করোনা মোকাবিলায় তামিলনাড়ুর অস্ত্র 'প্রাচীন সিদ্ধা', কতটা উপকারী এই পদ্ধতি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কার্যকরী সিদ্ধা চিকিৎসা 
প্রাচীন এই চিকিৎসার নেই কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি
সরকার জানিয়েছে হালকা লক্ষণ যুক্ত রোগীদের ওপর প্রয়োগ সফল
 

Asianet News Bangla | Published : Jun 24, 2020 10:09 AM IST


মঙ্গলবার যোগগুরু রামদেব দাবি করেছেন তাঁর সংস্থার তৈরি ওষুধ করোনিল আর স্বসারি ৭ দিন ব্যবহার করলেই মুক্তি মালিবে করোনভাইরাসের হাত থেকে। এই ঘটনার রাতারাতি কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রক নোটিশ ধরিয়েছে রামদের ও বালকৃষ্ণনের সংস্থা পতঞ্জলীকে। কিন্তু একই মধ্য তামিলনাড়ু প্রশাসন দাবি করছে প্রাচিন সিদ্ধা চিকিৎসার মাধ্যমেই সেরে যাচ্ছে করোনাভাইরাস।


আমিলনাড়ুর একটি কেন্দ্রে করোনা আক্রান্তের ওপর সিদ্ধা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। আক্রান্ত ২৫ জনই সুস্থ হয়েছেন। এর পরেও তামিল প্রশাসন বাকি কেন্দ্রগুলিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাকি রোগীদের ওপর সিদ্ধা পদ্ধতি প্রয়োগ করার কথা জানিয়েছে। তামিল প্রশাসনের দাবি এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে তাঁরা সদার্থক ফল পয়েছে তাই এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র সেইসব আক্রান্তদের ওপরই সিদ্ধা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে যাঁরা এই পদ্ধতিতে চিকিৎসায় সহমত পোষণ করবেন। 

আয়ুর্বেদিক বা ইউন্যানি চিকিৎসা পদ্ধতির মতই সিদ্ধা একটি প্রাচীন দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতি। আয়ুষমন্ত্রকের অধীনে এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটি মূলত তামিলনাড়ুর প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি। স্থানীয়ভাবে পাওয়া ভেষজ ওষুধের মাধ্যমেই সিদ্ধা পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়।  কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এই পদ্ধতিতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিয়ে কিছু বলেনি। 

তামিলনাড়ুতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। আক্রান্ত রাজ্যগুলির তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে এই রাজ্য। আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ হাজারেরও বেশি। এখনও পর্যন্ত ৮৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।  এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তামিলনাড়ুর মন্ত্রী কে পাণ্ডিরাজন জানিয়েছেন, সিদ্ধা তামিল প্রশাসনের কাছে একটি ট্রাম্প কার্ড। কারণ এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে ১০০ শতাংশ সাফল্য পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেছেন বহু শতক পুরনো এই চিকিৎসা পদ্ধতি। এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই কিন্তু প্রচুর ইতিহাস রয়েছে। তাই এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে অস্বীকার করা যায়না বলেও দাবি করেছেন তিনি। 

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এই চিকিৎসা পদ্ধতির কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আর শুধু মাত্র এই সিদ্ধা চিকিৎসা প্রয়োগ করেই যে রোগীরা ভালো হয়েছেন তা নয়। আক্রান্তদের অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি অনেককেই ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। 


নাগাপট্টনম শহরের চিকিৎসক আর্থার বলছেন, সিদ্ধা পদ্ধতি প্রাচীন হতে পারে। কিন্তু এক কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি না থাকায় আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত নয়। তবে রাজ্য স্বাস্থ্য  দফতের এক কর্তা জানিয়েছেন গুরুতর আক্রান্তদের ওপর এই চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়নি। মাঝারি ও হালকা লক্ষণযুক্তদের মধ্যেই সিদ্ধা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাতেই সাফল্য পাওয়া গেছে। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে রাজ্য সরকার আগেই কাবসুরস, কুডিনিরকে সুপারিশ করেছিল। 

তবে এই চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বক্তব্য রাজ্যের ক্ষমকাসীন দল তাদের জোটসঙ্গী বিজেপিকে সমর্থন করছে। 

Share this article
click me!