কর্ণাটকের (Karnataka) বেঙ্গালুরু (Bengaluru) থেকে এক অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গত ১৫ বছর ধরে সে হিন্দুর বেশে ভারতে বসবাস করছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তার বর্তমান বয়স ২৭ বছর। আদতে বাংলাদেশী (Bangladeshi) হলেও, শেষ ১৫ বছরই সে কাটিয়েছে ভারতে, হিন্দুর (Hindu) বেশে। অবশেষে, শুক্রবার কর্ণাটকের (Karnataka) বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) উপকণ্ঠে এক এলাকা থেকে পুলিশ, গ্রেফতার করল রনি বেগম-কে। কলকাতার (Kolkata) ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (Foreigners Regional Registration Office) বা এফআরআরও থেকে পাওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে, গত তিন মাস ধরে তাকে খুঁজছিল পুলিশ। নাম পরিবর্তন করে সে হয়েছিল পায়েল ঘোষ। নিতিন কুমার নামে ম্যাঙ্গালুরুর (Mangaluru) এক ডেলিভারি এক্সিকিউটিভের সঙ্গে তার বিয়েও হয়েছিল। সেই নিতিন আপাতত পলাতক, তাকে খুঁজছে পুলিশ।
বেঙ্গালুরু পুলিশ (Bengaluru) জানিয়েছে, মাত্র ১২ বছর বয়সেই, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত টপকে ভারতে চলে এসেছিল রনি বেগম। পরে সে মুম্বাইয়ে (Mumbai) চলে আসে। সেখানকার এক ডান্স বারে নৃত্যশিল্পী হিসাবে কাজ নিয়েছিল। তখন, নিজেকে সে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি বলে দাবি করেছিল এবং নাম বলেছিল পায়েল ঘোষ। মুম্বইয়েই তাঁর সঙ্গে প্রেম হয়েছিল নিতিনের। ২০১৯ সালে তারা বিয়ের করে চলে আসে বেঙ্গালুরুতে। সংসার পাতে অঞ্জনানগরে। পায়েল ঘোষ ওরফে রনি বেগম দর্জির কাজ করা শুরু করে। মুম্বাইয়ে থাকাকালীনই নিতিন, 'পায়েল ঘোষ'এর প্যান কার্ড তৈরি করে এনেছিল। বেঙ্গালুরুতে আসার পর তারই এক বন্ধু একটি আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডও করে দিয়েছিল। ফলে, কোথাও কোনও সন্দেহের অবকাশ ছিল না।
গন্ডোগোলটা ঘটল, রনির বাবার মৃত্যু হওয়ায়। বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বাংলাদেশে যাওয়ার টান সে সামলাতে পারেনি। পরিকল্পনা করেছিল বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতা হয়ে ঢাকা (Dhaka) যাওয়ার। কিন্তু, তার পাসপোর্ট দেখে সন্দেহ হওয়ায় সেটি বাজেয়াপ্ত করেন ইমিগ্রেশন অফিসাররা। তার বাংলাদেশে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয় এবং এই বিষয়ে শুরু হয় তদন্ত। তদন্তে জানা যায়, সে একজন অবৈধ অভিবাসী।
ততদিনে অবশ্য রনি বেঙ্গালুরুতে ফিরে গিয়েছে। ফলে কলকাতার এফআরআরও যোগাযোগ করে বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে। তাকে রনি বেগম ওরফে পায়েল ঘোষের সম্পর্কে জানানো হয়। এরপরই, এই ব্যাপারে ব্যাদারহাল্লী থানায় (Byadarahalli Police Station) একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পুলিশের বেঙ্গালুরু পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, কারা তাকে প্যান কার্ড, আধার কার্ড ভোটার কার্ড করে দিয়েছিল, তাদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত চলছে। মুম্বই, কলকাতা এবং দেশের অন্যান্য জায়গাতেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।