কাবুলে বোমা হামলার চালানো আইএসআইএস খোরাসান গোষ্ঠীর নজরে রয়েছে ভারতও। বাড়তি মাথাব্যথা ভারতীয় গোয়েন্দাদের।
বৃহস্পতিবার কাবুলে বোমা হামলার চালিয়েছে যে আইএসআইএস খোরাসান জঙ্গি গোষ্ঠী, তাদের নজরে ভারতও রয়েছে। তারা যে খিলাফতের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই দেশ। আফগানিস্তানে পায়ের তলার মাটি শক্ত করার পরই তাদের লক্ষ্য হবে প্রথমে মধ্য এশিয়া এবং পরে ভারতে জিহাদি কার্যকলাপ পরিচালনা করা। ভারতীয় গোয়েন্দাদের উধ্বৃত করে এমনটাই দাবি করা হয়েছে এনডিটিভি-র এক প্রতিবেদনে।
নাম গোপন রেখে সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেরল ও মুম্বই থেকে প্রচুর তরুণ আইএসআইএস-কে অর্থাৎ আইএস খোরাসানে যোগ দিয়েছে। চরমপন্থায় মগজ ধোলাই হওয়া ব্যক্তিবর্গের কাছে এই হিংস্র মৌলবাদী গোষ্ঠী দারুণ আকর্ষণীয়। গোয়েন্দারা ভয় পাচ্ছেন, যদি এই তরুণরা ভারতে ফিরে আসে, তবে কিন্তু ভারতে আইএস খোরাসানের অনেকগুলি দল সক্রিয় হতে পারে।
আফগানিস্তানে তালিবানি দখল কায়েম হওযার পর সেই দেশ এখন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির স্বর্গরাজ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, এমনটাই মনে করছেন আফগান গোয়েন্দারা। যেমন এদিনই জানা গিয়েছে, জইশ-ই-মহম্মদের নেতা মাসুদ আজহার কান্দাহারে গিয়েছিল তালিবানদের সঙ্গে কথা বলতে। একইভাবে, ২৬/১১ মুম্বই হামলার নেপথ্যে থাকা লস্কর-ই-তৈবার শীর্ষনেতৃত্ব এখন আশ্রয় নিয়েছে পূর্ব আফগানিস্তানের কুনারে।
কাবুল হামলার পর জেইএম, লস্করদের পাশাপাশি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির জন্য নতুন মাথাব্যথা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে আইএসআইএস-কে। গোয়েন্দাদের দাবি, তালিবানরা যে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না, তা দেখানোর জন্যই করা হয়েছিল কাবুল হামলা। গোয়েন্দারা মনে করছেন, আইএসআইএস-কে আফগানিস্তানে তালিবানদের চালিকা শক্তি হতে চাইছে।
২০১৪ সালের শেষদিকে পূর্ব আফগানিস্তানে প্রথম আইএসআইএস-কে গোষ্ঠী নিজের জানান দিয়েছিল। চরম বর্বরতার জন্য দ্রুত অবশ্য কুখ্যাত হয়ে ওঠে। ইসলামি সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মূলত পাকিস্তানি তালিবানদের কট্টরপন্থী অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে আইআইএসকে প্রতিষ্ঠা করেছিল। পাক নিরাপত্তা বাহিনী তালিবানদের ধরপাকড় শুরু করলে, তারা আফগানিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিল।
মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, আইএসআইএস-কে গোষ্ঠীতে আফগান নাগরিকরা ছাড়াও পাকিস্তানের অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা এবং উজবেকিস্তানের চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলির সদস্যরাও রয়েছেন। এক আগেও আফগানিস্তানে আইএসআইএস-কে, মার্কিন সমর্থিত সরকারি বাহিনী এবং তালিবান গোষ্ঠী - দুই পক্ষের সঙ্গেই লড়াই করেছে। তবে, ইরাক ও সিরিয়ায় যে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রধান শাখা সক্রিয় রয়েছে, তাদের সঙ্গে এই গোষ্ঠীর যোগাযোগ সত্যিই আছে কি না, সেই বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত।