দেশের প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের বিপদে এসেছেন পর্যালোচনায়
তাঁর ডাকা বৈঠকে থাকলেনই না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী
এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কঠোর সমালোচনা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখে
তৃণমূল তাঁদের 'বহিরাগত' তকমা দিলেও বাংলার জন্য উদ্বিগ্ন তাঁরা
২০০-র বেশি আসন জয়ের আওয়াজ তুলে বাংলা বিধধানসভা নির্বাচনে জয় এসেছে মাত্র ৭৭টি আসনে। সরকার গড়তে পারেনি বিজেপি। তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, বাংলা যে এখনও তাঁদের মনে এবং ২১৩ আসন জেতার পরও মমতা'কে স্বস্তিতে থাকতে দেবেন না তাঁরা, শুক্রবারই তার প্রমাণ মিলল। এদিন প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ঘূর্ণিঝড় যশ-এর পর্যালোচনা বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কঠোর সমালোচনা করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা, যাদের ভোটের সময় তৃণমূল কংগ্রেস দেগে দিয়েছিল 'বহিরাগত' বলে।
ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে ওড়িশার পাশাপাশি দারুণ ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গও। এই নিয়েই এদিন কলাইকোন্ডা-তে পর্য়ালোচনা বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর এবং বিরোদী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত থাকলেও, ছিলেন না মমতা। সূত্রের খবর, অনেকটাই দেরী করে এসে, এক মিনিটের জন্য বৈঠক কক্ষে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব ধরিযে দিয়ে মুখ্যসচিবকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এরপরই দিলীপ ঘোষ থেকে শুভেন্দু অধিকারী - রাজ্যের বিজেপি নেতারা মমতার সমালোচনা করেছিলেন। টুইট করে নিন্দা করেন রাজ্যপালও।
তবে, শুধু তাঁরাই নন, মমতার এই অনুপস্থিতিকে তাঁর অহঙ্কার হিসাবে বর্ণনা করে কঠোর সমালোচনা করেছেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও। একইরকম সমালোচনার সূর শোনা গিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তও।
বাংলায় টুইট করে জেপি নাড্ডা অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি সাংবিধানিক নীতি এবং সমবায় মৈত্রীতন্ত্রের হত্যার স্বরূপ। আরও একটি টুইট পোস্টে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনগণকে ত্রাণ দেওয়ার জন্য সমবায় মৈত্রীতন্ত্রের নীতিকে সম্মান জানিয়ে, দলমত নির্বিশেষে সকল মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে চাইছেন, কিন্তু, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষুদ্র রাজনীতির জন্য বাংলার মানুষ তার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে মনিয়ে করিয়ে দিতে চেয়েছেন, যে মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী কোনও ব্যক্তি নন, জনসেবার একেকটি পদ মাত্র। দুই পদে আসীনরাই জনসেবা এবং সংবিধানের প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করেন।
আর দিল্লি থেকে এসে তারকেশ্বরে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে পরাজিত হওয়া স্বপন দাশগুপ্তের অভিযোগ, মমতা কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের পরিবেশ তৈরি করছেন। এতে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, যিনি বিজেপির বিরোধী হয়েও এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তাঁর সঙ্গে তুলনা করে মমতার মতো বিরোধী নেতাকে মোদীর বিকল্প হিসাবে ভাবছে কি বিরোধী দলগুলি - এই প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন তিনি।