'বিস্ট'-কে নিয়েই আসছেন ট্রাম্প, বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত এই গাড়ির ভিতর কী কী আছে
আর মাত্র কয়েকটাদিন। তারপরই ভারতে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সঙ্গেই ভারতে আসছে তাঁর বিশেষ সুরক্ষিত গাড়ি 'দ্য বিস্ট'। বারাক ওবামার ব্যবহৃত আগের ক্যাডিল্যাক ওয়ানের বদলে ২০১৮ সালে এই লিমোজিন গাড়িটি আনা হয়েছিল। 'দ্য বিস্ট'-এর সর্বশেষ এই মডেলটিতে বুলেট-প্রুফ উইন্ডো, পাংচার প্রতিরোধী টায়ার, স্যাটেলাইট ফোন, পাম্প-অ্যাকশন শটগান, টিয়ার গ্যাস লঞ্চার, আরএইচ-নেগেটিভ রক্তের ব্যাগ, অক্সিজেন সিলিন্ডার - কী নেই। মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট ভারতে পা রাখার আগেই জেনে নেওয়া যাক 'দ্য় বিস্ট' সম্পর্কে...
amartya lahiri | Published : Feb 19, 2020 10:48 AM IST / Updated: Feb 19 2020, 04:19 PM IST
'বিস্ট'-এর আত্মপ্রকাশ - মার্কিন প্রেসিডেন্টের বর্তমান গাড়িটি ব্যবহার করা শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ গাড়ি ব্যবহার করা প্রথম চালু হয়েছিল রাষ্ট্রপতি টি ১৯১০-এ। আর প্রেসিডেন্টের গাড়ি হিসাবে ক্যাডিলাক ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল আরও কয়েক দশক পরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হারবার্ট হুভার-এর সময়ে। ববর্তমান মডেলেরস আগের ক্যাডিলাকটি ব্যাহার শুরু হয়েছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে।
কতটা সুরক্ষিত দ্য বিস্ট? 'দ্য বিস্টে-এর সর্বশেষতম মডেলটি অত্যন্ত সুরক্ষিত। এর জানলা পাঁচটি স্তরের কাচ এবং পলিকার্বোনেট দিয়ে তৈরি। অবশ্যই বুলেটপ্রুফ, এবং এই জানলাগুলি কোন দিক দিয়ে খোলাও যায় না। গোয়া গাড়িতে একমাত্র ড্রাইভারের পাশের জানলাটিই খোলে, তাও তিন ইঞ্চি মাত্র। জানলার পাশাপাশি দরজাগুলিও বুলেট প্রুফ, বর্মে ব্যবহৃত ধাতুর পাত দিয়ে মোড়া আট ইঞ্চি পুরু এবং রাসায়নিক আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভিতর থেকে সম্পূর্ণরূপে সিল করা। একেকটি দরজার ওজন বোয়িং ৭৫৭ বিমানের দরজার সমান। গাড়ির ভিতরটি - ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, টাইটানিয়াম, সেরামিক দিয়ে তৈরি। নিচটি রিইনফোর্সড স্টিলের পাত দিয়ে তৈরি, যা গাড়িটিকে বোমা থেকে রক্ষা করে।
প্রতিরক্ষার কী কী সাজ-সরঞ্জাম রয়েছে? গাড়ির ভিতরে রাখা থাকে পাম্প-অ্যাকশন শটগান। সামনে রয়েছে টিয়ার গ্যাস গ্রেনেড লঞ্চার। গাড়ির পিছনে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাও রয়েছে। আর আছে স্মোক স্ক্রিন বা ধোঁয়ার পর্দা তৈরির যন্ত্র, যার মধ্য দিয়ে হামলাকারীদের ধোকা দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবে বিস্ট।
আর কী আছে এই গাড়িতে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জরুরি অবস্থার জন্য তাঁর আরএইচ-নেগেটিভ গ্রুপের বেশ কয়েক রক্তের ব্যাগ রাখা থাকে গাড়ির পিছন দিকে। প্রয়োজনে ব্লাড ট্রান্সফিউশন করা যেতে পারে। এছাড়া ক্যাডিল্যাকের একটি নিজস্ব প্যানিক বোতাম এবং গাড়ির পিছন দিকে অক্সিজেন সরবরাহের ব্য়বস্থাও রয়েছে। গাড়ির একেবারে সামনের অংশে রয়েছে নাইট ভিশন ক্যামেরা। অর্থাৎ প্রয়োজনে হেডলাইট নিবিয়ে ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্য দিয়ে যেতেও অসুবিধায় পড়বে না 'দ্য় বিস্ট'।
প্রেসিডেন্টের জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা? গাড়িটিতে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা একমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন, পিছনে একটি উপগ্রহ ফোন লাগানো ব্যক্তিগত আসন রয়েছে। সেই আসনেই প্রেসিডেন্টের জন্য একটি সরাসরি ফোন লাইন করা রয়েছে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পেন্টাগন-এর সঙ্গে কথা বলার জন্য। ড্রাইভার এবং যাত্রীদের আসন আলাদা করার জন্য একটি কাচের পার্টিশন রয়েছে, যা নিচে নামাবানো বা উপরে ওঠানোর সুইচ থাকে ট্রাম্পের হাতেই।
কে চালায় বিস্ট? বিস্ট গাড়িটি চালান মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস-এ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক এজেন্ট। চরম বিপজ্জনক অবস্থা গাড়ি চালানোর কিংবা ছদ্ম হামলার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রশিক্ষণ থাকে।