গ্যাস লিকের ঘটনায় ক্ষমা চাইল এলজি পলিমার্স, ১৩ হাজার টন স্টাইরিন ফেরত যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ায়

  • বিশাখাপত্তনমের রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস লিক
  • এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার স্মৃতি
  • স্টাইরিন গ্যাস নিঃসরণ থেকেই বিশাখাপত্তনমে দুর্ঘটনা
  • সেই বিষাক্ত গ্যাস এবার ফেরত যাচ্ছে সংস্থার প্রধান দফতরে

Asianet News Bangla | Published : May 12, 2020 3:46 AM IST / Updated: May 12 2020, 09:17 AM IST

গত সপ্তাহে বিশাখাপত্তনমের এলজি পলিমার্স ইন্ডিয়ার রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস লিকের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে  ৩৬ বছর আগের ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতি। আরআর বেঙ্কটপুরমে এই গ্যাস দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিষাক্ত গ্যাস স্টাইরিন নির্গমণের ফলেই এই ভয়াবহ গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটে।  এবার রাসায়নিক কারখানাটিতে থাকা প্রায় ১৩ টন স্টাইরিন গ্যাসকে সংস্থার প্রধান দফতর দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে পাঠান হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। 

সিঙ্গাপুর থেকে সংস্থাটি বিশাখাপত্তনমের রাসায়নিক কারখানায় ২ ট্যাঙ্ক স্টাইরিন এনেছিল। কিন্তু সেই গ্যাসকেই এবার ফেরত পাঠাতে উদ্যোগ নিল অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। ইতিমধ্যে দেশের জাহাজ মন্ত্রকের সঙ্গেও এবিষয় যোগাযোগ করেছে রাজ্য সরকার।

বিশাখাপত্তনমের জেলাশাসক ভি ভিনয় চন্দ্র জানান, "ইতিমধ্যে ৮ হাজার টন স্টাইরিন গ্যাসকে সিওলের উদ্দেশ্যে জাহাজে করে পাঠান হয়েছে, বাকি ৫ হাজার টন গ্যাসও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ফেরত পাঠান হবে।"

১৯৬১ সালে ভাইজাগের কারখানাটি থেকে উৎপাদন শুরু করেছিল এলজি পলিমার্স ইন্ডাস্ট্রি। জানা যাচ্ছে,  মার্চে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই এই সংস্থা পুরোপুরি কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে গুদামবন্দি হয়ে পড়েছিল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক। মার্চ থেকে সেই রাসায়নিকে হাত দেওয়া হয়নি। নিজে থেকেই বিক্রিয়া শুরু করে সেটি। এই বিক্রিয়াতেই ট্যাঙ্কের ভেতর উৎপন্ন হয় প্রবল তাপ। সেখান থেকেই গ্যাস লিক শুরু হয়।

এদিকে গ্যাস দুর্ঘটনার প্রায় ২দিন পার করে বিষয়টিতে ক্ষমা চেয়েছ দক্ষিণ কোরিয়ার অভিযুক্ত সংস্থা এলজি পলিমার্স। গোটা ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে সংস্থাটি। সেখানে বলা হয়েছে, ঘটনার জন্য তারা দুঃখিত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানান হচ্ছে। বিবৃতিতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ঘটনার তদন্তে সবরকম সহযোগিতার কথাও তারা বলেছে। এমনকি ভবিষ্যকে যাতে এই ঘটনা আর না ঘটে সেবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে। কারখানাটি যে ইতিমধ্যে স্বাভাবিত অবস্থায় ফিরে এসেছে সেই দাবিও করছে এলজি পলিমার্স। 

অন্যদিকে  বিশাখাপত্তনমের রাসায়নিক কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিকের ঘটনায় এলজি পলিমার ইন্ডিয়া সংস্থার উপরেই গাফিলতির অভিযোগ তুলছে পুলিশ। প্রশাসনের দাবি, বন্ধ থাকাকালীন ট্যাঙ্কের রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। এরপর হঠাত্ কারখানা চালু করতেই তাই ছড়িয়েছে বিষাক্ত স্টাইরিন গ্যাস। আর তার ফলেই মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। অসুস্থ এলাকার ৫০০০ জনেরও বেশি। এদিকে কারখানা যাতে আর না খোলা হয় তার জন্য মৃতদের দেহ নিয়ে গেটের সামনে শনিবারই বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। যদিও পরিস্থিতি এখন পুরোটাই স্বাভাবিক বলে জানা যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সোমবার বিকেল থেকে নিজেদের বাড়িতে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। 

 

Share this article
click me!