আদি শঙ্করের (Adi Shankaracharya) জন্মস্থান, কালাদিতে (Kaladi) যাচ্ছেন বিজেপি (BJP) নেতা তরুণ বিজয় (Tarun Vijay)। তিনি বলেছেন আদি শঙ্করই ভারতবর্ষকে চার দিক থেকে ধর্মীয় ঢালে সুরক্ষিত করেছিলেন।
শুক্রবার অষ্টম শতাব্দীর ভারতীয় দার্শনিক আদি শঙ্করের (Adi Shankaracharya) জন্মস্থান, কালাদিতে (Kaladi) যাচ্ছেন বিজেপি (BJP) নেতা তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তরুণ বিজয় (Tarun Vijay)। এদিন টুইট করে এই কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, আদি শঙ্কর ভারতীয় জাতির আত্মাকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন এবং ভারতবর্ষকে চার দিক থেকে ধর্মীয় ঢালে সুরক্ষিত করেছিলেন।
কেরলের (Kerala) কোচিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অনতিদূরে, কেরলের এর্নাকুলাম জেলার মালায়াতুরের কাছে, পেরিয়ার নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত কালাদি শহর। এখানেই আদি শঙ্করের জন্ম হয়েছিল বলে কথিত রয়েছে। আদি শঙ্করাচার্য চারটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই মঠগুলি থেকেই অদ্বৈত বেদান্ত ( Advaita Vedanta) দর্শনের বিকাশ, পুনরুজ্জীবন ও প্রচার ঘটেছিল। শোনা যায়, আদি শঙ্করাচার্য তাঁর দর্শন প্রচারের জন্য গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে ভ্রমণ করেছিলেন। গোঁড়া বৈদিক ধর্ম এবং বৌদ্ধধর্ম সহ ভিন্নধর্মী অ-বৈদিক ধর্মের চিন্তাবিদদের বিতর্কে পরাজিত করে তিনি নিজের ধর্ম দর্শন প্রচার করতেন।
শঙ্করচার্যের অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের সঙ্গে অনেকেই মহাযান বৌদ্ধধর্মের ( Mahayana Buddhism) মিল পান। অনেক বৈষ্ণব (Vaishnavist) দার্শনিক তো আদি শঙ্করকে ছদ্ম-বৌদ্ধ হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। তবে, অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের অনুসারীরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। আদি শঙ্কর নিজেই বলেছিলেন হিন্দুধর্ম দর্শন বলে আত্মার অস্তিত্বের কথা। অন্যদিকে বৌদ্ধধর্মে জোর দেওয়া হয়েছে আত্মার অনস্তিত্বের উপর। অদ্বৈত বেদান্তের ঐতিহ্যে শঙ্করের অতুলনীয় মর্যাদা রয়েছে। আধুনিক ভারতীয় চিন্তাধারার মূল স্রোত তাঁর মতবাদ থেকেই উদ্ভূত।
ভাষ্য, মূল দার্শনিক ব্যাখ্যা এবং স্তোত্র মিলিয়ে তাঁর লেখা বলে দাবি করে ৩০০-রও বেশি গ্রন্থ রয়েছে। তবে এগুলির অধিকাংশরই প্রামাণিক লেখক আদি শঙ্কর নন। অনুমান করা হয়, সম্ভবত তাঁর ভক্তদের বা অন্য পণ্ডিতদের লেখা, যাদের নামও ছিল শঙ্করাচার্য। তাঁর রচনা বলে প্রমাণিত গ্রন্থগুলি হল - ব্রহ্মসূত্রভাষ্য, দশ প্রধান উপনিষদের উপর তার ভাষ্য, ভগবদ গীতার উপর তার ভাষ্য, এবং উপদেশসহস্রি। বিবেকাচুড়ামণি গ্রন্থের লেখক শঙ্কর কিনা তাই নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
১৯৮৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বা আরএসএস-এর সাপ্তাহিক হিন্দি পত্রিকা 'পাঞ্চজন্য'-এর (Panchajanya) সম্পাদক ছিলেন তরুণ বিজয়। তারপর রাজ্যসভার সাংসদও হয়েছিলেন। সেই সময় ভারত-চিন বন্ধুত্ব সম্পর্কিত সংসদীয় গোষ্ঠীর সভাপতি ছিলেন তিনি। এছাড়া, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এবং বিদেশ বিষয়ক সংসদীয় উপদেষ্টা কমিটির সদস্যও ছিলে তরুণ বিজয়। সেইসঙ্গে বোর্ড অফ গভর্নর্স, বিশ্বব্যাংক বিষয়ক সংসদীয় নেটওয়ার্কেরও সদস্য ছিলেন।