আপনার সন্তান কি মোবাইল গেমস বা ল্যাপটপে আসক্ত? এই সমস্যা আপনার একার নয়, প্রতিটি পরিবারের। লকডাউনের সময়ে বাইরে বেরোনো বন্ধ। ফলে ঘরে বসে সময় কাটাতে অনলাইন গেমসের জুড়ি নেই। এই অনলাইন গেমস শেষ করে দিচ্ছে গোটা যুব প্রজন্মকে, এমনই অভিযোগ নিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি ছিল বন্ধ করে দেওয়া হোক যাবতীয় অনলাইন গেমস। এতে শিশুদের পড়াশোনার যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই ক্ষতি হচ্ছে তাদের স্বাস্থ্যের। এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ মাদ্রাজ হাইকোর্টের।
তবে এই মামলায় উদ্যোগ নিতে চায়নি মাদ্রাজ হাইকোর্ট। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ অনলাইন গেমস অবশ্যই ক্ষতিকর। কিন্তু সব ধরণের অনলাইন ও অফলাইন গেমস বন্ধ করা যাবে না। এজন্য উদ্যোগী হতে হবে সরকারকে। মাদ্রাজ হাইকোর্ট জানিয়েছে, যদি সরকার চায় এই ধরণের গেমস বন্ধ করতে, তবেই তা বন্ধ করা সম্ভব।
মাদ্রাজ হাইকোর্টের ফার্স্ট বেঞ্চ জানিয়েছে যেভাবে শিশু ও যুব প্রজন্ম মোবাইল গেমসে আসক্ত, তা চিন্তা বাড়াচ্ছে। ল্যাপটপ ও মোবাইলেও আবদ্ধ তাদের জীবন। এই বিষয়টিকে মোটেও অবহেলা করা যায় না। ফলে সরকারকে এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি সেন্থিল কুমার রামামূর্তির বেঞ্চ এদিন বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এদিন আদালত আরও জানিয়েছে যে হাইকোর্ট কেবল তখনই হস্তক্ষেপ করবে যখন সেখানে কিছু অবৈধ কাজ চলছে, বা যদি এমন কিছু আছে যা বৃহত্তর জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকারক। আদালত জানায়, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের কাছে বিষয়টি নিয়ে যেতে হবে। এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কেন্দ্র জানায়, অনলাইন গেমিং এবং ফ্যান্টাসি স্পোর্টসের বিজ্ঞাপন যাতে বিভ্রান্তিকর না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত ব্রডকাস্টারকে একটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারী টিভি চ্যানেলগুলিকে বলা হয়েছে বাড়তি আয়ের সুযোগ বা বিকল্প কর্মসংস্থান হিসাবে এই ধরণের বিজ্ঞাপনগুলি প্রদর্শন বন্ধ করতে।
সেইসঙ্গে এখন থেকে অনলাইন গেমস এবং ফ্যান্টাসি স্পোর্টসগুলি প্রিন্ট অ্যাড অর্থাৎ মুদ্রিত বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে 'এই গেমগুলি খেললে আর্থিক ঝুঁকি থাকতে পারে এবং আসক্তির কারণ হতে পারে' এই সতর্কতা স্বীকার করতে হবে। আর সেই সতর্কতা দিতে হয় দিচ্ছি বলে খুব ছোট করে একপাশে দিলেও চলবে না। মুদ্রিত বিজ্ঞাপনটির আকারের অন্তত ২০ শতাংশ দখল করে এমন বড় করে ছাপতে হবে সেই সতর্কবার্তা।