নির্ভয়া মামলার দোষীদের ফাঁসি নিয়ে চূড়ান্ত নাটক চলার মাঝেই রায় এল আরও এক সাড়া ফেলে দেওয়া ধর্ষণ মামলার। সাত বছর আগে পূর্ব দিল্লিতে পাঁচ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে গণধর্ষণ করার পর হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। শনিবার এই মামলার দুই অভিযুক্তকে দিল্লির এক আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি তাদের শাস্তি ঘোষণা করা হবে। অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক রেশ কুমার মালহোত্রা, অভিযুক্ত মনোজ শাহ ও প্রদীপ কুমারকে দোষী সাব্যস্ত করে বলেন, 'শিশুটির উপর বিকৃত রুচির ও চরম নৃশংসতা চালানো হয়েছে।
সাত বছর আগে ২০১৩ সালে মনোজ শাহ ও প্রদীপ কুমার গুজরাতের গান্ধীনগরে ওই নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছিল। সেখানেই থামেনি, দুই নরপিশাচ ওই নাবালিকার গোপনাঙ্গে বিভিন্ন জিনিসপত্রও ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। এরপর নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে ভেবে, মনোজ শাহ-এর ঘরেই তাকে ওই অবস্থায় ফেলে চম্পট দিয়েছিল দুই অপরাধী। ৪০ ঘন্টা পর পুলিশ ওই নাবালিকাকে মৃতপ্রায় অবস্থায় উদ্ধার করেছিল। তাঁর গোপনাঙ্গ ছিঁড়ে গিয়েছিল। পরে ছয়টি অস্ত্রোপচার করাতে হয়।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে নির্ভয়া কাণ্ডের ঘা শুকোতে না শুকোতেই এই ভয়াবহ ঘটনার কথা জানতে পেরেছিল ভারতবাসী। মামলাটি গুড়িয়া ধর্ষণ মামলা নামে পরিচিত হয়। শনিবারর অভিযুক্তদের পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক রায় ঘোষণার সময় বলেন, 'আমাদের সমাজে নাবালিকাদের দেবী হিসাবে পূজা করা হয়, এই ভয়াবহ ঘটনা সমাজের বিবেক কাঁপিয়ে দিয়েছিল'।
শনিবারের রায় পেয়ে ওই নাবালিকার বাবা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে তিনিও নির্ভয়ার মায়ের মতো বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, 'দুই বছরের মধ্যেই বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়া উচিত ছিল, তবে ছয় বছর পর ন্যায়বিচার পাওয়া গিয়েছে বলে আমরা খুশি'।
২০১৩ সালেই বিহারের মুজাফফরপুর থেকে মনোজ শাহ ও দ্বারভাঙ্গা থেকে প্রদীপ কুমারকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। ওই বছর ২৪ মে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। ১১ ই জুলাই আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে। পকসো আদালতে ৫৭ জন সাক্ষীর বিবৃতি রেকর্ড করতেই পাঁচ বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়।
এদিকে শনিবার রায় ঘোষণার পর আদালতের বাইরে কয়েকজন মহিলা সাংবাদিকদের মুখে আঘাত করে মনোজ শাহ বলে অভিযোগ। বিষয়টি বিচারক মালহোত্রাকে জানান সাংবাদিকরা। এই নিয়ে স্টেশন হাউস অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেন বিচারক।