প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্রের দুটি ইউনিট স্থাপনের পদক্ষেপটি দেশের রকেট বাহিনী স্থাপনের দিকে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত। এই রকেট বাহিনী তিনটি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ করবে এবং হামলা চালাবে।
সীমান্তে টেনশন বাড়ছে। চিন ও পাকিস্তান ভারতের জন্য ক্রমশ ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। উত্তর সীমান্ত থেকে চিনের ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে এবার তৈরি হতে শুরু করল ভারত। নয়াদিল্লি সূত্রে খবর ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্রের দুটি নতুন ইউনিট স্থাপনের কথা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। এই ইউনিটগুলির জন্য ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ৭৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এই দুই ইউনিটে মোট ২৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিমান বাহিনীর অধীনে প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্রের একটি ইউনিট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এবার উত্তর সীমান্তে চিনের নজরদারির বাড়বাড়ন্তে বিষয়টি জোর দেওয়া হতে চলেছে বলে খবর।
শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্রের দুটি ইউনিট স্থাপনের পদক্ষেপটি দেশের রকেট বাহিনী স্থাপনের দিকে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত। এই রকেট বাহিনী তিনটি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ করবে এবং হামলা চালাবে। সেনাবাহিনীর জন্য দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট গঠনের চিন্তা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই একটি সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এর পরে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে পারে এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলির কিনতে শুরু করার আদেশ দেওয়া হবে।
১৫০ থেকে ৫০০ কিমি সারফেস-টু-সার্ফেস স্ট্রাইক ক্ষমতা
দেশীয়ভাবে তৈরি প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্রটির ১৫০ থেকে ৫০০ কিলোমিটারের সারফেস-টু-সার্ফেস স্ট্রাইক রেঞ্জ রয়েছে এবং রাডারে এটি সনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন। এটি একবার স্ট্রাইক করার পর এটি ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব করে তোলে। এই ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে তার গতিপথ পরিবর্তন করতেও সক্ষম এবং এটি খুঁজে পাওয়ার পর তার লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে। তাই এটি একটি চলমান লক্ষ্যবস্তুকেও ধ্বংস করতে সক্ষম। অর্থাৎ টার্গেট যদি কোনও বিমান হয়, তবে দিক পরিবর্তন করে এই মিসাইল সেটিকে ধ্বংস করতে পারবে।
এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিও। তিন বাহিনীর প্রধান প্রয়াত জেনারেল বিপিন রাওয়াতের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্রের কাজ শুরু হয়েছিল। এটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে টানা দুই দিন সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং এর পরে এটিকে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২০ সাল থেকেই ভারত ও চিন সীমান্ত অস্থিরতা দেখা গেছে। চিনা সেনার লাদাখ ও অরুণাচপ্রদেশ সীমান্ত এলাকায় আগ্রাসনের কারণে গালওয়ানের সংঘর্ষও ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই দেশই একাধিক বৈঠক করেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমাধান সূত্র অধরাই রয়ে গেছে।