বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে ভারত যদি আশেপাশের দেশগুলিতে মিলিটারি সিস্টেম রফতানিতে সফল হয়, তবে এটি কেবল প্রতিরক্ষা রফতানির ক্ষেত্রে বুস্টার হিসেবে কাজ করবে না, চিনের প্রভাব মোকাবিলায় একটি কৌশলগত পদক্ষেপও হবে।
ভারতের (India) থেকে এই প্রথম ব্রহ্মস মিসাইল (BrahMos missile system) কিনতে চলছে দক্ষিণ এশিয়ার কোনও দেশ (South Asian Country)। ভারত ও রাশিয়ার (India and Russia) যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ব্রহ্মস মিসাইল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল ভারত ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে চায়। এটি প্রতিরক্ষাখাতে ভারতের শক্তি আরও বাড়াবে। সেক্ষেত্রে মেক ইন ইন্ডিয়ার প্রকল্পের আওতায় ফিলিপাইনসের কাছে ব্রহ্মস বিক্রির জন্য চুক্তি করেছে দুই দেশ। এক ধাক্কায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়েছে ভারত। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা রফতানিকে চিনকে টেক্কা দিতে হলে শুধু ফিলিপাইনস নয়, ভারতের দরকার আরও রাষ্ট্রের সহযোগিতা, আরও রফতানি চুক্তি।
যেহেতু ফিলিপাইনের সাথে চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত হয়েছে, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো অন্যান্য দেশ, যারা জাহাজ-বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে, তারাও ভারতের থেকে ব্রহ্মস নিতে পারে। কারণ মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামও দক্ষিণ চিন সাগরের দাবিদার। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে ভারত যদি আশেপাশের দেশগুলিতে মিলিটারি সিস্টেম রফতানিতে সফল হয়, তবে এটি কেবল প্রতিরক্ষা রফতানির ক্ষেত্রে বুস্টার হিসেবে কাজ করবে না, চিনের প্রভাব মোকাবিলায় একটি কৌশলগত পদক্ষেপও হবে। কারণ প্রতিরক্ষা পণ্য সরবরাহের বাজারে বড় খেলোয়াড় চিন। চিনের কাছ থেকে অস্ত্র নেয় পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মায়ানমার সহ এশিয়া বেশ কয়েকটি দেশ।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা রফতানির হার বৃদ্ধি
ভারতের প্রতিরক্ষা রফতানিতে একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে - ২০১৪-১৫ সালে ১৯৪০.৬৪ কোটি টাকা থেকে ২০২১ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৮৪৩৪.৮৪ কোটি টাকা। যদিও রফতানির বৃদ্ধির মূল কান্ডারি ফিলিপাইনসের সঙ্গে ব্রহ্মস চুক্তি। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) সম্প্রতি অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার (ALH মার্ক III) এর উন্নত সংস্করণ রফতানির জন্য মরিশাস সরকারের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। মরিশাস ইতিমধ্যে HAL-এর তৈরি ALH এবং Do-228 বিমান পরিচালনা করছে।
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উত্পাদন বিভাগ ইতালি, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়া, ফ্রান্স, নেপাল, মরিশাস, ইজরায়েল, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, ইথিওপিয়া, সৌদি আরব, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, স্পেন এবং চিলিকে প্রতিরক্ষা সামগ্রীর জন্য ভারতের রপ্তানি গন্তব্য হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে। তালিকাভুক্ত প্রধান প্রতিরক্ষা দ্রব্যগুলি হল ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী, অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল, অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার এবং নজরদারি ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন - Republic Day Tableaux Controversy: কেন বাদ পশ্চিমবঙ্গ, কোথায় ভুল করলো মমতার সরকার
আরও পড়ুন - Netaji Hologram Statue: হলোগ্রাম কী, স্মার্টফোন দিয়ে ঘরে বসেই কীভাবে তৈরি করবেন
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছিল যে ভারত ৮৪টি দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জান রফতানি করেছে। তবে এর কোনওটিই বড় অঙ্কের রফতানি ছিল না। এগুলো ছিল টিয়ারগ্যাস লঞ্চার, নাইট ভিশন ডিভাইস, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, অস্ত্র সিমুলেটর এবং হালকা ওজনের টর্পেডোর মতো আইটেম।