পরিচালনা থেকে সুরকার, গায়ক থেকে মহানায়ক, দেখুন ছবিতে ছবিতে স্মৃতির পাতায় উত্তম কুমার
২৪ জুলাই, ১৯৮০ সাল, বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক শোকস্তব্ধ দিন। এদিন টলি-পাড়া হারিয়েছে বাংলার রুপোলি পর্দার মহানায়ককে। মাঝে কেটে গেছে ৩৯টি বছর, তবুও অমলিন সেই স্মৃতি আজও বাঙালির চোখের কোণে জল এনে দেয়। বদলেছে প্রজন্ম, শিল্পজগতে এসেছে নব-জোয়ার, তবু আজও অধরা তিনি। তিনি উত্তম কুমার, যাঁর শুরুটা ফ্লপ মাস্টারের তকমা দিয়ে হলেও শেষটা হয়েছিল মহানায়ক খেতাবেই। কেবল অভিনয় নয়, পরিচালনা থেকে শুরু করে প্রযোজনা, সুরকার, প্রতিটি ভুমিকাতেই তিনি পারদর্শী, তাঁর মৃত্যুদিনে উল্টে দেখা সেই সাদা-কালোর স্মৃতিতে মোড়া বাংলা চলচ্চিত্র জগতের স্বর্ণযুগের দিনগুলি।
Jayita Chandra | Published : Jul 24, 2019 12:40 PM / Updated: Jul 24 2019, 04:21 PM IST
অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়, ১৯২৪ সালে আহিরীটোলায় মামার বাড়িতে জন্ম। কলেজ জীবনের শুরুতেই যিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন অভিনয় করার। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। হাতে তুলে নিয়েছিলেন প্রথম ছবির চিত্রনাট্য। সাল ১৯৪৮, মুক্তি পেয়েছিল তাঁর প্রথম অভিনীত ছবি 'দৃষ্টিদান'। 'সাড়ে চুয়াত্তর'-এ প্রথম জুটি বেঁধেছিলেন সুচিত্রা সেনের সঙ্গে। এই ছবি মুক্তির পরই ঘুচেছিল 'ফ্লপমাস্টার' নাম।
বাংলা চলচ্চিত্র জগতে মোট ২১১ টি ছবি তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছিলেন। যার মধ্যে তিন ছবিতে পরিচালনার কাজও তিনি করেছিলেন নিজেই। ছবির নাম 'কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী', 'বনপলাশির পদাবলী' ও 'শুধু একটি বছর'।
পরিচালনা, অভিনয়ের পর এবার পালা ছিল প্রযোজনার। সেখানেও পিছিয়ে থাকেননি তিনি। নটা ছবির প্রযোজক ছিলেন তিনি নিজেই। 'কাল তুমি আলেয়া' ছবির প্রতিটি গান তিনি নিজেই সুর করেছিলেন। মিউডিক ডিরেক্টর হিসেবে সুনামও অর্জন করেছিলেন ছিলেন। কারণ এই ছবির প্রতিটি গানই ছিল সুপার হিট।
বাংলাচলচ্চিত্র জগতে অভিনয়ের জন্য প্রথম জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছিলেন উত্তম কুমার। 'এন্টনি ফিরিঙ্গি', 'চিড়িয়াখানা' ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য ১৯৬৭ সাল-এ ভারত সরকার কর্তৃক এই পুরষ্কার পান তিনি। 'মহানায়ক' উপাধীর নতুন পালকও তাঁর মুকুটে এসেছিল। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে তিনিই ছিলেন প্রথম ব্যোমকেশ, ছবির নাম ছিল 'চিড়িয়াখানা'।
অভিনয়ের ব্যাপ্তির জন্য তিনি শুরু কয়েছিলেন 'সুহূদ সমাজ' নামে এক থিয়েটর দল, আহিরীটোলায়। সেখানে বহু নতুন মুখেরা সুযোগ পেয়েছিলেন মহানায়কের কাছে পৌঁছে যাওয়ার। এখানেই শেষ নয়, ভবানীপুর সাঁতার অ্যাসোসিয়েশনের চ্যাম্পিয়নও ছিলেন তিনি।
আশা পারেখকে সঙ্গে অভিনয় করা ছবি 'ঝংকার' মুক্তি পায়নি। তবে উত্তম কুমার অভিনয় করেছিলেন তিনটি হিন্দি ছবিতে। ছবিগুলির নাম হল 'ছোটি সি মুলাকাত', 'দেশ প্রেমী', 'মেরা করম মেরা ধরম'। ১৯৮০ সালে 'ওগো বধু সুন্দরী' ছবিতে অভিনয় করার সময়ই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। মুহুর্তের মধ্যে উত্তম কুমারকে বেলভিউতে ভর্তি করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ছবি মুক্তির আগেই ১৯৮০ সালে ২৪ জুলাই তাঁর দেহাবসান ঘটে।