কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টের এই বিষয়ে শুনানির বিরোধিতা করছে এবং দাবি করেছে যে শুধুমাত্র আইনসভাই নতুন সামাজিক সম্পর্ক তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমপ্রেমী বিবাহে কেন্দ্রের 'শহুরে অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গি' তত্ত্ব খারিজ করল আদালত। এই মন্তব্যের নিরিখে কোনও যথাযথ প্রমাণ কেন্দ্র পেশ করতে পারেনি বলেও জানান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সমকামী বিবাহের জন্য আইনি অনুমোদন চাওয়ার যুক্তি শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বুধবার এমনটাই জানালো। প্রধান বিচারপতি জানান কেন্দ্রের কাছে কোনো তথ্য নেই যে এটি একটি শহুরে অভিজাত ধারণা। তাঁর কথায়,'রাষ্ট্র একজন ব্যক্তির সঙ্গে এমন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বৈষম্য করতে পারে না যার উপর ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের কাছে এমন কোনো তথ্যও নেই যাতে দেখা যায় যে সমলিঙ্গের বিয়ে একটি শহুরে অভিজাত ধারণা।'
কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টের এই বিষয়ে শুনানির বিরোধিতা করছে এবং দাবি করেছে যে শুধুমাত্র আইনসভাই নতুন সামাজিক সম্পর্ক তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,'ব্যক্তিগত আইনের প্রশ্নে, আইনসভার কর্তব্য হল জনপ্রিয় ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করা। যেখানে সামাজিক সম্মতি বিবাহের একটি নির্দিষ্ট সংজ্ঞাকে সমর্থন করে, সেখানে আইনসভা সেই ফর্মটিকে অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তার দায়িত্ব পালন করছে। জনগণের ইচ্ছা। এই দ্ব্যর্থহীন গণতান্ত্রিক ইচ্ছাকে বিচারিক আদেশ দ্বারা প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়।' পাশাপাশি আরও বলা হয় যে,'বিবেচনা করা প্রাসঙ্গিক হবে যে এই মাননীয় আদালতের সামনে যা উপস্থাপন করা হয়েছে তা সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার উদ্দেশ্যে একটি নিছক শহুরে অভিজাত দৃষ্টিভঙ্গি।'
সমপ্রেমী বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দিতে নারাজ কেন্দ্র। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সমকামী বিবাহের আইনি বৈধতা চাওয়ার আবেদনগুলি সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার উদ্দেশ্যে একটি 'শহুরে অভিজাত' দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফল বলে দাবি করা হয়েছে। আদালতের কাছেও এই বিবাহের আইনি বৈধতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
১৮ এপ্রিল সমপ্রেমী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি মামলায় সুপ্রিল কোর্টের শুনানি। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে দেশের প্রধান বিচারপতি ছাড়াও থাকবেন বিচারপতি সঞ্জয় কিশান কউল, এস রবীন্দ্র ভাট, পি এস নরসীমা এবং হিমা কোহলি। নিজের পছন্দ অনুযায়ী ব্যক্তিকে বিবাহ করার স্বাধীনতা সমপ্রেমীদেরও দেওয়া উচিত বলে দাবি মামলাকারীদের। এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে অনেকেই। এরমধ্যে দিল্লি কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস-এর নাম উল্লেখ্যযোগ্য। সমপ্রেমীদেরও সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকার দেশের আইনে থাকা বাঞ্ছনীয় বলে দাবি করছে তাঁরা। সেক্ষেত্রে যুগলকে সাহায্য করারও দাবি করেছে কমিশন।
আরও পড়ুন -
সমকামী বিয়ের স্বীকৃতি ইস্যুতে নতুন বাজি কেন্দ্র সরকারের, মামলায় রাজ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি
রাষ্ট্রসঙ্ঘের জনসংখ্যা মানচিত্রে ভারতের বাইরে জম্মু কাশ্মীর-লাদাখ! তুমুল বিতর্ক