সোশ্যাল মিডিয়ায় হাতছানি, কখনও বা পেশার চাপ। এত সব কিছুর মধ্যে কোথাও যেন হারিয়ে শিকড়হীন হয়ে পড়ছে বাঙালি। এমন ধরনের ভাবনা মাঝে মাঝেই এসে যায় সৃজনশীল বাঙালির মাথায়। তবে কর্মব্যস্ত জীবনে যতই দৌঁড়ঝাপ লেগে থাকুক না কেন, কোথাও না কোথাও বাঙালির শিকড় আটকে রয়েছে কবিগুরুর লেখনীর সঙ্গেই। দেশে বিদেশে সকল বাঙালির প্রত্যেকটি মুহূর্তের সঙ্গে তাঁর লেখা যেন জুড়ে রয়েছে। আমাদের প্রতিটি মুহূর্তের কথা উপলদ্ধি করে কবিগুরু রেখে গেছেন তাঁর লেখনীর সমগ্র। তাই কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসে তাঁকে স্মরণ করতে, ১১ অগাস্ট রবিবার ব্যাঙ্গালোর 'আনন্দ সমাগমে'-র পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত করা হয় রবীন্দ্রস্মরণ অনুষ্ঠান।
রবীন্দ্রস্মরণ উপাসনার এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছিল বৃক্ষরোপণ উৎসবও। 'আনন্দ সমাগমে'র কর্ণধার শ্রী রবীন মজুমদারের উদ্যোগে কলাক্ষেত্রের উদ্যানে এই বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠিত হয়। বেঙ্গালুরুর রবীন্দ্র কলাক্ষেত্রের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই রবীন্দ্রস্মরণ উপাসনা ও বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠান।
মন্ত্রপাঠ, ভাষণ ও কবিগুরুর গান দিয়ে শুরু করা হয়েছিল প্রভাতী অনুষ্ঠান। সংগীত পরিবেশন করেন মনীষা চট্টোপাধ্যায়, শমিতা মুখোপাধ্যায়ের মতো অভিজ্ঞ শিল্পীরা। এই রবীন্দ্রস্মরণ অনুষ্ঠানে আচার্য রূপে উপস্থিত ছিলেন কবিগুরুর প্রদৌহিত্র, বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক ডক্টর সুনন্দন লালা মহাশয়।
প্রয়াণের অর্থ সব কিছু শেষ নয়, নতুনের আরম্ভ, -এই কথা মাথায় রেখেই 'আনন্দ সমাগমে'-র পক্ষ থেকে শান্তিনিকেতনের ধাঁচে বাইশে শ্রাবণের দিনে অনুষ্ঠিত করা হয়েছিল বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠান। কর্ণাটক রাজ্য সরকার তথা রবীন্দ্রকলাক্ষেত্রে একটি সপ্তপর্ণী, ছাতিম গাছ প্রদান ও রোপণ করা হয়।
এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি চলতে থাকে কবি স্মরণ উপাসনা। রবীন্দ্রনাথের সেজদা হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের উত্তরসূরি রনিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। শান্তিনিকেতন সংগীতভবনের গবেষক প্রত্যয় পাঠক-এর সঙ্গীত পরিচালনায় পরিবেশিত হয় মোট ১৬টি গান।
মন্ত্রপাঠে ছিলেন অভিষেক চৌধুরী। নৃত্যে ছিলেন মাধুরী ও অর্ণব। বাইশে শ্রাবণের দিনে ব্যাঙ্গালোরের বুকে এমন এক কবি স্মরণ অনুষ্ঠানে উচ্ছাসিত শহরের প্রতিটি বাঙালি।