আমাদের পাকস্থলীতে রয়েছে কয়েক কোটি ব্যাকটিরিয়ার বাস। যার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু উপকারী ও অপকারী ব্যাকটেরিয়াও। পাকস্থলিতে বসবাসরত এই ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলোকে বলা হয় কমেনসাল অর্গানিজম। শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এগুলি। শিশুরা জন্মের সময় মায়ের থেকেই এই ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলো পেয়ে থাকে। ২০ শতকের শুরুর দিকে রাশিয়ার বিজ্ঞানী এলি মেচনিকফ অত্যন্ত দরিদ্র মানুষের সুস্থ থাকার বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্য তাঁদের জীবনযাত্রার মানের উপর গবেষণা করছিলেন। সেই থেকেই আধুনিক প্রোবায়োটিক নিয়ে চর্চার যাত্রা শুরু।
এই আনুবীক্ষণিক উপকারী ব্যাকটিরিয়াগুলি আমাদের হজমশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ফলে সুস্থ থাকে আমাদের শরীর। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা থাকে আমাদের পৌষ্টিকতন্ত্রেই। তবে অনিয়মিত জীবনযাপনের জন্য এই ব্যাকটিরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের হজমশক্তিও। তাই আমাদের প্রত্যেক দিন প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিৎ।
প্রোবায়োটিক খাদ্য কি কি-
প্রোবায়োটিক হল বিশেষ এক প্রকার ফাইবার, যা অন্ত্র বা কোলনের মধ্যের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি প্রদান করে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ইনসুলিনের সংবেদনশীলতার উন্নতি ঘটায় এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণও সাহায্য করে। এগুলো পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ওজন বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। একইসঙ্গে হরমোনের ভারসাম্যও বজায় রাখে। এবার জেনে নেওয়া যাক এই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারগুলি কি কি-
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারগুলি মধ্যে প্রথমেই আসে টকদই, ইডলি, পনির বা চিজ, সয়াবিনের দানা, মটরশুঁটি, আচার, দইয়ের ঘোল। এছাড়া কলার মধ্যের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। যে পাকা কলা সামান্য সবুজ রঙ থাকে তাতে প্রোবায়োটিক বেশী থাকে। এবং এটাকে দই কিংবা ওটসমিলের মতন হোল-গ্রেন ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালের সঙ্গে দিলে ফাইবারের পরিমাণ বেড়ে যায়। পাকা কলা সামান্য সবুজ রঙের হয় এবং প্রিবায়োটিক বেশি থাকে। এছাড়াও রয়েছে হোল ওটস, কাঁচা রসুন, কাঁচা পেঁয়াজ, ভুট্টা-বাজরা, বার্লি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমানে প্রিবায়োটিক থাকে যা স্বাস্থের পক্ষে বিশেষ পক্ষে বিশেষ উপযোগী।