ইন্ডিয়া গেট থেকেঃ রাজনৈতিক মহলে প্রকাশ্যে যেমন অনের কিছু ঘটে তেমনই পর্দার আড়ালেও অনেক ঘটনা ঘটে যায়। মতামত প্রকাশ থেকে ক্ষমতা দখলের খেলা- যার একটি রাজৈনিক ভিত্তি থাকে। এশিয়ানেট নিউজ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেই জাতীয় খবরগুলি আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরি।
ভারতের রাজনীতির অন্তরমহলে প্রতি সপ্তাহেই অনেক ঘটনা ঘটে। তারই কয়েকটা পাঠকের কাছে পেশ করার চেষ্টা করে এশিয়ানেট নিউজ বাংলা। এবারও From The india gate ২৪তম এপিসোডে রইল তেমন কিছু টানাপোড়েনর কথা।
দিল্লিই শেষ কথা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশ্ন ছিল একটি সূচের মত, যা নিমেশেই হাওয়া ভরা বেলুন ফাটিয়ে দিয়েছিল। 'আপনি তিন দিন বসেছিলেন, মাত্র কয়েকটি পরিবর্তন', তিনি এই প্রশ্নটি করেছিলেন বিজেপির কর্ণাটকের সদস্যরা যখন সংশোধিত তালিকা নিতে এসেছিল। যদিও এর আগেও এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু সবকিছুতেই জল ঢেলে দিয়েছিলেন। যাইহোক মোদীর এই কাজে আবারও প্রশ্ন উঠছে, কী করে তিনি প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার নাড়ি লক্ষত্র পড়তে পারেন।
নরেন্দ্র মোদীর যে তালিকায় নাম ছিল যাদের হাস্টিং-এর ৫০:৫০ সুযোগ ছিল। এটি জগদীশ শেট্টার ও ইশ্বরাপ্পার মত প্রবীণদের একটি পুল থেকে নেওয়া হয়েছিল। কারণ শীর্ষ নেতৃত্বরা কিছুতেই স্থির করতে পারছিল না যে টিকিট না পাওয়ার ব্যাপারটা কী করে তারা মিটমাট করে নেবে। মোদী প্রার্থীদের পরামর্শ দেওয়ার সময় সমঝোতার থ্রেড বুঝতে পেরেছিলেন। তিবি অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ৫০:৫০ তালিকায় থাকা সমস্ত নাম বাদ দিয়ে নতুন একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন।
সেই নামগুলি বাস্তবায়নের জন্য রাজ্যের নেতাদের দেওয়া হয়েছিল। তবে দিল্লি বিজেপি নেতারা মনে করেন যে শেট্টারের দলত্যাগ ঠিক নয়। তাঁকে দলে রেখে দেওয়া উচিৎ ছিল। ধর্মেন্দ্র প্রধানের পরিবর্তে অমিত শাহের মত শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব যদি তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন তাহলে তাঁকে বিজেপিতে রেখে দেওয়া যেত। এই বিপর্যয় এড়ানো যেত।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী ও বিধায়েক হিসেবে শেট্টারের নাম বাদ দেওয়া একটি ফ্লপ শো ছিল। কারণ প্রবীণদের সম্মান দেওয়া উচিৎ ছিল। দিল্লি সদর দফতর, অবশ্যই লক্ষ্ণ সাভাদি জিবর্গি(কুলবর্গি জেলা) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন , মনে করা হয়েছিল তিনি দলত্যাগ করবেন। কিন্তু শেট্টাদের দলবদল ছিল বিষ্ময়কর।
হেডস মানে জেতা আর টেলস মানে হারা
এটি কর্ণাটকের বরুণা কেন্দ্রের রাজনৈতিক খেলার সারসংক্ষেপ যেখানে বিজেপি ভি সোমান্নাকে কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে। বিএস ইয়েদুরিআপ্পার ছেলে বিওয়াই বিজয়েন্দ্রকে ওখানে প্রার্থী করতে অস্বীকার করার পরে সোমান্নাকে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলেছিলেন। সোমান্নাকে বাছাই করা বিজেপির চতুর কৌশল। এই পদক্ষেপের কারণে মহীশূর জেলার অন্তর্গত সিদ্দারামাইয়ার চলাফেরা সীমাবদ্ধ করা গেছে। যা কর্ণাটকের অন্য কোনও অংশ পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ভোট প্রচার করতে বাধা দেবে। লিঙ্গায়েত নেতা হওয়ায় সোমান্না সম্প্রদায়ের ভোট দখল করতে পারবে না।
বিজেপির থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলি মনে করে যে দলের মধ্যে এই অন্তর্দ্বন্দ্বের কারে কংগ্রেসের এই দূর্গ জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপির। তাদের অন্তদৃষ্টি হল যে কংগ্রেসের নেতা ডিকে শিবকুমারও চেষ্টা করবেন। কিন্তু দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের কথা মাথায় রেখে সিদ্দারামাইয়ার সম্ভাবনাগুলি নষ্ট হয়ে যাকে। বরুণ অবশ্যই কিছু সময়ের জন্য শক্তিশালী আন্ডারকারেন্টের সাক্ষী হবে।
লাল নেতার সবুজ পতাকা
তিনি সম্ভবত দেশের প্রথম রাজনৈতিক নেতা যিনি প্রকাশ্যে বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে বয়কট ঘোষণা করেছিলেন। ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে সিপিএম নেতা ইপি জয়রাজনের অবস্থান কান্নুর থেকে তিরুঅনন্তপুরম যাওয়ার একটি ফ্লাইটে একটি ফ্র্যাকস এর পরে তার উপর একটি সংক্ষিপ্ত নিষেধাজ্ঞার জন্য একটি কুইড-প্রো-কো ছিল। কিন্তু ইপি বুঝতে পেরেছিলেন যে তিরুবন্তপুরম ও তাঁর শহর কান্নুরে মধ্যে অন্য কোনও এয়ারলাইন্স কাজ করছে না। এর মধ্যে তিনি সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু ট্র্যাক ২ চ্যানেলে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোনটাই সমাধান বের করতে সাহায্য করেনি।
আর ঠিক এমন সময়ই বন্দে ভারতের প্রবর্তন ঘটেছিল। ট্রেনটি তাঁকে প্রায় ৬ ঘণ্টার মধ্য কান্নুরে নিয়ে গিয়েছিল। যদিও সিপিএম এখনও বন্দে ভারতকে স্বাগত জানায়নি। ইপি লোকো পাইলটদের সম্মান জানানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যা রাজ্যের প্রচারে যাওয়া বিজেপি নেতাদেরও অবাক করেছিল। কিন্তু ইপির ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে তিনি বন্দে ভারত পেয়ে সত্যি খুশি।আরও একজোড়া ট্রেনের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে ইপি দলের লাল পকাতার পরিবর্তে বন্দে ভারতের জন্য সবুজ পতাকা নাড়ছেন।
মেষপালক নিখোঁজ
মালি মৌর্য ও কুশওয়াহা সহ ছটি সম্প্রদায়ের সদস্যরা যারা ১২ শতাংশ সংরক্ষণের দাবিতে ভারতপুর জেলার জয়পুর-আগ্রা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল। কারণ তাদের নেতারা রাতারাতি নিখোঁজ হচ্ছেন। ঝাঁকে ঝাঁকে রাস্তা অবরোধ অপসারণের জন্য তাদের নেতাদের অবদানে কান না দেওয়ার পরেই অদৃশ্য হয়ে যাওযার ঘটনা ঘটে। মুখ্যমমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর নেতাদের দেওয়া মৌখিক আশ্বাস যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। প্রশাসনের গোপন খবর মুখ্যমন্ত্রী এই নেতাদের রাস্তা অবরোধ শেষ না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। হুমকিদাতা মুখ্যমন্ত্রী এবং অমনোযোগী ক্যাডারদের মধ্যে আটকে পড়া নেতাদের স্কুটি করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
ভূত বাংলা
তারা বলছে ইউপি সরকারের মন্ত্রীরা যে বাংলো ব্যবহার করতেন তারমধ্যে একটি ছিন্নমূল। ক্ষমতাসীন দখলদাররা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে তার বাড়িই রাজনৈতিক গ্রাফের পতনের কারণ। তাঁকে সাইডলাইন করা হয়েছে। অনেক সিদ্ধান্ত তাকে জানান হচ্ছে না। তাঁর স্ত্রীকে নির্বাচনের টিকিট না দেওয়ার জন্য তাঁর দুর্বল ভবনকেই দায়ী করা হচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তিনি মেয়র হতেন। বলেও মনে করা হচ্ছে। আগের বাসিন্দাও এমন সংকটে পড়েছিলেন। তাঁর মন্ত্রিত্ব থাকবে না যাবে তাই নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছিল।