বর্ষাকালে কি রোগমুক্তি হবে, করোনাভাইরাসের চরিত্র কেমন হবে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

গরমে করোনা বিদায় নেবে এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছিল
গ্রীষ্ম গিয়ে বর্ষা এসেছে সংক্রমণ কমেনি
বর্ষায় কী চরিত্র ধারন করবে করোনা
পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা 
 

Asianet News Bangla | Published : Jun 15, 2020 12:38 PM IST

তখনও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এইদেশে মহামারীর আকার গ্রহণ করেনি।  সেই সময়ই অনেক বিশেষজ্ঞই আশা দিয়েছিলেন গরমকাল শুরু হলেই তাপমাত্রার পারদ উর্দ্ধগামী হবে। আর তখন করোনা-সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কিন্তু আদতে তা হয়নি। গরমকালেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। লকডাউনের পথে হেঁটেও তেমভাবে জব্দ করা যায়নি করোনা-মাহামারীকে। পরিস্থিতি যখন শোচনীয় আকার নিয়েছে তখনই কালের নিয়মে এসেছে বর্ষাকাল। ইতিমধ্যেই মৌসুমী বায়ুর প্রকট হতে শুরু করেছে। দেশের বেশ কিছু এলাকায় বর্ষা এসে গেছে বলেও মৌসমভবন জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আনেকই আশা করছেন বর্ষার বৃষ্টিতেই মিলবে রোগমুক্তি? 

এই প্রশ্ন শুধু সাধারণ মানুষের নয়। বিশেষজ্ঞরাও ইতিমধ্যে বর্ষকালে করোনাভাইরাসের প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। কারণ বর্ষার বৃষ্টি ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়ার মত জল বাহিত রোগ নিয়ে আসে। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে মশার জীবনচক্র ব্যহত হয়। তাই বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটাই কম থাকে। কিন্তু করোনাভাইসারে চরিত্র অনেক আলাদা। এর তুলনা করা হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা, ফ্লু বা কোনও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের সঙ্গে। তাই ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে এই রোগের চরিত্রের কোনও পরিবর্তন হবে কিনা তা নিয়ে এখনও সংশয়ে রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ন্যাশানাল ভাইরোলজির বিশেষজ্ঞ এমএস চাদা বলেছেন, ঋতু পরিবর্তেনর সঙ্গে এই রোগের চরিত্রের কোনও পরিবর্তন হয় কিনা তা জানতে আরও বছর ২-৩ সময় লাগবে। এই সময়ে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পরই তা বলা সম্ভব। এই বিশেষজ্ঞের কথায় শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ কিছুটা হলেও ঋতু পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে তাই এটিও বর্ষায় তার চরিত্র পরিবর্তন করতে পারে। 

মুম্বইয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভজিৎ সেন জানিয়েছেন, ভাইরাল রোগের বিস্তার তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে- পরিবেশ, ঋতু পরিবর্তন আর মানুষের আচরণগত নিদর্শন। ঋতু পরিবর্তন নির্ভর করে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা  আর সূর্যালোক-এর ওপর। ভাইরাসটি কোনও পরিস্থিতিতে কতটা শক্তি সঞ্চয় বা ক্ষয় করে তাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। রাস্তায় থুতুফেলা একটি সাধারণ সমস্যা। যা থেকে ভাইরাল রোগ ছড়াতে পারে। আর বর্ষাকালে সহজেই এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। কারণ প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা বা যেকোনও এলাকা ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে যায়। অন্যদিকে বর্ষাকালে খোলা জায়গায় মানুষের সমাগম কম হয়। বেশিরভাগ সময় মানুষ গৃহবন্দি হয়েই থাকেন। তাই বর্ষাকালে সংক্রমণ কমতে পারে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। 

কিন্তু এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অতিরিক্ত বৃষ্টি বা বন্যার সময়  মানা হবে না নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব। তাই সেইসময় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে বর্ষাকালে করোনাভাইরাস কী চরিত্র নেবে তা জানার জন্য অনেক পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। 
 

Share this article
click me!