লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের গোপনীয়তা কি আদৌ সুরক্ষিত, 'আরোগ্য সেতু' নিয়ে কিছুই জানাতে পারল না কেন্দ্র

কে তৈরি করেছে আরোগ্য সেতু অ্যাপ

অ্যাপ তৈরির বিষয়ে ফাইলগুলি কোথায়

কাদের হাতে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ ভারতবাসীর তথ্য

আরটিআই-র জবাবে কিছুই জানাতে পারল না কেন্দ্রীয় সরকারের

 

amartya lahiri | Published : Oct 28, 2020 10:21 AM IST / Updated: Oct 29 2020, 12:28 PM IST

করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে ভারত সরকারের আরোগ্য সেতু অ্য়াপ ব্যবহার করছেন কোটি কোটি ভারতীয়। কিন্তু, সেই অ্যাপ কে তৈরি করেছে, অ্যাপ তৈরির বিষয়ে ফাইলগুলি কোথায়, কাদের কাছে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ ভারতবাসীর তথ্য - এসব কিছুই জানা নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। অন্তত তথ্য অধিকার আইনে এই প্রশ্নগুলি করে কেন্দ্রীয় সরকারের তিন-তিনটি বিভাগ ও মন্ত্রক থেকে কোনও উত্তর পাননি সৌরভ দাস নামে এক আবেদনকারী। এই বিষয়ে মঙ্গলবার বৈদ্যুতিন মন্ত্রক, জাতীয় তথ্য বিজ্ঞান কেন্দ্র এবং ন্যাশনাল ইগভর্ন্যান্স ডিভিশনের সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসারদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন।

তথ্য কমিশনের পর্যবেক্ষণ

ওই তিন কেন্দ্রীয় দপ্তরের সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসাররা তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছেন এবং তথ্য অধিকার আইনের আওতায় করা প্রশ্নের দায়সারা এবং বিরক্তিকর জবাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে কমিশন। এর উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে এর জন্য আরটিআই আইন অনুযায়ী তাদের জরিমানা করা হবে। তথ্য কমিশন আরও বলেছে, আরোগ্য সেতু অ্যাপের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে ওই প্ল্যাটফর্মটির নকশা, বিকাশ এবং হোস্ট করে ন্যাশনাল ইনফরমেটিকস সেন্টার। কিন্তু তারপরেও কীভাবে তাদের কাছে অ্যাপটি তৈরির বিষয়ে কোনও তথ্য নেই, তার ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিশন। এছাড়া, এনআইসি-র কাছে কোনও তথ্য না থাকলে আরোগ্য সেতু অ্যাপ কীভাবে ডোমেইন নাম গভ ডট ইন (gov.in) দিয়ে করেছে, তারও লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ২৪ নভেম্বর পরবর্তী শুনানিতে বেঞ্চের সামনে হাজির থাকতে হবে সরকারি এই তিন দপ্তরের তিন সিপিআইও-কে।

গোপনীয়তার মৌলিক অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন

সৌরভ দাস নামে এক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে এই তিন দপ্তরের বিরুদ্ধে তথ্য না দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। অ্যাপটির বিকাশকারী হওয়া সত্ত্বেও এই বিষয়ে এনআইসির কাছে কোনও তথ্য না থাকা 'আশ্চর্যজনক' বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকী বিদ্যুত তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক বা ই গভর্ন্যান্স বিভাগের কাছেও এই বিষয়ে কোনও তথ্য না থাকাটা উদ্বেগজনক, বিশেষ করে জনসাধারণ এই অ্যাপ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। এতে করে লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত তকছে না। বৃহত্তর অর্থে এটা ভারতবাসীর গোপনীয়তার মৌলিক অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং মানুষের সাংবিধানিকভাবে প্রাপ্ত জীবন ও স্বাধীনতার অধিকারের পক্ষে হুমকিস্বরূপ বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

গোপনীয়তার বিষয়ে নীরব কমিশন

 

কমিশন অবশ্য এখনও গোপনীয়তা লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তারা জোর দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের, অভিযোগকারীকে 'আপত্তিকর জবাব' দেওয়ার বিষয়ে। তারা বলেছে কর্তৃপক্ষের এই তথ্য জানাতে অস্বীকার করাটা মোটেও মেনে নেওয়া যায় না। এটি একটি চলতি বিষয় এবং অ্যাপটি তৈরি করার সময় কোনও ফাইল ছিল না এটা হতে পারে না। তথ্য নেই বলে হাত ধুয়ে ফেললেই হবে না, সেই তথ্য কার কাছে আছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা উচিত ছিল।

 

Share this article
click me!