ব্রহ্মপুত্র নদীকে ঘিরে চিন যে তৎপরতা শুরু করেছে তার দিকে নজর রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রক আরও এবার নাম না করেই চিনকে হুশিয়ারি দিল। বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'সাবধানতার সঙ্গে পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।' দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান হয়েছে। পাশাপাশি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিনের উদ্যোগে আজাদ পাট্টান নামে যে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ জানান হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব।
পূর্ব লাদাখ সেক্টরে ভারতের সঙ্গে চলমান বিবাদের জেরেই চিন আরও একটি কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে বলেও দাবি করেছে একটি সূত্র। চিনের সরকারি গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর একটা বিশালাকার বাঁধ তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে চিন। সেখানে তৈরি হবে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। সূত্রের খবর চিনের দিকে তিব্বতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। আগামী ১৪ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে বেজিং।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, চিন আগেই ভারতকে জানিয়েছিল, তারা ইয়ারলু জাবো (তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদী এই নামেই পরিচিত) নদীর ওপর শুধুমাত্র একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির পরকল্পনা গ্রহণ করেছে। আর প্রকল্পের কারণে নদীর গতিপথের কোনও বিবর্তন হবে না। । কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টগুলির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কারণ বেশ কয়েক মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে চিন একটি সুপার বাঁধ তৈরি করতে চলেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে নদীর ঘিরে চিনের যাবতীয় কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর বাঁধ দিতে পারে চিন, তিব্বতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কতটা প্রভাব পড়বে ভারতে ...
ব্রহ্মপুত্রর পর এবার ঝিলাম নদী, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিনের উদ্যোগে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ...
অনুরাগ শ্রীবাস্তব আরও বলেন বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে গুরুত্বের সঙ্গে চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে আন্তঃ সীমান্ত সমস্যা গুলি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আর সেখানেই চিনের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত নদী ইস্যু নিয়েও কথা বলা হচ্ছে। আর এই বিষয় সরকার চিনের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি দেশের স্বার্থ রক্ষার কথাও বলেছে। কারণ আন্তর্জাতিক জলচুক্তি অনুযায়ী কোনও দেশই নদীর নিম্ন অববাহিকার দেশগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে না। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আর দুটি বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে তৎপর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। যদিও চিনের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেজিং-এর উন্নয়ন আর সংরক্ষণের একটি নীতি রয়েছে। আর সেক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকের ওপরেও জোর দেওয়া হবে। ব্রহ্মপুত্র নিম্ন অবহায়িকায় বাঁধ তৈরি কারও চিনের অধিকারের মধ্যে পড়ে। সেক্ষেত্রে চিনের সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশকেও এদিয়েআসার আহ্বান জানান হয়েছে। তিনি আরও বলেন বাঁধ তৈরির পরিকল্পনাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।