কোভিড-১৯ মহামারির মোকাবিলায় শুধু দেশ নয় বিভিন্ন উন্নত দেশগুলিকেও পথ দেখাচ্ছে কেরল
এবার তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্থিক ক্ষতির মোকাবিবলা করতে মন্দিরের সম্পদ নিলাম করার
আর তাতেই খেপে গিয়েছে বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন
এই নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছে তারা
কোভিড-১৯ মহামারির মোকাবিলায় দেশের একেবারে একনম্বরে রয়েছে কেরল। তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ শুধু দেশে নয়, এমনকী উন্নত দেশগুলিতেও দারুণ প্রশংসা পেয়েছে। অনেক দেশ কেরলের দেখানো পথ অনুসরণও করছে। এবার দীর্ঘদিনের লকডাউনের কারণে ভয়াবহ আর্থিক সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রেও এক অভিনব পন্থা নিয়েছে কেরলের বাম সরকার। সেখানকার মন্দির বোর্ডে, বিভিন্ন মন্দিরে ভক্তদের দান করা মূল্যবান দ্রব্যাদি নিলামের মাধ্যমে এই আর্থিক ঘাটতি মেটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর মন্দিরের সম্পদে হাত পড়তেই বেশ কিছু হিন্দু সংগঠনের রে রে করে উঠেছে।
লকডাউনের আর্থিক ক্ষতি সামাল দিতে মালাবার দেবস্বম বোর্ড এবং ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ড, বিশেষ গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি মন্দির থেকে মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয় ত্রাণ তহবিলের (সিএমডিআরএফ) এক লক্ষ টাকা করে অনুদান বাধ্যতামূলক করেছে। মন্দিরে রাখা লণ্ঠন ও অন্যান্য পিতলের সামগ্রী ও মূল্যবান বস্তু, স্বর্ণ ও রৌপ্যের মতো দামী ধাতব পদার্থ নিলাম করে এই অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। সেইসঙ্গে বোর্ড বিভিন্ন মন্দিরের হাজার হাজার একর জমি ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।
আর এই সিদ্ধান্তকেই চ্যালেঞ্জ করে কেরল হাইকোর্টে আবেদন করেছে, হিন্দু ঐক্য বেদী, আন্তঃরাষ্ট্র হিন্দু পরিষদ (এএইচপি)-এর মতো বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। ২৭ মে এই আবেদন করা হয়েছে। হাইকোর্ট তাদের আবেদন গ্রহণ করে এই বিষয়ে মন্দির বোর্ডকে সাতদিনের মধ্যে এই বিষয়ে একটি হলফনামা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে।
ত্রিবাঙ্কুর বোর্ডের সভাপতি এন ভাসু বলেছেন, দেবস্বম বোর্ড আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠার জন্য সম্ভাব্য সকল উপায়ই নিচ্ছে। এই কয়েক টন ওজনের প্রদীপ, লন্ঠন, বিভিন্ন পাত্র বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হবে বলে আশা করছে। ডেপুটি দেবস্বম কমিশনার এবং ভিজিল্যান্স কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রায় ১২৪৮টি মন্দির থেকে এইসব মূল্যবান জিনিসপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, মন্দির বোর্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি দেবস্বম আইনের পরিপন্থী। এই আইনে বলা হয়েছে, মন্দিরের সম্পত্তি মন্দিরের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। তাঁদের আরও অভিযোগ মন্দিরের প্রচুর কর্মচারী রয়েছেন যারা বেকারত্বের সমস্যায় ভুগছেন। বন্ধ রয়েছে প্রচুর মন্দির। সরকার তাদের এক টাকাও দেয়নি বরং মাদ্রাসা কর্মীদের প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে দিয়েছে। এই কর্মীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করাই বোর্ডের নৈতিক দায়িত্ব। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বিজেপি-ও।