দিল্লি দাঙ্গাতেও মিলল তাবলিগি জামাত যোগ
এমনটাই দাবি দিল্লি পুলিশের
এর আগে করোনা এবং তহবিল তছরুপ - দুটি ঘটনায় ফেসেছিলেন মৌলানা সাদ
অস্বস্তি ক্রমেই বাড়ছে নিজামুদ্দিন মার্কাজের
প্রথমে তাবলিগি জামাত-এর সদর দপ্তর দিল্লির নিজামুদ্দিন মার্কাজের প্রধান মৌলানা মহম্মদ সাদ-কে দিল্লি পুলিশ খুঁজছিল করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বিশাল সমাবেশ আয়োজন করে মহামারি আইন ভাঙার অভিযোগে। তারপরে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট তাঁর বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপের অভিযোগ আনে। এবার গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে দিল্লিতে যে দাঙ্গা হয়েছিল, সেই দাঙ্গার সঙ্গেও নাম জড়ালো মৌলানা সাদ-এর। প্রায় অভিযোগের চক্রবুহে আটকা পড়লেন তিনি।
দিল্লির একটি আদালতে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা যে অভিযোগপত্র পেশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে এই দাঙ্গার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ফয়জল ফারুক-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তাবলিগি সদস্য আবদুল আলেম-এর। ৫৩ বছর বয়সী এই আবদুল আলেম আবার মৌলানা সাদ-এর খুবই ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।
জানা গিয়েছে দাঙ্গার ঘটনায় তার কী ভূমিকা ছিল তা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ ফয়জল ফারুকের ফোনের কল লিস্ট বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ফয়সাল ফারুক ফার্স্ট পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া, পিঞ্জরা তোড় গোষ্ঠী, জামিয়া সমন্বয় কমিটি এবং হজরত নিজামুদ্দিন মার্কাজের বিশিষ্ট সদস্যদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
পূর্ব দিল্লির দয়ালপুরে রাজধানী স্কুল নামে একটি বিদ্যালয়র মালিক এই ফয়জল ফারুক। যে স্কুলের আশেপাশের এলাকায় দাঙ্গার তীব্রতা সবচেয়ে বেশি ছিল। অপরাধ দমন শাখা এই দাঙ্গায় জড়িত সন্দেহে যে ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে, তারমধ্যে এই ফয়জল ফারুক-ও আছেন। চার্জশিটে পুলিশ বলেছে দাঙ্গাকারীদের প্রাথমিক নিশানাগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ফারুকের স্কুলের পাশেই অবস্থিত ডিআরপি কনভেন্ট স্কুল। তাদের আরও দাবি তদন্তে বেরিয়েছে, রাজধানী স্কুল ও তার সংলগ্ন এলাকায় দাঙ্গারশ আগুন ছড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলেন ফয়জল ফারুক। তাঁর নির্দেশেই ডিআরপি কনভেন্ট স্কুলে ভাঙচুর চালিয়েছিল উন্মত্ত জনতা। কারণ এই স্কুল ছিল তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী। ডিআরপি কনবেন্ট এবং ফারুকের রাজধানী স্কুলের নিরাপত্তারক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতেই এই কথা প্রমাণ হয়েছে।
তবে তাঁর সঙ্গে আবদুল আলেমের ফোনালাপ তাবলিগি জামাত প্রধান এবং সদর দপ্তর নিদামুদ্দিন মার্কাজের জন্য ঝামেলা আরও বাড়ালো, তা বলাই বাহুল্য। তবে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বের হচ্ছে, না কেঁচোকেই কেউটে বলে চালানো হচ্ছে, সেই বিষয়টি নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কারণ ওই ভয়াবহ দাঙ্গার পর বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দারা একযোগে অভিযোগ করেছিলেন, হামলাকারীরা অধিকাংশই বহিরাগত, উত্তরপ্রদেশের লোক। দিল্লি পুলিশও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এরকমই জানিয়েছিল। এখনও তাদের একজনেরও সন্ধান পায়নি তারা।