মানসিক ভারসাম্যহীন এক বৃদ্ধ। বছর দুই আগেই তাঁকে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এনআরসি-র চুড়ান্ত তালিকাতেও তাঁর নাম ওঠেনি। সম্প্রতি ৬৫বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আর তারপরই তাঁর দেহ নিয়ে মহা ফাঁপরে পড়েছে অসম প্রশাসন। কারণ, তাঁর পরিবার দুলাল পাল নামে ওই বৃদ্ধের দেহ নিতে অস্বীকার করেছে। তাঁদের দাবি বিদেশি ট্য়াগ না তুললে তাঁর দেহ বাংলাদেশেই পাঠাতে হবে।
অসমের সোনিতপুর জেলার ঢেকাইজুলি তানার আলিসিঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন দুলাল পাল। তবে ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর থেকে তাঁকে তেজপুরের বন্দি শিবিরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁকে গুয়াহাটির এর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১২ অক্টোবর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর দেহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে গেলে পরিবার তাঁর দেহ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। তাঁর ছেলে অশোক পাল জানিয়েছেন, কোনও 'বাংলাদেশি'র দেহ তাঁরা নেবেন না। তিনি সরকারের কাছে আবেদন করেছেন, তাঁর বাবাকে ভারতীয় বলে ঘোষণা করা হোক। তারপরেই তিনি বাবার অন্তিম কাজ করবেন।
গত ৩১ অগাস্ট অসমের নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। সেখানে দুলাল পালের পরিবরের বাকি সদস্যদের নাম উঠলেও, তাঁর নামটিই ছিল না। অসোক পাল জানিয়েছেন, ১৯৬৫ সাল থেকে ভারতে বাস করার নথিপত্র জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। তারপরেও তাঁর বাবার গা থেকে বিদেশি ছাপ তোলা যায়নি।
ফলে দুলাল পালের দেহ নিয়ে আপাতত মহাসমস্যায় প্রশাসন। সোনিতপুর জেলার অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার কুলেন শর্মা জানিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ে ম্য়াজিস্ট্রেট স্তরের তদন্ত করা হবে। গত তিন বছরে বন্দি শিবিরে থাকা মোট ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই বন্দি শিবিরে তিনি কী অবস্থায় ছিলেন তাও খতিয়ে দেখা হবে।