বায়ুদূষণের ধাক্কা সামলাতে রাজধানীর বুকে তৈরি হচ্ছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। বন্ধ করা হচ্ছে স্কুল। ওয়ার্ক ফ্রম হোম ৫০ শতাংশ সরকারি চাকরিজীবীদের। ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বেসরকারি অফিসগুলিকেও।
করোনা লকডাউনের প্রকোপ কাটলেও অনলাইন ক্লাসেই ভরসা রাজধানীর। দূষণের জেরে বন্ধ হচ্ছে প্রাইমারি স্কুল। বন্ধ হচ্ছে অফিস কাছারিও। শহর যেন এক আস্ত গ্যাস চেম্বার। ধোঁয়াশার চাদরে ঢাকা। দূষণ এড়াতে এবার নড়েচরে বসেছে দিল্লির ঝাড়ু সরকার। শহরের ভিতরে আপাতত বন্ধ বাড়ি তৈরি এবং ভাঙার কাজ। বন্ধ শহর সংলগ্ন কারখানার কাজও। কারখানায় চালানো যাবে শুধুমাত্র গ্যাসে চালিত চুল্লিই। রাজধানীতে প্রবেশ নিষেধ ডিজেল গাড়ি, ট্রাক, লরিরও। তবে নিষেধাজ্ঞা খাটেনি দিওয়ালিতে। দিল্লির আকাশে 'ভেরি পুওর' মানের বাতাসের মধ্যেই রমরমিয়ে ফাটল আতশবাজি। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা লঙ্ঘন করতে বিশেষ অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়নি দিল্লিবাসীকে।
বায়ুদূষণের ধাক্কা সামলাতে রাজধানীর বুকে তৈরি হচ্ছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। বন্ধ করা হচ্ছে স্কুল। ওয়ার্ক ফ্রম হোম ৫০ শতাংশ সরকারি চাকরিজীবীদের। ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বেসরকারি অফিসগুলিকেও। দিল্লি সরকারের পরিবেশমন্ত্রীর গোপাল রাই একটি বিশিষ্ট সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন,'দূষণ লাগামে আনতে তৈরি হয়েছে ছয় সদস্যের বিশেষ টাস্ক ফোর্স। দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেই বিষয় ভাবছেন তাঁরা। বাজার-অফিসের সময় নিয়েও ভাবা হচ্ছে।' ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়েছে প্রাইমারি স্কুল।
শুধু দিল্লি নয় দূষণ বাড়ছে নয়ডাতেও। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। যানবাহনের ক্ষেত্রেও জোড়-বিজোর নিয়ম ফেরানোর কথা ভাবছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
একে দিওয়ালি তার উপর উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাবের বিস্তীর্ণ অংশে ফসলের গোড়া পোড়ানো। দুয়ে মিলে দিল্লির বাতাস 'পুওর' থেকে ক্রমে 'ভেরি পুওর'-এ পৌঁছেছে। দূষণের প্রকোপ রাজধানী শহর ছাড়িয়ে নয়ডা-সহ সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ দিল্লির মালভিয়া নগরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন,'সকাল দিকে বাতাস বেশ ভারি থাকে। অফিসে যাওয়ার সময় চোখ, নাক, মুখে রীতমত জ্বালা অনুভব করতে পারি। নিশ্বাসের সঙ্গে টক গন্ধ, ধুলোর ভাব। রাতের দিকে পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও, সকালে রীতিমত সমস্যায় পড়তে হয়।' সম্প্রতি দিওয়ালি, ছটপুজো ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমানে বাজি ফাটানোর ফলেই বাতাসে দূষণের পরিমাণ আরও বেড়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।
ভোরে দিল্লির আকাশের দিকে তাকালে ঘোলাটে লাগে আকাশ। চারিদিকে ধোঁয়া আর ধুলো। নিঃশ্বাস নিতে গেলে ফুসফুসে চেপে বসে ধুলো। গাছের পাতাও আর টানতে পারছেন না বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড। রাতে চালাতে হচ্ছে এয়ার পিউরি ফায়ার। ঝাপসা ইন্ডিয়া গেট, জনপদ। কোনও কিছুই স্পষ্ট নয় ডিজিটাল ভারতের গর্বের রাজধানীতে। তবু কেন হাত গুটিয়ে বসে রাজ্যের ঝাড়ু সরকার বা কেন্দ্রের পদ্ম সরকার?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই পঞ্চাশের মধ্যে থাকলে তা শ্বাস নেওয়ার উপযুক্ত। পঞ্চাশ থেকে একশো চলনসই। একশো থেকে দু’শো খারাপ। দু’শো থেকে তিনশো খুব খারাপ। তিনশো থেকে চারশোর মধ্যে থাকলে তা যে কোনও সুস্থ মানুষকে অসুস্থ করার জন্য যথেষ্ট। উল্লেখ্য দক্ষিণ দিল্লির একিউআই পৌঁছেছে চারশোর উপরে। বাতাসে অস্বস্তি, সর্বদা মাথা ঝিম ঝিম ভাব নিয়ে। রাজধানীর বাতাসে ক্রমেই বাড়ছে টক গন্ধ।
আরও পড়ুন -
দক্ষিণবঙ্গের কোনও কোনও জেলায় থাকতে পারে মেঘলা আকাশ, অন্যান্য জেলার আবহাওয়ার রিপোর্ট কী বলছে?
শিয়ালদহ শাখায় একাধিক লোকাল ট্রেন বাতিল, ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনেও হয়রানি নিত্যযাত্রীদের