জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে উত্তাল দেশের রাজনীতি। তেলের ওপর ভ্যাট কমানোর আর্জি মোদী। পাল্টা সরব বিরোধীরা। মোদীকে নিশানা করে আক্রমণ অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কোভিড-১৯ ইস্যুতে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যগুলিকে পেট্রোল আর ডিজেলের ওপর কর ছাড় দেওয়ার কথা বলেন। তিনি জনগণের ওপর চাপ কমানোর জন্য রাজ্যগুলিকে ভ্যাট কমানো ও অর্থ প্রদান করার আবেদন জানান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্যের পরই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি লাগাতার আক্রমই শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে।
উদ্ধব ঠাকরে- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। তিনি বলেন রাজ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা পায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলার পর নভেম্বর মাসেই কয়েকটি রাজ্য আবগারি শুল্ক কমিয়েছেন। কিন্তু পেট্রোল আর ডিজেলের ওপর ভ্যাট কমায়নি। তিনি আরও বলেন মহারাষ্ট্র আগাড়ি বিকাশ পরিষদ রাজ্যের মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ সৎ আর দায়বদ্ধ। কিন্তু পেট্রোল আর ডিজেলের দাম বাড়ার দায় কেন্দ্রীয় সরকারের।
রণদীপ সুরজেওয়ালা- কংগ্রেস নেতা বলেছেন পেট্রোল আর ডিজেলের করের ওপর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ২৭ লক্ষ কোটি টাকা আয় করেছে। অবিলম্বে সেই হিসেব দিতে হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আপাতত সমালোচনা না করে বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে মিথ্যা কথা না বলেন সংগৃহীত করের টাকার হিসেব দিতে বলেছেন। পাশাপাশি তিনি তুলে ধরেছেন কংগ্রেসের আমলে যখন আন্তর্জিত বাজারে তেলের দাম বেশি ছিল তখন এই দেশের অনেক সস্তায় তেল বিক্রি হত। আর মোদীর আমলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে কিন্তু দেশের তেলের দাম বড়েছে বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী- শিবসেনা নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, মোদী কোভিড নিয়েও রাজনীতি শুরু করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজ্যগুলিকে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি বকেয়া টাকা দেয়নি। তারওপর ভ্য়াট কমানোর কথা বলছেন। এটা অসম্ভব বলেও টুইট করেন কিনি।
সম্বিত পাত্র- বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির আক্রমণের পরই মুখ খুলেছেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্র, তেলাঙ্গনা, পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরল, ঝাড়খণ্ড- অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেই তেলের দাম কমানো হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী ও তাদের রাজনৈতিক দলগুলি স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এখন বল তাদের কোর্ট। তারা চাইলেই পেট্রোল আর ডিজেলের দাম কমিয়ে জনগণকে সুরাহা দিতে পারে। একই সঙ্গে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির পেট্রোলের দাম কমানোর প্রশাংসাও করেছেন।
হরদীপ সিং পুরী- পেট্রোলিমায় মন্ত্রী ফেডারেলিজম চেতনা বজায় রাখার কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন মোদীজির নির্দেশে জ্বালানি তেলের ওপর আবগারি শুল্ক কমানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি নাগরিকদের স্বার্থে কোনও পদক্ষেপ করেনি।
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা শেরগিল বলেছেন একটা সময় মোদী যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি সর্বদা কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করতেন । আর এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে বল মুখ্যমন্ত্রীদের কোর্টে ঠেলছেন।