরের পুত্রবধূ।
প্রিয়ঙ্কার আসল পরিচয় সামনে এনে দিয়েছিল এক রিয়্যালিটি শো। জুনিয়ার মৃধার মা ও বাবা সেই রিয়্যালিটি শো টিভি-তে দেখতে গিয়ে আবিষ্কার করেন যে তাঁদের হবু পুত্রবধূ মুন আসলে একজন বিবাহিত মহিলা। মৃধা পরিবারের দাবি, প্রেমিকা প্রিয়ঙ্কার আসল পরিচয় জানার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল জুনিয়ার। তবে, চেষ্টা করছিল সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার। অভিযোগ, সেই সময় প্রিয়ঙ্কা আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিল। যার ফলে জুনিয়ার সম্পর্ক থেকে বের হতে পারছিল না।
জুনিয়ার মৃধার সম্পর্কে জুড়েছে এক ত্রিকোণ প্রেমের অ্যাঙ্গল-ও। মৃধা পরিবারের দাবি, জুনিয়ারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার সময় প্রিয়ঙ্কা আরও একটি সম্পর্কে জড়ায়। এই দ্বিতীয় পুরুষটির নাম প্রতীক শর্মা। জুনিয়ারের বাবা-মা-এর অভিযোগ, প্রতীকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে প্রিয়ঙ্কা রাস্তা থেকে তাঁদের ছেলে-কে সরাতে চাইছিল।
প্রিয়ঙ্কা প্রতীকের হাত ধরে মডেলিং এবং অভিনয়ের কেরিয়ারের আরও উচ্চ শিখরে নাকি পৌঁছতে চাইছিল। আর তাঁর ও প্রতীকের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জুনিয়ার। সিবিআই জুনিয়ার হত্যার তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর প্রিয়ঙ্কা-কে একাধিকবার জেরা করে। কিন্তু, প্রতিটি জিজ্ঞাসাবাদ পর্বেই প্রিয়ঙ্কা পরস্পরবিরোধী বয়ান দিয়েছে। যার জেরেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রিয়ঙ্কাকে। বলতে গেলে, জুনিয়ার মৃধার হত্যার ৯ বছর এটাই প্রথম গ্রেফতারি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, জুনিয়ারের খুনের দিনে প্রতীক শর্মা ও প্রিয়ঙ্কার মধ্যে ২০০ বার ফোনে কথাা হয়েছিল। কল লিস্ট ঘেঁটে এমনই তথ্য মিলেছিল। প্রতীকের দাবি ছিল, প্রিয়ঙ্কার এক বন্ধু মারা গিয়েছে, এ খবর জানতে পেরে অনেকবার কথা হয়। কিন্তু তা বলে ২০০ বার। আজও এই কথোপকথনের রহস্য উদ্ধার হয়নি। একই দিনে জুনিয়ারের সঙ্গে ১৪ বার ফোনে কথা হয়েছিল প্রিয়ঙ্কার।
তবে, তদন্তে দাবি করা হয়েছে সুপারি কিলার দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল জুনিয়ারকে। সুপারি কিলার-কে জুনিয়ারের মৃত্যু পরোয়ণা দিল-কে? প্রিয়ঙ্কা না কি অন্য কেউ? বলরাম চৌধুরী যদি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত না থাকবেন তাহলে তিনি কেন বারবার প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন? জুনিয়ারহত্যাকাণ্ডে এখন বহু রহস্যের পর্দা ওঠার অপেক্ষা। সন্দেহ নেই আগামীদিনে বহু চাঞ্চল্যই তৈরি করতে পারে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত। তবু মৃধা পরিবারের মনে একটা কিন্তু, রিজওয়ানুরের মতো বিচার অধরাই থেকে যাবে না তো তাঁদের ছেলের হত্যাকাণ্ডে?