দু'দিনের সফরে কলকাতায় এসে রাত কাটিয়েছে বেলুড়ে মঠে। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ তুলে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তো বটেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি নেটিজেনরাও। এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। স্বয়ং রামকৃষ্ণ-এর ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে টুইট করেছেন তিনি।
সংসদে নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। রীতিমতো তাণ্ডব চলে সর্বত্রই। আন্দোলন এখনও থামেনি, পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় এলে প্রধানমন্ত্রীকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হতে পারে, এমন আশঙ্কাও ছিল। বস্তুত, বিক্ষোভের আশঙ্কায় বদলে ফেলতে হয় তাঁর যাত্রাপথও।
কলকাতায় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি সেরে শনিবার রাতে বেলুড় মঠে চলে যান নরেন্দ্র মোদী। রাতে সেখানেই ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, রবিবার সকালে বেলুড়ে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নাগরিকত্ব ইস্যুতে বিরোধীদের জবাব দেন মোদী। বলেন, 'দেশের নাগরিকত্ব দিতে একরাতে নতুন কোনও আইন তৈরি করেনি সরকার। যেকোনও দেশ থেকে যেকোনও ধর্মের মানুষ, যিনি ভারতের উপর আস্থা রাখেন, ভারতের সংবিধান মানেন, তিনিই ভারতের নাগরিকত্ব নিতে পারেন। এই আইন নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়া নয়.নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। নাগরিকত্ব আইন পুরনো আইনেরই একটি সংশোধনীমাত্র।' প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, 'দেশভাগের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে পাকিস্তানে অত্যাচারের শিকার হয়েছেন সেখানকার সংখ্যালঘুরা। তাঁদের এদেশের নাগরিকত্ব দিতেই এই আইন আনা হয়েছে।'
কিন্তু বেলুড় মঠে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে হঠাৎ কেন নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ তুললেন প্রধানমন্ত্রী? এই প্রশ্ন তুলে মোদীর সমালোচনা সরব বিরোধীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও নেটিজেনরাও। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র-এর টুইট, 'ওরে নরেন এলি? আয় বাবা, আয় বাবা। তোর চৈতন্য হোক!'
উল্লেখ্য, বেলুড় মঠ বা রামকৃষ্ণ মিশনে রাজনৈতিক নেতাদের যোগাযোগ নতুন নয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে মিশনের অরাজনৈতিক ভাবমূর্তিই বজায় ছিল। এর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী বেলুড়ে মঠে রাতও কাটাননি।