কাশ্মীরের মতো প্রাণের ভয় নেই, তবে মাতৃভাষায় কথা বললেই বিপদ। রাতারাতি চাকরি চলে যেতে পারে! রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন বেঙ্গালুরুতে কর্মরত এ রাজ্যের শ্রমিকরা। তাঁদের দাবি, বেঙ্গালুরু শহরের অভিজাত আবাসনগুলিতে বাংলার মানুষজনকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে। এবং যাঁরা আবাসনে চাকরি করছেন, তাঁদের কাজ থেকে বরখাস্ত করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, নতুন করে কোনও বাঙালিকেই নাকি চাকরিতে নেওয়া হচ্ছে। এমনই অঘোষিত নিয়ম নাকি জারি হয়েছে কর্ণাটকের রাজধানীতে।
বাংলা থেকে শ্রমিকরা যে শুধু কাশ্মীরেই কাজ করতে যান, এমনটা কিন্তু নয়। কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে এ রাজ্য থেকে কাজ যাওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু কাজ পাওয়া তো দুর, উল্টে বাংলায় কথা বললেই নাকি কাজ খোয়াচ্ছেন এ রাজ্যের শ্রমিকরা। দক্ষিণ ভারতের অন্য়তম নামী সংবাদপত্র ডেকার হেরাল্ডের দাবি, পানাথুর, সারজাপুর, করমঙ্গলার মতো বেঙ্গালুরু শহরের অভিজাত এলাকার বাঙালি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কার্যত অঘোষিত সমন জারি হয়েছে। ওই এলাকার আবাসনগুলিতে বাঙালি শ্রমিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। শুধু তাই নয়, এলাকায় রীতিমতো নজরদারি চালাচ্ছে বেঙ্গালুরু পুলিশও। যখন তখন পুলিশি টহলদারিতে বিপাকে পড়েছে বেঙ্গালুরুতে কর্মরত বাঙালি শ্রমিকরা।
জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু শহরে কুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার বাঙালি শ্রমিক কাজ করেন। বেশিরভাগই শহরের বিভিন্ন আবাসনে হয় রান্নার লোক কিংবা রান্নার লোক হিসেবে কাজ করেন। অনেকে আবার গাড়ির চালান। অভিযোগ, গত কয়েক দিনে সকলকেই বাংলাদেশি তকমা দিয়ে কাজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর আবার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ৬০ বাংলাদেশিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলেও জানা গিয়েছে। আর তারপর থেকেই বাঙালি দেখলেই বাংলাদেশি সন্দেহে বিদায় করে দিচ্ছেন বেঙ্গালুরু বিভিন্ন আবাসনের কর্তারা। কিন্তু কেন? সদুত্তর নেই।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে কলকাতার মেট্রো স্টেশনে অবাঙালি এক আরপিএফ জওয়ানকে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়। তাঁকে ঘিরে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখান বাংলা পক্ষ নামে একটি সংগঠন। তার পাল্টা হিসেবে ভিনরাজ্যে কর্মরত বাঙালিরাও সমস্যা পড়তে পারেন, এমন আশঙ্কা কিন্তু করেছিলেন অনেকেই