এই অস্ত্রগুলি হয় যোদ্ধাদের বড় দলের অন্তর্গত যারা যুদ্ধ করেছিল, অথবা এই অস্ত্রগুলি শিকারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। সমীক্ষার ফল জানাচ্ছে, যে তাম্র যুগে যুদ্ধ সাধারণ ছিল, তবে আরও গবেষণা করা দরকার।
চাষের কাজ চলছিল মাঠে। জেসিবি দিয়ে উঁচুনিচু ঢিপি সমতল করছিলেন কৃষক বাহাদুর সিং ফৌজি। আচমকা কোনও ধাতব জিনিসের সঙ্গে ধাক্কা খান তিনি। উদ্ধার হয় হাজার হাজার বছরের পুরোনো তামার অস্ত্র। উত্তরপ্রদেশ ময়নপুরী এলাকার একটি মাঠের নিচ থেকে পুরনো তামার অস্ত্র উদ্ধার করা হল। বলা হচ্ছে, এসব অস্ত্র প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো। ঘটনাটি জেলার তহসিল কুড়াওয়ালি এলাকার গণেশপুরের। স্থানীয় সূত্রে খবর কৃষক বাহাদুর সিং ফৌজি যখন খননকালে এই অস্ত্রগুলি খুঁজে পান, তখন তিনি সেগুলোকে সোনা ও রূপার তৈরি মূল্যবান জিনিস মনে করে বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয়।
এরপরই পুলিশ বিষয়টি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে জানায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ধার হওয়া তামার অস্ত্র ৪ হাজার বছরের পুরনো এবং সেগুলো দ্বাপর যুগের। সব অস্ত্রই জং বা সরচে ধরেছে। জানা গিয়েছে, কৃষক বাহাদুর সিং ফৌজি জেসিবি দিয়ে মাঠের ঢিবি সমতল করছিলেন। এরই মধ্যে সেনারা মাটির নিচে তামার তলোয়ারসহ অনেক অস্ত্র পায়। এই বিষয়টি প্রকাশের পরে, স্থানীয় পুলিশ এবং আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গে জায়গাটি সিল করে দেওয়া হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের সংখ্যা প্রায় ৩৯টি।
ঢিবি থেকে উদ্ধার করা তামা অস্ত্রের মধ্যে-
তলোয়ার
বর্শা
কাঁথা
ত্রিশূল
এবং অন্যান্য অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত
গণনা করতে গিয়ে ৩৯টি তামার অস্ত্র পাওয়া গেছে, যেগুলো এখন প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আগ্রা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রত্নতত্ত্ববিদ ডঃ রাজকুমার প্যাটেল মিডিয়াকে বলেছেন যে এই সমস্ত তামার অস্ত্রগুলি ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের বলে মনে হয়। তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশের ইটা, ময়নপুরী, আগ্রা এবং গঙ্গা বেল্ট এই ধরনের সংস্কৃতির এলাকা। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের টিম এখন আরও একবার জায়গাটি পরিদর্শনে যাবে।
এই অস্ত্রগুলি অবশ্যই যুদ্ধ বা শিকারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে –
আলীগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির (এএমইউ) ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যাপক মানবেন্দ্র পুন্ডীর বলেছেন যে এই অস্ত্রগুলি হয় যোদ্ধাদের বড় দলের অন্তর্গত যারা যুদ্ধ করেছিল, অথবা এই অস্ত্রগুলি শিকারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। সমীক্ষার ফল জানাচ্ছে, যে তাম্র যুগে যুদ্ধ সাধারণ ছিল, তবে আরও গবেষণা করা দরকার।