মুম্বইয়ে (Mumbai) খালিস্তানি জঙ্গি (Khalistani Terrorists) হামলার ভয়। ২০২০ সালেই ৯ জন নেতাকে 'জঙ্গি' বলে ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার (Modi Govt)।
খালিস্তানি জঙ্গি (Khalistani Terrorists) হামলার ভয়ে কাঁপছে মুম্বই (Mumbai)। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর অর্থাৎ বর্ষশেষের রাতেই বাণিজ্যনগরীতে হামলা চালাতে পারে খালিস্তানি জঙ্গিরা। এই কারণে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) বিভাগের সব কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ২০২০ সালে ইউএপিএ (UAPA) বা আনলফুল অ্যাকটিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্টের অধীনে প্রথমবারের মতো, ৯ জন খালিস্তানি কর্মীকে 'জঙ্গি' বলে ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক খালিস্তানি সংগঠন, শিখস ফর জাস্টিস বা এসএফজে (SFJ) কেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
এসএফজে সংগঠনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয়। ২০২০ সালে তারা ভারত ভেঙে পৃথক খালিস্তানি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ইন্টারনেটে একটি গণভোটের আয়োজন করেছিল। 'গণভোট ২০২০' প্রচারের নেতৃত্বে ছিলেন গুরপতবন্ত সিং পান্নুন। ২০২০ সালে ইউএপিএ সংশোধনের পর তাকে সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এছাড়া খালিস্তানপন্থী নেতাদের মধ্যে জঙ্গি বলে চিহ্নিত হয়েছিল যুক্তরাজ্যের বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল সংগঠনের প্রধান পরমিজিৎ সিং, কানাডার খালিস্তান টাইগার ফোর্স সংগঠনের প্রধান হরদীপ সিং নিজ্জর, খালিস্তান জিন্দাবাদ ফোর্সের জার্মানি শাখার দুই নেতা গুরমিত সিং বাগ্গা এবং ভূপিন্দর সিং ভিন্দা। এর সঙ্গে ছিল পাকিস্তানের চার খালিস্তানি নেতা - বিকেআই এর প্রধান ওয়াধাওয়া সিং, আন্তর্জাতিক শিখ যুব ফেডারেশনের নেতা লক্ষবীর সিং, খালিস্তান জিন্দাবাদ ফোর্সের পাকিস্তান শাখার প্রধান রঞ্জিত সিং এবং খালিস্তান কমান্ডো ফোর্সের প্রধান পরমজিৎ সিং।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল, জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করতে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতি নিয়েছে মোদী সরকার। সেই নীতি মেনেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে এমএইচএ এই নয়জনকে ইউএপিএর বিধানের অধীনে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করেছে। এই ব্যক্তিরা সীমান্তের ওপার থেকে এবং বিদেশের মাটি থেকে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। ভারত বিরোধী কার্যকলাপ এবং খালিস্তানি আন্দোলনকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে এই ৯ জন পঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। এইভাবে ভারতকে অস্থিতিশীল করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে তারা, দাবি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
তবে শুধু এই ৯ ব্যক্তিকেই নয়, ২০২০-তেই মোদী সরকার শিখস ফর জাস্টিস বা এসএফজে সংগঠনটিকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। সংগঠনের নেতা তথা আইনি উপদেষ্টা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন ২০১৪ সালেই মার্কিন শহর নিউইয়র্কে 'খালিস্তানের জন্য পাঞ্জাব গণভোট ২০২০' নামে একটি প্রচার শুরু করেছিল। ২০২০ সালে ইউএপিএ-র এক শুনানীতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময়, এনআইএ-র ডিআইজি সোনিয়া নারাং জানিয়েছিলেন, বর্তমানে এসএফজে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমী দেশের শিখ অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে সভা করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং রাস্তায় খুব বড় আকারে 'গণভোট ২০২০'র প্রচার চালাচ্ছে। সেইসঙ্গে রেফারেন্ডাম ২০২০ নামে একটি ওয়েবসাইটও চালু করা হয়েছিল। যে ওয়েবসাইট থেকে খালিস্তানিপন্থী এবং ভারত-বিরোধী প্রচার চালানো হত।