ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টান হয়ে যাওয়ার পরেও তফশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করে চলেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু বাসিন্দা। জাতীয় তফশিলি জাতি কমিশন-এ এরকমই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আইনি অধিকার সুরক্ষা ফোরাম- এর সভাপতি সন্তোষ নামে এক ব্যক্তি এমনই অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিসি কমিশন- এও আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ- এ ১৯৭১ সাল পর্যন্ত খ্রিস্টান জনসংখ্যা যথেষ্ট স্থিতিশীলই ছিল। ১৯৭১ থেকে ২০১১ সালের মধ্য তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে যেখানে অন্ধ্রপ্রদেশের মোট জনসংখ্যার ৪.১৯ শতাংশ খ্রিস্টান ছিল, সেখানে ২০১১ সালে তা কমে হয় ১.৩৪ শতাংশ।
এর পিছনে সম্ভবত দু'টি কারণ রয়েছে। প্রথমত অনেকেই খ্রিস্টান ধর্ম পরিত্যাগ করছেন। দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণ হতে পারে আদম সুমারির সময় তথ্য গোপন করার প্রবণতা।
বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় সম্ভাবনাটি সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই।
১৯৭১ সাল পর্যন্ত কিন্তু অন্ধ্রে খ্রিস্টান এবং তফশিলি জনসংখ্যা প্রায় সমান সমানই ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সাল থেকেই রাজ্যে তফশিলি জাতির সংখ্যা বাড়তে থাকে। হ্রাস পায় খ্রিস্টান জনসংখ্যা।
এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে যাঁরা গোপনে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করছেন তাঁরা প্রকৃত সত্যটা লুকোচ্ছেন। সরকারি ভাবে তফশিলি জাতি হিসেবে নথিভুক্ত থাকলেও আসলে খ্রিস্টান ধর্মাচারণ করছেন। তথ্যের অধিকার আইনে রাজ্য সরকারের থেকে পাওয়া তথ্যেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
জগন সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারের রীতি বজায় রেখেই রাজ্যের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের উপহার দিয়েছে। তফশিলি কমিশনে দায়ের হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, এই তফশিলিদের খ্রিস্টান হিসেবে গণ্য করাটা হিন্দু এবং খ্রিস্টান, উভয় ধর্মেরই অপমান।
অভিযোগ উঠছে, ধর্মান্তকরণের যথাযথ নথিভুক্তিকরণ এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার অভাবেই এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ ভাবে সরকারও ধর্মান্তকরণেই মদত দিচ্ছে বলেও অভিযোগ। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আর্জিও জানানো হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও দাবি করা হয়েছে, যে বিরাট সংখ্যক মানুষ খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন, তাঁরা আসলে তফশিলি জাতির মধ্যেই পড়েন এবং তাঁদের তফশিলি জাতি হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত। যাতে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে কেউ তফশিলি জাতির সুযোগ সুবিধাগুলি উপভোগ করতে না পারেন।