আবারও কংগ্রেসের নিশানায় তৃণমূল। রাহুল গান্ধীর পরে এবার জয়রাম রমেশ। তিনি বলেন তৃণমূলকে দলভাঙানোর রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
মেঘালয় বিধানসভার ভোট প্রচারে গিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছিলেন। বলেছিলেন দলটি বিজেপিকে রাজনৈতিক সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার জন্যই কাজ করছে। এই মন্তব্যের এক দিন পরে আবারও কংগ্রেস আক্রমণ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসকে। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস বলেছে, তৃণমূল কংগ্রেস যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায় তাহলে অবশ্যই দলভাঙানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে।
একটি সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন,এটি অপরিহার্য, যে সমস্ত সাংবিধানিক দলগুলি কোনও ভয়,আপস, দ্বিধা ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্য ও নীতির বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে আওয়াজ তুলছে। কিন্তু কংগ্রেসই একমাত্র দব যে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাই একসঙ্গে কাজ করার জন্য তৃণমূলকে দলভাঙানোর প্রক্রিয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সাংবাদিক সম্মেলন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জয়রাম রমেশ এদিন তৃণমূলের অভিযোগেরও জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন ত্রিপুরাতে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে লড়াই করেছে কংগ্রেস। তিনি আরও বলেন ত্রিপুরায় বিজেপিকে হারাতেই একসঙ্গে হাত মিলিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। সেখানেই দুটি দলের প্রধান শক্রুও বিজেপি। তিনি বলেন এই পশ্চিমবঙ্গে উপনির্বাচনের মাত্র ২৪ ঘণ্টা গাও শাসক দল নিয়মিত চেষ্টা করেছে কংগ্রেসকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কংগ্রেস প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করতে একাধিকবার প্রয়াস করেছে।
এরপরই জয়রাম রশেম তৃণমূল কংগ্রেসকে আদানি ইস্যুতে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন ত্রিপুরায় কংগ্রেস যা করেছে তা সঠিক সিদ্ধান্ত কিন্তু একমাত্র বিরোধী রাজনৈতিক দল কোনটি যে আদানি ইস্যুতে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের বিরোধিতা করেছিল? তিনি আরও বলেন সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে একত্রিত হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস আসেনি। তারা জেপিসি চায়নি বলেও দাবি তাঁর।
বিজেপিকে পরাজিত করার জন্য কংগ্রেসের ক্ষমতা নিয়ে তৃণমূলের তোলা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে জয়রাম রমেশ বলেন, কংগ্রেস ত্রিপুরার পাশাপাশি মেঘালয়তেও বিজেপি আর তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। যদিও মেঘালয় তৃণমূল তেমন শক্তিশালী নয় বলেও দাবি করেন। তিনি বলেন মেঘালয়ের তৃণমূলের শক্তি কংগ্রেস ছেড়ে যারা তৃণমূলে গিয়েছিল তারাই। তারপরই জয়রাম রমেশ বলেন, তৃণমূল যদি চায় কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে তাহলে ঘাসফুল শিবিরকে অবশ্যই দলভাঙানোর খেলা বন্ধ করতে হবে।
কংগ্রেসের অভিযোগ তৃণমূল গোয়াতেও এই চেষ্টা করেছিল। সেখানে তারা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে গেছে। তবে এভাবে দল ভাঙিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা সর্বদাই তৃণমূলের ব্যর্থ হবে বলেও তিনি জানান। বিরোধী ঐক্যের কথা বলতে গিয়ে কংগ্রেস নেতা বলেন আগামী দিনে কংগ্রেস আরও শক্তিশালী হবে। তিনি বলেন ২০২৪ সালের নির্বানের জন্য জোট গঠনের একটি ইতিবাচক কর্মসূচি প্রয়োজন। নেতিবাচক এজেন্ডা নিয়ে জোট গঠন করা যায় না বলও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন একটি সাধারণ কর্মসূচি থাকতে হবে। আর জোট সদস্যদের নিয়মিত আলোচনায় বসতে হবে।
তবে কংগ্রেস এখন জোট নয়, রাজস্থান,মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও কর্নাটকের মত রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি সরাসরি লড়াই হবে। তবে ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য বিরোধী ঐক্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও দানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য ও নীতির বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলতে হবে।
গতকালই রাহুল গান্ধী তৃণমূলের সমালোচনা করে বলেছিলেন দলটি পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু সেখানে এখন দুর্নীতি আর হিংসার রাজত্ব চলছে। তিনি আরও বলেছিলেন তৃণমূল গোয়া নির্বাচনেও বিজেপিকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করেছিল। তৃণমূল একই কাজ করছে মেঘালয়তে। পাল্টা অভিষেক বলেছিলেন কংগ্রেস অযোগ্য ও অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলছে। নির্বাচনে পিছিয়ে পড়েছে কংগ্রেস।