এশিয়ানেট নিউজের খবরের জেরে বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে ভারতীয় সেনা। সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই পরিবারের দাবি মেনে শহিদ জওয়ানের মূর্তি বসানো হবে।
শহিদ জওয়ানের পরিবারও ছাড় পায়নি। জমিতে বাড়ির শহিদ ছেলের স্মৃতিসৌধ বানাতে চেয়েছিলেন তারা। সেই 'অন্যায়' দাবিকে মেনে নিতে পারেনি বিহার পুলিশ। জমি নিয়ে বিবাদের জেরে শহিদের বাবাকে টেনে হিঁচড়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই খবর প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল এশিয়ানেট নিউজের হাত ধরে। অবশেষে ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই মিলল ভালো খবর।
এশিয়ানেট নিউজের খবরের জেরে বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে ভারতীয় সেনা। সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই পরিবারের দাবি মেনে শহিদ জওয়ানের মূর্তি বসানো হবে। এই প্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনার একটি টিম মঙ্গলবার দেখা করে ওই জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে। কথা হয় দুপক্ষের। সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি সেনা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, আড়াই বছর আগে, বিহারের বৈশালী জেলার রাজ কাপুর সিং গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিজের চার ছেলের একজনকে হারিয়েছিলেন। তখন গোটা দেশ তাঁর সঙ্গে শোক পালন করেছিল, তার ব্যথায় ব্যথিত হয়েছিল। জান্দাহ ব্লকের চকফতেহ গ্রামে সরকারি জমিতে তাঁর শহিদ ছেলের নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে গিয়ে জেলের ঘানি টানতে হয় সেই অসহায় বাবাকে।
২০২০ সালের ১৫ই জুন গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে নিহত জয় কিশোর সিংয়ের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে বিহার পুলিশ শহিদ সেনার বাবাকে তার বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে যায় এবং তাকে গালাগালি দেয়। তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে যে তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের অধীনে জান্দাহা থানায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগকারী, হরিনাথ রাম এবং রাজকাপুর সিংয়ের মধ্যে দুই বছর ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এশিয়ানেট নিউজ এই মর্মান্তিক ঘটনার গভীরে গিয়ে তুলে ধরে একটি বিশেষ রিপোর্ট।
গ্রামবাসীরা সরকারি জমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাতে হরিনাথ আপত্তি জানান। একটি পঞ্চায়েত ডাকা হয়েছিল যেখানে জান্দাহ ব্লকের সার্কেল অফিসার, যিনি জমির রেকর্ড দেখাশোনা করেন, শুধুমাত্র উল্লিখিত জমিতে স্মৃতিসৌধ তৈরি করতে সম্মত হন। রাজকাপুর আশেপাশে জমি কিনবেন এবং হরিনাথকে দেবেন এবং পরবর্তীতে তার মালিকানাধীন সেই জমিটি খালি করতে হবে এরকম ঠিক হয়। এর পরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়, কিন্তু কাঠামোটি প্রায় শেষ হওয়ার সাথে সাথে হরিনাথ আবার আপত্তি করতে শুরু করেন এবং এক মাস আগে রাজকাপুরের বিরুদ্ধে এসসি/এসটি আইনে মামলা দায়ের করেন।
প্রয়াত জওয়ানের বড় ভাই নন্দকিশোর সিং, যিনি নিজেও ভারতীয় সেনায় রয়েছেন, এশিয়ানেট নিউজকে বলেছেন: "এফআইআর সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা ছিল না। একদিন, ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ আমাদের বাড়িতে এসে মূর্তিটি সরাতে বলেন। আমরা আইন মান্যকারী নাগরিক, কিন্তু পুলিশ স্টেশনের হাউস অফিসার যেভাবে আমার বাবাকে টেনে এনে জনসম্মুখে গালিগালাজ করেছেন তা আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। আমরা সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছি এবং বাড়িতে পুলিশ আমার বয়স্ক বাবাকে হয়রানি করছে। " তবে বিহার পুলিশের পক্ষ থেকে সেভাবে কোনও বিবৃত্ না এলেও, ভারতীয় সেনা সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। এতে খুশি পরিবার।