যে শিশুরা তাদের মাকে পায়নি অথবা যে মায়েরা বুকের দুধের অভাবে সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারেন না, তাঁদের কথা ভেবেই এই মহিলা নিরলস ভাবে বুকের দুধ দান করে গিয়েছেন।
আপনাকে যদি বলা হয় এক মায়ের থেকেই বুকের দুধ খেয়েছে ১৪০০ শিশু! আপনি কি সেই কথা বিশ্বাস করবেন? না করাটাই স্বাভাবিক। কারণ বাস্তবে এরকম তো হয় না। কিন্তু তেমন ঘটনাই ঘটেছে কোয়েম্বাটোরে। কোয়েম্বাটোরের এক ২৯ বছর বয়সী মহিলা সাত মাসের মধ্যে ৪২ লিটার বুকের দুধ দান করে রেকর্ড তৈরি করেছেন। ১৪০০ শিশুকে খাওয়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল সেই দুধ। অর্থাৎ বকলমে এক মা ১৪০০ শিশুকে তাঁর বুকের দুধ খাইয়ে নতুন জীবন দিলেন। যে শিশুরা তাদের মাকে পায়নি অথবা যে মায়েরা বুকের দুধের অভাবে সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারেন না, তাঁদের কথা ভেবেই এই মহিলা নিরলস ভাবে বুকের দুধ দান করে গিয়েছেন।
টি সিন্ধু মনিকা একজন গৃহবধূ। ২০২১ সালে জুলাই মাসে রাজ্য সরকারের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) দুধ দান করা শুরু করেছিলেন। পরিসংখ্যান বলছে ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে তিনি প্রায় ৪২ লিটার দুধ দান করেছিলেন।
মনিকা একজন হোম মেকার এবং তার স্বামী একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তাদের একটি ১৮ মাস বয়সী কন্যা সন্তানও রয়েছে। তিনি তার স্বামীকে এই সাফল্য অর্জনের কৃতিত্ব দেন। মণিকা বলেন যে তাঁর স্বামী আমার মেরুদণ্ড। তিনি বলেন, আমার বাচ্চাকে খাওয়ানোর পাশাপাশি আমি অমৃতম এনজিওর রূপা সেলভায়াঙ্কির নির্দেশে মায়ের বুকের দুধ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ শুরু করি। এনজিওটি প্রতি সপ্তাহে এই দুধ নিয়ে কোয়েম্বাটুরের ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্কে জমা দিত।
উদ্যোগটি দুই বছর আগে শুরু হয়েছিল
অন্যদিকে রূপা সেলভায়াঙ্কি জানান, অসুস্থ নবজাতক শিশুদের সরকারি হাসপাতালে খাওয়ানোর জন্য তিনি দুই বছর আগে এই উদ্যোগ শুরু করেছিলেন। এখন ৫০ জন মহিলা এতে যোগ দিয়েছেন, যার মধ্যে ৩০ জন মহিলা অবিরাম তাদের বুকের দুধ দান করছেন। একই সময়ে, শিশু স্বাস্থ্যের রাজ্য নোডাল আধিকারিক, ডাঃ এস শ্রীনিবাস বলেছেন যে সেই সমস্ত বাচ্চাদের বুকের দুধ দেওয়া হয় যাদের মা আর নেই বা তাদের খাওয়াতে অক্ষম।
সারাদেশে ৭০টি ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাংক
তিনি বলেন, ভারতে ৭০টি ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি তামিলনাড়ুতে। ৩৫টি সরকারি মেডিকেল কলেজের সবকটিতেই ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক রয়েছে। বাকি ১০টি রাজ্যের তালুক হাসপাতাল থেকে সেটআপ করা হয়েছে। রাজ্যের কোনও সদ্যোজাত যেন মায়ের বুক থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই এনজিওটি কাজ শুরু করে। আর খুব কম দিনের মধ্যেই মেলে সাফল্য।
আরও পড়ুন
পলাতক নীরব মোদীকে ভারতে আনার পথ পরিষ্কার, হিরে ব্যবসায়ীর আবেদন খারিজ করল ব্রিটেন হাইকোর্ট
নজরে গুজরাটের মুসলিম ভোট, আপ-ওয়াইসিকে টেক্কা দিতে পারবে কি কংগ্রেস, ভোট কাটতে পারে বিজেপিও
টোটো উল্টে মৃত্যু এক গৃহবধুর, অল্পের জন্য রক্ষা পেল তার দুই সন্তান