অসমের দুই জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছিল। রাতে নেমেছিল সেনা। কিন্তু কোনভাবেই আটকানো গেল না অসমের নাগরিকত্ব বিল বিরোধী আন্দোলনকারীদের। বুধবারের মতোই বৃহস্পতিবারও রাস্তার দখল নিলেন প্রতিবাদীরা। গুয়াহাটি, ডিব্রুগড়ের আন্দোলন ছড়ালো কামরূপেও। সেখানে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হল আহত এক বিক্ষোভকারীর।
এদিন দুপুরে কামরূপে বিক্ষোভ সামলাতে না পেরে পুলিশ আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে। গুলিবিদ্ধ হন বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী। তাঁদের গুরুতর আহত অবস্থায় আনা হয়েছিল গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার সুপার রমেন তালুকদার জানিয়েছেন, মোট পাঁচজন বিক্ষোভকারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁদেরই একজনের বিকেলে মৃত্যু ঘটেছে। ফলে অসমের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
আরও দেখুন - দিনভর সংঘর্ষ, হামলা রেলস্টেশন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে, অগ্নিগর্ভ অসম
আরও পড়ুন - প্রতিবাদে ছাড়লেন চাকরি, নাগরিকত্ব বিলে 'ভয় দেখানো'র অভিযোগ বিশিষ্ট আইপিএস-এর
এদিন সকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী ও অসম রাইফেলস-এর পক্ষ থেকে একটি শান্তি পদযাত্রা বের করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী সরবানন্দ সোনওয়াল-ও রাজ্যবাসীকে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আহ্বান করেছিলেন। এছাড়া গুয়াহাটি-তে শান্তি রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে এদিন সরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ কমিশনার দীপক কুমার-কে। তাঁর বদলে নতুন পুলিশ কমমিশনার হয়েছেন মুন্না প্রসাদ গুপ্ত। কিন্তু এইসব পদক্ষেপে কোনও কাজ হয়নি।
আরও পড়ুন - একনজরে জেনে নিন 'নাগরিকত্ব বিল'-এর কি, কেন, কোথায়, কবে
মানুষের ক্ষোভের নিশানা হয়েছেন বিজেপি নেতা ও প্রশাসনিক কর্তারা। এমনকী এদিন গুয়াহাটির জিএস রোডে অসমের পুলিশ প্রধান ভাস্করজ্যোতি মোহান্ত-এর কনভয়ের উপর পাথর ছোড়া হয়। তার আগে বিক্ষোভ অসমের চাবুয়ার বিধায়ক বিনোদ হাজারিকার বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সামনে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। একটি সার্কেল অফিসও পুড়ে গেছে।
আরও পড়ুন - অগ্নিগর্ভ উত্তর-পূর্বে আসছেন অমিত শাহ, 'ষষ্ঠ ধারা' প্রয়োগের আশ্বাস পেল অসম
আরও পড়ুন - বাতিল বহু উড়ান, অসম-এ আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে পাঠানো হচ্ছে বিশেষ বিমান
ফলে অসমের দশটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাাখার মেয়াদ আরও ৪৮ ঘন্টার জন্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই দশটি জেলা হল - লখিমপুর, ধেমাজি, তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, চরাইদেও, শিবসাগর, জোরহাট, গোলাঘাট, কামরূপ (মেট্রো) এবং কামরূপ। এছাড়া আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অসমের সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রাজ্যের রেল পরিষেবাও ব্যহত হয়েছে। বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে গুয়াহাটি ও ডিব্রুগড় বিমানবন্দর আটকে পড়েছেন বহু যাত্রী।
আরও পড়ুন - '৪৭-এর পর আরও এক স্বাধীনতার রাত, সদ্যজাত পাক হিন্দুর নাম হল 'নাগরিকতা'
আরও পড়ুন - বিল পাসের আগেই নাগরিকত্ব, জানেন ৩ বছরে কতজন আফগান ও পাকিস্তানি 'ভারতীয়' হয়েছেন