২৪ ঘণ্টায় পরপর ৩ জনের মৃত্য়ু, বিশ্বকর্মার বাহনকে তুষ্ট করতে 'হাতিবুড়ির' পুজো
হাতির আতঙ্ক অব্যাহত রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাতির হামলায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলা সহ তিন জনের। ক্ষতিগ্রস্ত জমির ফসল। গ্রামে ঢুকছে তাণ্ডব চালাচ্ছে হাতির দল।
Asianet News Bangla | Published : Jan 14, 2021 1:26 PM IST / Updated: Jan 14 2021, 06:57 PM IST
মকর সংক্রান্তিতেও হাতির আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের। দিনে দিনে বাড়ছে হাতির হামলা। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলা সহ তিন জনের। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা এলাকায় দলছাড়া একটি হাতি তাণ্ডব চালাচ্ছে এলাকায়।
মাঠের ফসলের ক্ষতি করার পর, গ্রামে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর ও গ্রামবাসীদের তাড়া করেছে দলছুট ওই হাতিটি। হাতির হামলা চন্দ্রকোনায় দুজন জখম হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত জমির ফসল, ঘরবাড়ি। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে হাতিটি পাশের আনন্দপুর থানার খড়িগেড়িয়া গ্রামে ঢুতে পড়ে। সেই সময় মাঠে কাজ করার সম. এক মহিলা হাতির হামলাতে মারা গিয়েছেন ৷
এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলের মেদিনীপুর সদর ব্লকের পলাশিয়াতে হাতিবুড়ির পুজো করছেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় গ্রামবাসীরা মনে করছেন বনদফতর ছাড়াও হাতির ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণ করতে হাতির দেবতার পুজো করা দরকার ৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এনায়েতপুর ,মণিদহ, পলাশিয়া সহ সদর ব্লকের শতাধিক জঙ্গল এলাকার গ্রামের বাসিন্দারা ভীড় করেছেন হাতি দেবতার মন্দিরে ৷
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর হাতি পুজোর ভিড় অনেকটাই বেশি। হাতির তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে এই উদ্য়োগ নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাতি একমাত্র জীবিত দেবতা৷ তাই তাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে হাতি নিজেও শান্তিতে থাকবে, থাকতে দেবে অপরকেও ৷ পুর্ব পুরুষদের সময় থেকে এখানে শ্রুতী অনুসারে এই এলাকার বাসিন্দারা তাই হাতির প্রতি শ্রদ্ধা ভরে পুজো দিচ্ছেন ৷ হাতি খুশি হলেই এলাকায় সুরক্ষিত থাকবে চাষবাস৷
হাতিবুড়ির পুজো দিয়ে এক যুবক বলেন, হাতিবুড়ি মাতা জাগ্রত দেবী ৷ জঙ্গল এলাকার বাসিন্দারা হাতির থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত৷ তাই নিজেদের ক্ষতি আটকাতেই এই পুজো দিচ্ছেন সকলে ৷ অনেকেই আবার পাঁঠা বলি সহ বড়সড় আয়োজন করে থাকেন ৷ দূরদূরান্ত থেকে সপরিবারের বিভিন্ন গাড়িতে করে হাজির হচ্ছেন হতিবুড়ি মন্দিরে পুজো দিতে ৷
মকর সংক্রান্তিতে প্রতিবছর জঙ্গলমহলে এই পুজো হলেও এবার যেন একটু বেশি ভীড়। কারণ হাতির উপদ্রবও বেশি৷ পুজো চলবে দুদিন ধরে ৷ গ্রামবাসীরা তাঁদের বিশ্বাস রেখে হাতিবুড়ির পুজো করলেও, হাত গুটিয়ে বসে নেই বনকর্তারা। বনদফতরের পক্ষ থেকে এলাকায় সতর্কতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে। মাইকিং করে সন্ধার আগেই গ্রামবাসীদের বাড়ি ফেরার বার্তা দিচ্ছেন বনকর্মীরা।